1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত শহরের সহায়তায় ফেসবুকে উদ্যোগ

৮ সেপ্টেম্বর ২০১০

ভূমিকম্প বিধ্বস্ত শহর ক্রিস্টচার্চের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে নিউজিল্যান্ডের ছাত্র-ছাত্রীরা৷ তবে পথে নয় বরং অন্তর্জালের সাহায্যে কাজ করছে তারা৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চালাচ্ছে তারা ত্রাণ সংগ্রহের কাজ৷

https://p.dw.com/p/P6Yz
ক্রিস্টচার্চের ভূমিকম্প (ফাইল ছবি)ছবি: AP

ধারণাটি প্রথম আসে ক্যান্টারবারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র স্যাম জনসনের মাথায়৷ নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটিতে ৭.০ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানলে, এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস৷ আর ঠিক তখনই এমন একটি উদ্যোগের কথা ভিড় করে জনসনের মাথায়৷ ২১ বছর বয়সি জনসন বলেন, ‘‘শনিবার রাতে আমি ফেসবুকে অনেকগুলো গ্রুপ দেখলাম৷ এগুলোর মধ্যে ছিল, ‘আমি ভূমিকম্প থেকে বেঁচে গেছি, চলো পার্টি দেই, চলো একটা টি-শার্ট কিনি, ক্রিস্টচার্চ ভূমিকম্প ২০১০' ইত্যাদি৷''

‘‘ঠিক তখনই আমি চিন্তা করলাম, বন্ধুরা মিলে আমরা নিশ্চয়ই আরো ইতিবাচক কিছু করতে পারি, সমাজের জন্য কিছু করতে পারি আমরা,'' বলেন জনসন৷ যেমন ভাবা, তেমন কাজ৷ এরপরই তিনি সৃষ্টি করেন ভূমিকম্প দুর্গতদের সহায়তায় স্বেচ্ছাসেবী ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রুপ৷ আর সকলকে আহ্বান জানান, নিউজিল্যান্ডের ৮০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ক্রিস্টচার্চ শহরের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করার কাজে এগিয়ে আসার৷ তিনি বলেন, ‘‘এই আহ্বানে সাড়া মিলেছে বেশ৷ প্রথম দিনেই এই উদ্যোগে সাড়া দেন ৩০০ জন৷ আর এপর্যন্ত এই গ্রুপে যোগ দিয়েছে প্রায় এক হাজার নয়শ' জন৷''

মজার ব্যাপার হচ্ছে, শুধু অন্তর্জালে শব্দের জাল বুনে নয়, এই গ্রুপের সদস্যরা কোদাল, বেলচা, বালতির মতো ছোট ছোট যন্ত্রপাতি নিয়ে একদম মাঠে নেমে পড়েছেন৷ ২০ জনের সদস্যের একেকটি দল কাজে লেগে গেছে শহরের বিভিন্ন এলাকায়৷ আর এই কাজে তারা সহযোগিতা নিয়েছে শহরের জরুরি সেবা দপ্তরের৷ জনসন বলেন, ‘‘আমরা যখন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করছিলাম, তখন স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখের জল দেখেছি৷ কারণ তাদের ফুল বাগান আর বাড়ির আশেপাশে জমে ছিল বেশ পুরু কাদার স্তূপ৷ তাদের নিজেদের পক্ষে এসব পরিষ্কার করাটা প্রায় অসম্ভব ছিল৷ তাই এই উপকার পেয়ে ধন্যবাদ দিয়েছে সবাই৷''

তাছাড়া এই কাদা-মাটি আর আবর্জনার স্তূপ সরানোর কাজে যে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরাই যোগ দিয়েছে - তা নয়, বরং পথে নেমে এসেছে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছোট-ছোট ছেলে-মেয়েরাও৷ আর এমন নতুন উদ্যোগের জন্য প্রশংসাও জুটেছে বেশ৷ তাদের কাজে সমর্থন জানিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান এবং স্পেন ও যুক্তরাজ্য থেকে বার্তা পাঠিয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ৷ জনসন-এর কথায়, ‘‘সামাজিক যোগাযোগের প্রযুক্তিটি ছাড়া এমন কঠিন কর্ম সাধন কোনভাবেই সম্ভব ছিল না৷''

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ