1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভাইরাসের টিকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল

মার্টিন রিবে/এসবি১৬ অক্টোবর ২০১৫

ভাইরাস মানুষকে নানাভাবে কাবু করতে পারে৷ যেমন এই মুহূর্তে মার্স ও সার্স-এর মতো ভাইরাস গোটা বিশ্বকে দুশ্চিন্তায় রেখেছে৷ জার্মান বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাসের মোকাবিলায় কিছুটা সাফল্য পেয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/1Gp0T
Symbolbild - MERS Virus
ছবি: Chung Sung-Jun/Getty Images

ভাইরাসের টিকার সম্ভাবনা উজ্জ্বল

বিপজ্জনক খুনি কি এরকম দেখতে? যাকে ধরবে, তার বাঁচার সম্ভাবনা ‘ফিফটি-ফিফটি'৷ এতকাল বিশেষজ্ঞদের এমনটাই মনে হয়েছে৷ মধ্যপ্রাচ্যের শ্বাসনালীর অসুখ ‘মার্স'-এ উৎস করোনা ভাইরাসের গোত্র থেকে৷ বিপজ্জনক ‘সার্স' এবং সাধারণ সর্দি-কাশির ভাইরাসও তার মধ্যে পড়ে৷

জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট৷ খুব খারাপ কেসে ফুসফুসে সংক্রমণ ও কিডনি ফেলও করতে পারে৷ দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘মার্স' ছড়িয়ে পড়ার সময় এই সব লক্ষণ দেখা গিয়েছিল৷ হাসপাতাল কর্মী, রোগী ও তাদের আত্মীয়স্বজনরাই মূলত সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান ড্রোস্টেন বলেন, ‘‘দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মীয়স্বজনরাও সেবা-শুশ্রূষার কাজে হাত লাগিয়েছিলেন৷ তাছাড়া হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে মানুষ ঘনঘন যাতায়াত করেন৷ অনেক রোগী আরও ভালো চিকিৎসার আশায় এক হাসপাতাল থেকে আরেকটিতে ভর্তি হন৷ এভাবে ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে৷'''

ভাইরোজিস্ট ক্রিস্টায়ান ড্রস্টেন বিশ্বের হাতে গোনা ‘মার্স' বিশেষজ্ঞদের অন্যতম৷ সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে তিনি ১০ বছর আগে ‘সার্স' ভাইরাস শনাক্ত করেছিলেন৷ এই ভাইরাসের আচরণ আজও রহস্য থেকে গেছে৷ কারণ সব ক্ষেত্রে সংক্রমণ জোরালো হয় না৷ কিছু ক্ষেত্রে তার অস্তিত্বই টের পাওয়া যায় না৷ অধ্যাপক ড্রস্টেন বলেন, ‘‘বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী এই ভাইরাসের কারণে অর্ধেক রোগীর মৃত্যু হতে পারে৷ এটা সবচেয়ে বিপজ্জনক ভাইরাসগুলির অন্যতম৷ তবে একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, যে কিছু স্টাডি অনুযায়ী কিছু ক্ষেত্রে এর প্রভাব খুবই কম৷ অর্থাৎ সেই সব রোগীর শরীরে সংক্রমণের লক্ষণ থাকলেও তারা কঠিন রোগের কথা মনে করতে পারেন না৷''

এর কারণ এখনো জানা যায়নি৷ তবে এটুকু জানা গেছে যে উট গোত্রের প্রাণী এই সংক্রমণের উৎস৷ শুধু আরব উপদ্বীপেই নয়, সুদান ও ইথিওপিয়ায়ও এমন প্রাণীদের ক্ষেত্রে – বিশেষ করে তাদের নাকের লালার মধ্যে ‘মার্স' ভাইরাস পাওয়া গেছে৷ অধ্যাপক ড্রস্টেন বলেন, ‘‘বিশেষ করে কমবয়সি প্রাণীদের ক্ষেত্রে এটা বেশি দেখা যায়৷ উটের সংস্পর্শে এলে মানুষও সংক্রমিত হতে পারে৷ তবে এমনটা খুব ঘনঘন ঘটে না৷ তারপর এক মানুষ থেকে অন্য মানুষ সংক্রমিত হতে পারে৷ কিন্তু সেই প্রক্রিয়া মোটেই সহজে ঘটে না, যেমনটা ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে দেখা যায়৷ এক্ষেত্রে সেটা অনেক বিরল৷''

দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দুঃসংবাদের পর ভাইরোলজিস্টরা ভাইরাসের বর্তমান প্রজন্ম ভালোভাবে পরীক্ষা করেছেন৷ নানা রকম মিউটেশনের মাধ্যমে এই ভাইরাস আরও সংক্রামক ও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে কিনা, সেটা তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন৷ অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান ড্রস্টেন বলেন,‘‘নতুন ভাইরাসের মিউটেশন ঘটলেই মনে হয়, আরও খারাপ কিছু সৃষ্টি হচ্ছে৷ ‘মার্স' ভাইরাসের ক্ষেত্রে কিন্তু ব্যাপারটা অন্যরকম৷ কারণ মানুষ বার বার এমন ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটে না৷ তাই ভাইরাসও নিজেকে পরিবর্তন করতে পারে না৷''

ভাইরাসের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে সারা বিশ্বে বিজ্ঞানীরা টিকা তৈরির চেষ্টা করছেন৷ বন শহরের ভাইরোলজি ইনস্টিটিউট থেকে এবার সুখবর পাওয়া যাচ্ছে৷ ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকার ক্ষেত্রে নিয়মিত রদবদলের প্রয়োজন পড়লেও পরিচিত সব ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলতে একটি টিকাই যথেষ্ট৷ অধ্যাপক ড্রস্টেন বলেন, ‘‘মার্স ভাইরাসের জন্য আমরা ল্যাবে পরীক্ষা করেছি এবং মার্স ভাইরাসের সব পরিচিত স্ট্রেন পরখ করে দেখেছি৷ দেখে মনে হয় তাদের মধ্যে যথেষ্ট মিল রয়েছে৷ তাই একটি টিকাই যথেষ্ট হবে৷''

এমন টিকার সম্ভাবনা যথেষ্ট উজ্জ্বল৷ চূড়ান্ত ওষুধ তৈরি হওয়া পর্যন্ত মার্স ভাইরাস মিউটেশনের মাধ্যমে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে না – এমনটা আশা করা যায়৷ এই মুহূর্তে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই৷ কিন্তু ভাইরাস তার জিনোম ঘনঘন বদলে ফেলে বলে পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে পারে৷ তাই সতর্কতা বজায় রাখা উচিত৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান