ব্রিটেনে স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যা
স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যা হচ্ছে ব্রিটেনে৷ বড় বড় নদীর আশেপাশের এলাকাগুলো তো বটেই, দূরের নীচু এলাকার শহরগুলোরও রাস্তা হয়ে ঘর-বাড়িতে নোংরা পানির সঙ্গে ঢুকে পড়েছে আবর্জনা৷ জণজীবন বিপন্ন৷ ছবিঘরে দেখুন তারই কিছু নমুনা৷
আর্দ্রতম শীতে বন্যার ভয়াবহতা
লন্ডনের পশ্চিমের বের্কশায়ারের ছোট্ট এলাকা ব়্যাসবারির রাস্তায়, ঘরে, বাগানে, বলতে গেলে সব জায়গাতেই দূষিত পানি৷ এলাকাবাসী এমন বন্যা আগে কখনো দেখেনি৷ ব্রিটেনের ২৫০ বছরের ইতিহাসের আর্দ্রতম শীতে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভাবা যায়!
নৌকায় চলাচল
অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পিটার ক্যাভানাঘ জানালেন, ব়্যাসবারিতে পানি আসতে থাকে ক্রিস্টমাস বা বড়দিনের ঠিক পর থেকেই৷ সাত সপ্তাহ হয়ে গেল, পুরো এলাকা জলমগ্ন, কিন্তু অবস্থার উন্নতির লক্ষণ নেই৷ পিটার আর তাঁর স্ত্রী এরিকা ম্যাটলোকে কোনো প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে যেতে হলেই উঠতে হয় নৌকায়৷
থাকবো, নাকি যাবো?
এলাকার এক হাজার বাড়ি থেকে সবাইকে বের করে নেয়া হয়েছে৷ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে অনেকেই এলাকা ছেড়েছেন৷ কেউ কেউ এখনো যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷ পিটার আর এরিকা অবশ্য ভাবছেন, যত কষ্টই হোক বাড়ি ছেড়ে তাঁরা অন্য কোথাও যাবেন না৷
রাজনৈতিক ঝড়
খালি করা বাড়িগুলোতে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবীরা দেখছেন এখনো কেউ সেখানে আটকে পড়ে আছেন কিনা৷ এলাকা ছাড়তে ইচ্ছুকদের সহায়তায় অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন তাঁরা৷ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতি এলাকাবাসী কৃতজ্ঞ৷ তবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং পরিবেশ সংস্থার কাজে তাঁরা অসন্তুষ্ট৷
সময় যেন ফুরিয়ে আসছে
ব়্যাসবারির লোকজন এখন অসম্ভব এক লড়াইয়ে শামিল৷ গত সাত সপ্তাহে নদীর তীর উপচে পড়া পানি যে বিপদ ডেকে এনেছে তার সঙ্গে লড়তে লড়তে তাঁরা দিশেহারা৷ এদিকে মাটির নীচ থেকেও আসছে আরো বড় বিপদের ইঙ্গিত৷ ভূ-পৃষ্ঠের নীচের পানির উচ্চতাও বাড়ছে৷ বাড়ছে ভূমিধসের আশঙ্কাও৷
দৃষ্টিসীমানায় পানি আর পানি
লড়াইটা শুধু ব়্যাসবারির এলাকাবাসীর নয়৷ টেমস নদীর তীরের অসংখ্য শহর এখন বন্যাদুর্গত৷
বাইরের দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন
বন্যায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত৷ রেলপথে পানি ওঠায় অনেক এলাকার সঙ্গে এখন রেলযোগাযোগ নেই, অনেক জায়গায় সড়ক যোগাযোগও বন্ধ৷ বন্যাদুর্গত অনেক এলাকার মানুষ শত চেষ্টা করেও নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারছেন না৷
হাল ছেড়ো না...
পিটার ক্যাভানাঘ ব়্যাসবারিতে বন্যার সঙ্গে প্রাণপণ লড়ে যাচ্ছেন৷ নিজের স্থানীয় ছোট্ট বাহন নিয়েই নেমেছেন লোক পারাপারের কাজে৷
আরো দুর্দিনের আভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ সপ্তাহের শেষ দিকে আরো বৃষ্টি এবং ঝড় পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর করে তুলতে পারে৷ সেরকম হলে ব়্যাসবারি এবং আশপাশের শত শত মানুষের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কয়েক মাস অন্তত লাগবেই৷