1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চিন্তিত বিএনপি নেতারা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪

৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর সোমবার, বিএনপি জোটের প্রথম হরতাল রীতিমতো ‘ফ্লপ'৷ বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঠে দেখা না গেলেও, জামায়াত শিবির কিছুটা সক্রিয় ছিল৷ আর মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছে হরতাল বিরোধী সরকার সমর্থকরা৷

https://p.dw.com/p/1DJ4U
Streik in Bangladesch
(ফাইল ফটো)ছবি: DW/S.K.Dey

একদিকে বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটে ভাঙনের আলামত৷ এর সঙ্গে সোমবারের ‘ফ্লপ' হরতাল বিএনপিকে ভাবিয়ে তুলেছে৷ ঢাকা মহানগর কমিটি পুনর্গঠন করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি৷ মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মীর্জা আব্বাসকে হরতালের সময় রাজপথে দেখা যায়নি৷ সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল তাঁর কর্মীদের নিয়ে মাঠে নামলেও তা মাঠ গরম করার মতো কিছু না৷ তিনি সোমবার দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোডে শ-খানেক নেতা-কর্মী নিয়ে মিছিল করেছেন মাত্র৷ সাবেক সিটি মেয়র সাদেক হোসেন খোকাকে সরিয়ে মির্জা আব্বাসকে মহানগরের দায়িত্ব দিয়ে যাঁরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন, তাঁরাও রীতিমতো স্তম্ভিত হয়েছেন মীর্জা আব্বাসের নিষ্ক্রিয়তায়৷

ঢাকার কলাবাগান এলাকার ওয়ার্ড বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন বাবলু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘হরতাল ডেকে নেতারা ঘরে থাকলে কর্মীদের কী করার আছে?'' তিনি বলেন, ‘‘দলীয় কর্মসূচিতে এখন আর তৃনমূলের নেতা-কর্মীরা উত্‍সাহ পান না৷ কারণ কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠে থাকেন না৷ এছাড়া তাঁরা কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনাও দেন না৷''

Bangladesch Landesweiter Streik BNP
‘হরতাল ডেকে নেতারা ঘরে থাকলে কর্মীদের কী করার আছে?’ছবি: picture-alliance/dpa

বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবারের ‘ফ্লপ' হরতাল নিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াও ক্ষুব্ধ৷ তিনি আশা করেছিলেন যে, এই হরতাল সফল হলে সামনে সরকার পতন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে নতুন করে কর্মসূচি নিয়ে এগোবেন৷ বলা বাহুল্য, ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটির জন্য সোমবারের হরতাল ছিল একটি পরীক্ষা৷ কিন্তু সেই পরীক্ষায় পাশ করার আগ্রহ দেখা যায়নি মহানগরের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে৷ তাই বিএনপি চেয়ারপার্সন এ নিয়ে দু-একদিনের মধ্যেই বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে৷

বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্তত আটজন সদস্য এখন নিষ্ক্রিয়৷ তার ওপর দলের ভেতেরের কোন্দল এখন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে৷ মওদুদ আহমেদকে নিয়ে বিএনপি আছে দোটানায়৷ ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আছেন বক্তৃতা আর বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ৷অন্যদিকে মহানগর কমিটি পুনর্গঠনের শুরুতেই নেতৃত্ব দ্বিধাবিভক্ত৷ আহ্বায়ক মীর্জা আব্বাস কোনোভাবেই সদস্য সচিব হাবিব উন নবী সোহেলকে মেনে নিতে পারছে না৷ তাই মহানগরের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন৷

ঢাকা মহানগরের পুরান ঢাকার ওয়ার্ড নেতা আহমেদ হোসেন জানান, ‘‘আমরা বিভ্রান্ত৷ দল আসলে কী করতে চায় আমরা তা বুঝতে পারছি না৷'' তাঁর কথায়, ‘‘সোমবারের হরতালের কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না৷ হঠাত্‍ করেই হরতাল ডাকা হয়েছিল৷''

বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা সত্য যে বিএনপির ঢাকা মহানগর এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রত্যাশিতভাবে হরতালের সময় মাঠে দেখা যায়নি৷ তাঁরা মাঠে থাকলে সাধারণ নেতা-কর্মীরা উদ্বুদ্ধ হন৷ কিন্তু যেখানে পুলিশ বাহিনী সরাসরি গুলি করে, সেখানে তাঁরা মাঠে না থাকলে দোষ দেয়া যায় না৷''

অবশ্য তাঁর দাবি, ‘‘তারপরও হরতাল সফল হয়েছে৷ দেশেন মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করেছেন৷'' তাঁর মতে, ‘‘এই হরতাল ছিল শান্তিপূর্ণ এবং রক্তপাতহীন৷ আওয়ামী লীগের হরতালের মতো নয়৷ বিএনপি কোনো সহিংসতায় বিশ্বাস করে না৷''

এ ধরণের হরতাল দিয়ে সরকারের পতন সম্ভব কিনা – জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সময় এলেই সরকার সরে গিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে৷''

ওদিকে মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২০ দলীয় জোটের সমাবেশে বক্তৃতা দেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া৷

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে এবং গুম-খুন-নির্যাতন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা ও বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে ২০ দলীয় জোট এই সমাবেশের আয়োজন করে৷ সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ঢল নেমেছিল৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য