ভারতে সন্ত্রাসীদের গৈরিক মুখ
১৩ জানুয়ারি ২০১১সমঝোতা এক্সপ্রেস, হায়দ্রাবাদের মক্কা মসজিদ, আজমের দরগা ও মহারাষ্ট্রের মালেগাঁও বোমা বিস্ফোরণ কান্ডে জড়িত সন্দেহে ধৃত উগ্র হিন্দুত্ববাদি সংগঠন আরএসএস-এর শীর্ষ কর্মকর্তা স্বামী অসীমানন্দ তদন্তকারী এজেন্সিগুলির জেরার মুখে কবুল করেন, কীভাবে তিনি এবং সংগঠনের অন্যান্যরা এই সব বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র করেছিলেন৷ অন্যান্যদের নামও তিনি উল্লেখ করেন৷ যার মধ্যে ছিলেন ইন্দ্রেশ কুমার, সুনীল যোশী প্রমুখ৷ রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হলে জাতীয় তদন্তকারী এজেন্সি এনআইএ আজ তাঁকে বিশেষ আদালতে হাজির করলে বিচারক ২৭শে জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার আদেশ দেন৷ এনআইএ এবং মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড (এটিএস) অসীমানন্দকে আরো জেরা করার অনুমতি চেয়েছে৷ মহারাষ্ট্র এটিএস অসীমানন্দকে মালেগাঁও বিস্ফোরণ সম্পর্কে আরো জেরা করতে আজ আসছে হরিয়ানায়৷
২০০৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলাচলকারি সমঝোতা এক্সপ্রেস ট্রেনে বিস্ফোরণে নিহত হয় ৬৭জন৷ তার মধ্যে ৪২জন পাকিস্তানি নাগরিক৷ অসীমানন্দের স্বীকারোক্তির প্রতিক্রিয়া হয় ঘরে বাইরে৷ পাকিস্তান সরকার এই স্বীকারোক্তির পর ভারতের কাছে সমঝোতা এক্সপ্রেস বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে৷ এজন্য ইসলামাবাদে ভারতের সহকারী হাই কমিশনারকে বিদেশ দপ্তরে তলব করা হয়৷ উত্তরে ভারত বলেছে রিপোর্ট পাঠাবার সময় আসেনি৷ এটা ২৬/১১-এর মুম্বই হামলায় দোষীদের শাস্তি দেবার বিষয়ে পাকিস্তানের ওপর ভারতের চাপ সৃষ্টির পাল্টা চাল বলে মনে করা হচ্ছে৷ ২০০৬ সালে মালেগাঁও বিস্ফোরণে জড়িত সন্দেহে যে ৯জন স্থানীয় যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁদের মুক্তি দেবার দাবি উঠেছে৷ মালেগাঁও বিস্ফোরণে মারা যায় ৩৭জন আহত ১২৫-এর বেশি৷
স্বামী অসীমানন্দের আসল নাম যতীন চ্যাটার্জী৷ আদি বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায়৷ ৯০-এর দশক থেকে থাকতে শুরু করেন গুজরাটের ড্যাং জেলায়৷ সেখানে তিনি শবরিধাম আশ্রম চালান৷ মাঝেমধ্যে হরিদ্বারে থাকতেন৷ সেখানেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন