ব্ল্যাকবেরির বিকল্পের খোঁজে
৫ অক্টোবর ২০১০ব্ল্যাকবেরি মোবাইল ফোন সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তায় ঝুঁকি বাড়াচ্ছে৷ এই অভিযোগ এনে গত আগস্ট মাসে দেশটির সরকার ব্ল্যাকবেরি মোবাইল ফোনের ম্যাসেঞ্জার, ওয়েব ব্রাউজিং এবং ই-মেল সার্ভিসের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে৷ এ মাসের ১১ তারিখ থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকরী হওয়ার কথা৷ কিন্তু তার এক সপ্তাহ আগে থেকেই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশটিতে৷
ঊনিশ বছর বয়সি মাহমুদ ইব্রাহিম৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলছেন, ‘‘ব্ল্যাকবেরির ম্যাসেঞ্জার সার্ভিসকে যদি ব্লক করে দেওয়া হয় তাহলে আমি আইফোন কিনবো৷ আমি মেসেঞ্জারের জন্যই ব্ল্যাকবেরি কিনেছিলাম৷ সেটাই যদি না থাকে আমি এই সেট দিয়ে কী করবো?''
ফিলিপিনো বিক্রেতা কিম বেৎসা বলছেন, ‘‘আমার ব্ল্যাকবেরিগুলিকে আমি আমার দেশের অন্য কারও কাছে বিক্রি করে দেবো৷ এর পরিবর্তে আইফোন কিনবো৷''
বিক্রি কমে গেছে ব্ল্যাকবেরির
নিষিদ্ধ ঘোষণার পর থেকেই খুচরা বিক্রেতারাও ব্ল্যাকবেরি সরবরাহকারীদের কাছ থেকে এটা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন৷ ইলেকট্রনিকসের একটি দোকানের তত্ত্বাবধায়ক কিশোর কুমার বলছেন, ‘‘ব্ল্যাকবেরির বিক্রি প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে৷ একমাত্র পর্যটক ছাড়া এখন আর কেউ এটা কিনছেনা৷''
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধান দু'টি টেলিকম কোম্পানি ‘এটিসালাট' এবং ‘দু' ৷ ‘দু' সংস্থার এক উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি ফরিদ ফারেদুনি এএফপি কে বলেছেন, ‘‘দেশের নিয়মনীতি মেনে চলতে আমরা বাধ্য৷ এক্ষেত্রে আমরা বিকল্প কোনো প্যাকেজ চালু করবো, যাতে এর সমমানের সুযোগ সুবিধা থাকবে৷''
সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্ল্যাকবেরি প্রথম চালু হয় ২০০৬ সালে৷ এর পরের বছরই দেশটির নতুন নিরাপত্তা আইন চালু হয়৷ দেশটিতে ব্ল্যাকবেরি ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ৷
সৌদি আরব এবং ভারতও মনে করে, সন্ত্রাসীরা এই সেট ব্যবহারে আগ্রহী হতে পারে৷ গত আগস্ট মাসে ব্ল্যাকবেরি মনিটর করার জন্য ভারত সরকার সে দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে আনুষ্ঠানিক নোটিশ দেয়৷ কেননা, ব্ল্যাকবেরি সেট থেকে পাঠানো এসএমএস সাংকেতিক আকারে প্রথমে ব্ল্যাকবেরি নির্মাতা ‘রিসার্চ ইন মোশন' বা ‘রিম'এর ক্যানাডায় অবস্থিত সার্ভারে যায়৷ তারপর সেখান থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছায়৷ এতে ব্ল্যাকবেরি থেকে পাঠানো বার্তার মনিটর করা সম্ভব হয়না৷ তাই ভারতে সেসময় বলা হয়েছিলো, ৩১ আগস্টের মধ্যেই মোবাইল অপারেটরদের ব্ল্যাকবেরি মনিটর করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসাতে হবে৷ এখন বলা হচ্ছে, এর বর্তমান অবস্থা নিয়ে অক্টোবরের মধ্যেই পুনরায় আলোচনায় বসবে ভারত৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন