ভারতে সংসদের অচলাবস্থা কাটার আশু সম্ভাবনা নেই
২৯ নভেম্বর ২০১০আজ নিয়ে ১২দিন টু-জি স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারির তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদ৷ অধিবেশন শুরু হতেই বিরোধী দলগুলি অধ্যক্ষের মঞ্চের সামনে জড়ো হয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন৷ হৈ হট্টগোল চলতে থাকলে অধিবেশন মুলতুবি রাখতে হয়৷ সরকারের তরফে অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় বিজেপির শীর্ষ নেতা এল.কে আডবানি এবং নিম্নকক্ষ লোকসভায় বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে আপোষ প্রস্তাব নিয়ে কথা বলেন৷ কিন্তু বিজেপি তা সরাসরি তা খারিজ করে দেয়৷সরকারের প্রস্তাব ছিল, টু-জি স্পেকট্রাম বন্টন নিয়ে সংসদে ব্যাপক আলোচনার পাশাপাশি চলুক সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সংক্ষেপে সিবিআই তদন্ত৷ দেখা গেছে অতীতে বফর্স, শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জেপিসি তদন্তে কোন ফল হয়নি৷ আসলে জেপিসি বিরোধীদের হাতে একটা রাজনৈতিক হাতিয়ার মাত্র৷
বিজেপির বক্তব্য, সরকার সংবিধান অনুসারে সংসদের কাছে দায়বদ্ধ৷ তাই যৌথ সংসদীয় কমিটি দ্বারাই এর তদন্ত জরুরি, বলেন বিজেপি সংসদীয় মুখপাত্র এস.এস.আলুওয়ালিয়া৷ বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নাখভির অভিযোগ, দেশের সামনে সবথেকে বড় কেলেঙ্কারি টু-জি স্পেকট্রাম৷ সরকার ও কংগ্রেস সেটা আড়াল করতে চাইছে, যেটা দুশ্চিন্তার বিষয়৷ একমাত্র জেপিসিই পারে দোষীদের শাস্তি দিতে৷ বিজেপি মুখপাত্র বলেন, বিরোধীপক্ষ কেন জেপিসি চাইছে, তার কারণ পরিষ্কার৷ সবাই সেটা বুঝতে পারছে৷ তাই জেপিসির দাবি অপরিবর্তনীয়৷
সিপিআই-এম সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, তাঁর দল সংসদ অচল করার বিরোধী৷ সংসদ চলতে দেবার দায়িত্ব সরকারের৷ বোধগম্য হচ্ছেনা জেপিসি গঠনে সরকারের আপত্তির কারণ৷
সংসদীয় মন্ত্রী পবন বনশাল বলেন, বিরোধীরা যেটা চাইছেন সেই কাজটা পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির দ্বারাও হতে পারে৷ তদন্তের স্বার্থে বিভিন্ন তদন্তকারী এজেন্সিগুলিও সাহায্য করতে পারে৷ উপরন্তু, তদন্ত প্রক্রিয়ার দিকে নজর রাখবেন সুপ্রিম কোর্ট৷ এতেও যদি বিরোধীরা বিশ্বাস রাখতে না পারে তাহলে কী করা যায়৷
এই অবস্থায় বিরোধীপক্ষ আগামীকাল সাক্ষাৎ করবেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে৷ লোকসভার স্পিকার মীরা কুমারও সংসদের অচলাবস্থা কাটাতে আগামীকাল ডেকেছেন সর্বদলীয় বৈঠক৷ মনে হয়না তাতে বরফ গলবে৷
অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনার পর টু-জি স্পেকট্রাম বন্টন দুর্নীতি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আজ জমা দেয় সুপ্রিম কোর্টের কাছে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক