1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধ করতে নতুন আইন

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০

ইউরোপে ‘ড্রাঙ্ক ড্রাইভিং’ অর্থাৎ মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো একেবারেই নিষেধ৷ কোন দুর্ঘটনা ঘটলে চালক তার লাইসেন্স হারাতে পারে, হতে পারে কারাবাসও৷

https://p.dw.com/p/PAe7
Alcohol, Driving, Law, মদ্যপ, গাড়ি, চালানো, আইন
ছবি: dpa

প্রতিটি দেশেই ঠিক করে দেওয়া আছে, রক্তে সর্বোচ্চ কতটুকু অ্যালকোহলের মাত্রা থাকলে গাড়ি চালানো যাবে৷ আয়ারল্যান্ডে সম্প্রতি এ নিয়ে চালু করা হয়েছে নতুন আইন৷ প্রশ্ন উঠেছে, এর ফলে কি রাস্তায় মানুষরা আরো নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে ?

ইউরোপের রাস্তায় একটি আইন বেশ কঠোরভাবে মেনে চলা হয়৷ তা হল, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো একেবারে নিষেধ৷ তবে নির্দিষ্ট মাত্রায় মদ খেলে কোনো ক্ষতি নেই৷ সব দেশেই রক্তে অ্যালকোহলের একটা সর্বোচ্চ মাত্রা বেঁধে দেওয়া রয়েছে৷ যেমন আয়ারল্যান্ডে এতদিন এই সীমা ছিল ৮০ মিলিগ্রাম৷ সম্প্রতি এই মাত্রা ৮০ থেকে নামিয়ে ৫০-এ আনা হয়েছে৷ ফলে কোন চালকই এক গ্লাস ওয়াইন বা এক পাইন্ট বিয়ারের বেশি পান করতে পারবে না, যদি সে পানপর্ব শেষ করে গাড়ি চালাতে চায়৷ সেই আইন অনুযায়ী যারা পেশাগত চালক তাদের জন্য নির্দিষ্ট মাত্রা আরও কম – ২০ মিলিগ্রাম৷ যে সব সংস্থা রাস্তাঘাট নিরাপদ রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে, তারা সরকারের এই আইনকে স্বাগত জানিয়েছে৷ তাদের মতে, এর ফলে রাস্তাঘাটে অপমৃত্যুর সংখ্যা কমে যাবে৷ আয়ারল্যান্ডের গাড়ি চালক সমিতির কনর ফনান জানান, এই আইনের ফলে আয়ারল্যান্ড ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর সমকক্ষ হবে৷

Maut in London für Autos
দুর্ঘটনা ঘটলে চালক তার লাইসেন্স হারাতে পারে, হতে পারে কারাবাসও৷ছবি: AP

কেন এই আইন ?

ফনান জানান, ‘‘শুধু আয়ারল্যান্ড ও ব্রিটেন, সম্ভবত মাল্টার আইনেও অ্যালকোহলের মাত্রা ৮০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত মেনে নেওয়া হত৷ ইউরোপের অন্যান্য দেশে সর্বোচ্চ মাত্রা ৫০ মিলিগ্রাম বা তারও কম৷ এই আইনের মধ্যে দিয়ে ইউরোপের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে আমরা এক পর্যায়ে এসেছি৷ এর ফলে রাস্তাঘাটে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদের যে সমস্যা রয়েছে, সেবিষয়ে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে৷ রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনার ফলে মৃত্যুর হার কমাতে আমরা পদক্ষেপ নিতে পারি৷ আমি আরো মনে করি, আয়ারল্যান্ডের বেশিরভাগ মানুষও এই আইনটিকে সাদরে গ্রহণ করেছে৷''

নতুন এই আইন অমান্য করলে কী শাস্তি হবে তাও জানানো হয়েছে৷ প্রাথমিকভাবে ২০০ ইউরো জরিমানা করা হবে৷ দ্বিতীয়বার ধরা পড়লে ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে তিন পয়েন্ট কাটা যাবে৷ পরিবহন মন্ত্রী নোয়েল ডেম্পসে জানান, শাস্তি আরো কঠোর করা হবে৷ এমনকি আইনে ৬ মাস গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব ছিল৷ কিন্তু ঐক্যমতের খাতিরে তা বাতিল করতে হয়৷ ডেম্পসের মতে, ‘‘লঘু শাস্তি আমরা আইনটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছি৷ আমি জানতাম, এই আইন কার্যকরী করা এত সহজ হবে না কারণ সব মহল এই আইনকে সমর্থন করছে না৷ যেমন ৬ মাস গড়ি চালানো বন্ধ থাকার বিষয়ে আমরা সমর্থন পাই নি৷ তিন পয়েন্ট কাটা যাবে এর অর্থ হল হলুদ কার্ড পাওয়া৷ আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল রক্তে অ্যালকোহলের সর্বোচ্চ মাত্রা কমিয়ে আনা৷''

নতুন আইনে ক্ষুব্ধ অনেকেই

যারা এই আইনের পুরোপুরি বিরোধিতা করছে তারা হল বিভিন্ন পাব ও বারের মালিকরা৷ পাব সমিতির মতে, এই আইনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তাদের ব্যবসায়৷ ভিন্টন্যার্স ফেডারেশনের প্রধান প্যাডরেইগ ক্রিবেন৷ ক্ষুব্ধ ক্রিবেন বললেন, ‘‘এই আইনের কোন প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না৷ আমরা মনে করি না এই আইন প্রবর্তনের মধ্যে দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে৷ যদি মানুষের জীবন বাঁচানো এতই প্রয়োজন, তাহলে মন্ত্রীসাহেব স্পিড ক্যামেরা রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে পয়সা ঢালতেন৷ অ্যালকোহল মানুষকে মারে না – মারে দ্রুত গতিতে ছুটে আসা গাড়ি৷ আমরা বিশ্বাস করি, এই আইনের কোন প্রয়োজন নেই, এতে কোনো লাভ হয় না৷''

সড়ক নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা মনে করে না৷ তাদের মতে, যে কোন দুর্ঘটনার মূলে রয়েছে অ্যালকোহল৷ সেসব দুর্ঘটনা থেকে কোন মানুষকেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি৷ কঠোর আইন থাকলেই সবাই তা মেনে চলবে, চলতে বাধ্য হবে৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ