বিহারে তৃতীয় দফার ভোট নির্বিঘ্নে
২৮ অক্টোবর ২০১০মাওবাদীরা ভোট বয়কটের ডাক দেয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোন ফাঁক রাখা হয়নি৷ তৃতীয় দফার ভোট মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের শাসনের অগ্নিপরীক্ষা বলে মনে করছে পর্যবেক্ষকরা৷
বিহার বিধানসভার ২৪৩টি আসনের জন্য ৬-দফা ভোটের মধ্যে তৃতীয় দফার এই ভোট সম্পন্ন হয়৷ মামুলি কিছু মারপিটের ঘটনা ছাড়া ভোট হয় মোটামুটি নির্বিঘ্নে৷ ৪৮টি কেন্দ্রের অনেকগুলি মাওবাদী উপদ্রুত অঞ্চলে৷ শুধু তাই নয়, এখানকার কয়েকটি জেলা খুন, ডাকাতি,অপহরণের জন্য কুখ্যাত৷ নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাই ব্যাপক৷ আধা সামরিক বাহিনী ছাড়াও আছে কমান্ডো ৷ মাওবাদী গতিবিধি রুখতে আন্ত:রাজ্য সীমা এবং নেপালের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত সীল করে দেয়া হয়৷ আকাশপথে নজর রাখতে ব্যবহার করা হয় হেলিকপ্টার৷এই এলাকায় নির্বিঘ্নে ভোট পর্বের মধ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার প্রমাণ করবেন, রাজ্যে সুশাসন আছে, আইনের শাসন আছে৷ সেটা কায়েম করতে ৫০ হাজার অপরাধিকে তিনি জেলে পুরেছেন৷ লালু-রাবড়ির জমানায় যাঁদের ছিল দোর্দন্ড প্রতাপ৷
আজকের যে ৪৮টি আসনে ভোট হয়, তারমধ্যে ৩৭টি আসন বর্তমানে ক্ষমতাসীন সংযুক্ত জনতা দল-বিজেপি জোটের দখলে৷ তাতে থাবা বসাতে মরিয়া লালু প্রসাদের আরজেডি এবং রামবিলাস পাশোয়ানেরএলজেপি জোট৷ এই জোট যাদব-দলিত-রাজপুত জাতপাতের নয়া সমীকরণ কাজে লাগাতে সচেষ্ট৷ জাতপাতের রাজনীতি সরিয়ে নীতিশ কুমার উন্নয়নকে পাল্টা হাতিয়ার করেছেন৷ বলেছেন, তাঁর সরকার অনগ্রসর রাজ্যের বদনাম ঘোচাতে শিক্ষা,স্বাস্থ্য,পানীয় জল,বিদ্যুৎ সমস্যার সুরাহা করতে বহুলাংশে সফল৷ উল্লেখ্য, সংখ্যালঘুদের ভোট টানতে মুসলিমদের জন্য স্কলারশিপ, মুসলিম মহাদলিত ও অতি অনগ্রসর দলিতদের পঞ্চায়েত এবং সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের কথা ঘোষণা করেন৷ নির্বাচনি সফরে গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে বলেন, কেন্দ্র টাকা দেয়া সত্ত্বেও রাজ্য সরকার সব ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থ৷ সরকারি উদাসীনতার অভিযোগে বেতিয়াজেলার দুটি বুথে ভোট বয়কট করেছে ভোটাররা৷
বৃহস্পতিবারের ভোট যুদ্ধে ৭৮৫জন প্রার্থী৷ ওজনদার প্রার্থীদের মধ্যে আছেন, সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বর্তমান বিরোধী নেত্রী লালু-ঘরণী রাবড়ি দেবী৷তিনি দাঁড়িয়েছেন দুটি আসনে, রাঘোপুর ও শোনপুর৷ চতুর্থ দফার ভোট ১লা নভেম্বর৷ ভোটগণনা ২৪শে নভেম্বর৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক