ভেনিসের কুকুরগুলো
‘দ্য ডগস অফ ভেনিস’ বইটিতে ভেনিসকে এক নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখানো হয়েছে৷ এই ‘পানির শহরের’ কুকুররা কেমনভাবে থাকে, ধনি মালিকদের দামী কুকুর?
অন্য এক ভেনিস
কানাল গ্রান্দে, রিয়ালটো, পিয়াৎসা সান মার্কো: টুরিস্টদের ভিড় যেখানে, সেখানে নয়৷ আরেকটি ভেনিস আছে, যা হলো ভেনিসের সাধারণ বা অসাধারণ - বাসিন্দাদের ভেনিস, যেখানে খাওয়া-দাওয়া, বাজার করা, কফিহাউসে বসা ছাড়া কুকুর পোষাও আছে৷
লেখক নিজে কিন্তু কুকুরপ্রেমী নন
‘দ্য ডগস অফ ভেনিস’-এর লেখক ক্রিস্টিয়ান অর্টনার অস্ট্রিয়ার মানুষ, পেশায় সাংবাদিক৷ বিশেষ কুকুরপ্রেমী নন৷ সাধারণত অর্থনীতি নিয়ে লিখে থাকেন৷ প্রতিবছর শীতে সপ্তাহখানেক ভেনিসে কাটান অর্টনার৷ সেখানেই এই ‘ভেনেসিয়ান’ কুকুররা তাঁর নজরে পড়ে৷
আশ্চর্য ব্যাপার
‘‘হাঁটতে বেরিয়ে হঠাৎ খেয়াল করলাম যে, ভেনিসে যত কুকুর আছে, আর কোথাও তত নেই৷ অদ্ভুত সব কুকুর৷ ভেনিসের মানুষজন আবার শীত পড়লে তাদের কুকুরদের সাজুগুজু করান,’’ জানালেন অর্টনার৷ সেটা তাঁর ‘এতোই আজগুবি আর মজার’ বলে মনে হয়েছিল যে, ভেনিসের কুকুরদের নিয়ে একটা বই করার আইডিয়া তাঁর মাথায় আসে৷
শত শত ছবি
প্রকল্পটির জন্য তিনি আলোকচিত্রী লুইজা পুইয়ু-কে ভেনিসের কুকুরদের ৮০টি মজাদার ছবি তুলতে বলেন৷ লুইজা গত জানুয়ারিতে দু’ সপ্তাহের জন্য ভেনিসে গিয়ে ফেরেন প্রায় ১২০টি কুকুরের ১২,০০০ ছবি নিয়ে৷ লুইজা নিজেই সেই ছবির পাহাড় থেকে সেরা ছবিগুলো বেছে নিয়ে অর্টনারকে দেখান৷
যেন দ্বিতীয় চার্চিল
সব কুকুর ও কুকুরের ছবির মধ্যে এই অ্যালবিনো বক্সার কুকুরটি অর্টনারের ফেবারিট৷ কুকুরটির নাম ‘আকিলে’ হলেও, তাকে দেখে অর্টনারের প্রথমেই উইনস্টন চার্চিলের কথা মনে হয়েছে৷
হঠাৎ দেখা
আলোকচিত্রী লুইজা পুইয়ুর জন্ম রোমানিয়ায়, বাস অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়৷ ঝাঁকড়া লোমওয়ালা এই বিরাট কুকুরটির দেখা পান ভেনিসের একটি ‘দলচেরিয়া’, মানে প্যাস্ট্রির দোকানে - যেন বল নাচ নাচছে! এটি লুইজার খুবই প্রিয় ছবি৷
ভেনিসের স্টাইল
‘‘যারা কুকুর পোষেন, তারা আলাপী হন,’’ বলেছেন লুইজা৷ প্রভুর কাঁধে এই কুকুরটিকে বেশ কয়েকদিন ধরে দেখছিলেন লুইজা৷ শেষে খোঁজ পেলেন, এনোটেকা রিও মার্তিন নামের ওয়াইন বারটিতে গেলে তাদের দেখা পাবেন - সেখানে তারা রেগুলার কাস্টমার কিনা!
হারিয়ে যায় না
ভেনিসের খালবিল গলিঘুঁজিতে টুরিস্টরা নিয়মিত পথ হারিয়ে ফেলেন বটে, কিন্তু ভেনিসের কুকুরদের ক্ষেত্রে তা কোনোদিন ঘটবে না বলে গন্ডোলার ‘মাঝি’ নিকোলা গ্রসির বিশ্বাস৷ তাঁর ১৪ বছর বয়সি কুকুর সান্দ্রো যেমন সারাদিন গন্ডোলায় বসে থাকতে পারে, তেমনই ভেনিসের গলিঘুঁজি ধরে সোজা বাড়ি পৌঁছে যেতে পারে৷
সৌখীন কুকুর
‘‘ওরা ভেনিসের মানুষদের মতোই বিলাসী ও সৌখীন,’’ বলেন লুইজা তাঁর ‘মডেলদের’ সম্পর্কে৷ ক্রিস্টিয়ান অর্টনার ও লুইজা পুইয়ুর ‘দ্য ডগস অফ ভেনিস’ বইটিতে টুরিস্টদের স্রোতে ভেসে যাওয়া একটি শহর কিভাবে তার রোম্যান্টিক সত্তা বজায় রাখতে পারে, তারও যেন একটা আভাস পাওয়া গেছে৷