ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান

অতিবৃষ্টির কারণেই খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে এই বন্যা দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন৷ পানিতে তলিয়ে গেছে পাশের পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকাও৷ বন্যার পাশাপাশি পাহাড়ি ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে ভূমিধসও হয়েছে৷ উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার৷ এনিয়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে৷ বলা হচ্ছে, গত ৮০ বছরে দেশে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা৷

খাইবার পাখতুনখাওয়ার তথ্যমন্ত্রী মিয়া ইফতিখার হোসাইন বার্তামাধ্যমকে বলেন, ‘‘বন্যায় ১১শ'রও বেশি লোক মারা গেছে৷ এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি৷ ভেসে গেছে ৩০ হাজার ঘর৷ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১৫ লাখ৷'' দেশটির সবচেয়ে বড় দাতব্য সংস্থা এডি ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র আনোয়ার আজমি জানান, তাদের হিসেবে মৃতের সংখ্যা ১২৫৬ জন৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে সোয়াতে, ৪৭৫ জন৷

প্রাদেশিক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিহর আলী শাহ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘এই পর্যন্ত ১ লাখ লোক ডায়রিয়া ও কলেরায় আক্রান্ত হয়েছে৷ এর অধিকাংশই শিশু৷''

সরকার ও দাতব্য সংস্থাগুলো দুর্গত এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে৷ কাজ করছে সেনাবাহিনীও৷ তবে সোয়াতে ২৭ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দি হয়ে আছে বলে সংবাদ মাধ্যমের খবর৷ যেখানে ত্রাণকর্মীরা এখনো পৌঁছতে পারেনি৷ আনোয়ার আজমি বলেন, ‘‘দুর্গতদের আহার আর আশ্রয় এখন জরুরি দরকার৷ তবে অবস্থা খুবই খারাপ৷ বিশেষ করে নারী ও শিশুদের কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে৷''

পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস, আগামী দুই সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে৷ ফলে বন্যা পরিস্থিতি আরো মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রাণ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি এরইমধ্যে মিলতে শুরু করেছে৷ জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি মুন পাকিস্তানকে দেওয়ার জন্য ১ কোটি ডলার সহায়তা চেয়েছেন৷ যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তারা ১ কোটি ডলারের ত্রাণ সহায়তা পাঠাবে৷ সেইসঙ্গে দুর্গতদের কাছে ত্রাণ পৌঁছনোর জন্য হেলিপকটার ও নৌকাও পাঠাচ্ছে তারা৷ চীন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা ১৫ লাখ ডলারের ত্রাণ সহায়তা পাঠাবে৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক