1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিমান দুর্ঘটনার কারণ কি পাইলটের ভুল, নাকি দমকা হাওয়া

২৩ মে ২০১০

চেনা রানওয়ে, অভিজ্ঞ পাইলট, নতুন বিমান, তারপরেও এতবড় দুর্ঘটনা কেন ঘটে গেল ম্যাঙ্গালোরে, তা নিয়ে বিস্মিত বিশেষজ্ঞরা৷ চলছে তদন্ত, পদত্যাগ করতে চেয়েছেন মন্ত্রী৷

https://p.dw.com/p/NV4M
দুর্ঘটনাস্থল এখনও প্রায় অগম্যছবি: AP

মাত্র আড়াই বছর বয়স ছিল বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারবাস বিমানটির৷ বিমানের ক্যাপ্টেন অভিজ্ঞ সার্বিয়ান ব্রিটিশ পাইলট জলাটকো গ্লুসিকা এর আগে ঊনিশবার ম্যাঙ্গালোরের বাজপে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান নিয়ে আসা যাওয়া করেছেন৷ আবহাওয়াও ছিল মোটের ওপর অনুকূল৷ তারপরেও কী করে ঘটে গেল এই দুর্ঘটনা? বিমানটির যাত্রী ১০৫ জন পুরুষ, ৩২ জন মহিলা , ১৯ জন বালক বালিকা ৪ টি শিশু আর দুই পাইলট সহ মোট ছয়জন বিমানকর্মীর মধ্যে রক্ষা পেয়েছেন মাত্র আটজন৷ ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী প্রফুল প্যাটেল এই দুর্ঘটনার দায় নিজের ওপর নিয়ে পদত্যাগ করতে চেয়েছেন৷ চলছে তদন্ত৷

তদন্তে নেমে ধন্ধ, পাইলটের ভুল ?

কিন্তু তদন্তের শুরুতেই এই খটকাগুলি দেখা দিয়েছে৷ জঙ্গুলে পাহাড়ের মাথা কেটে বানানো, ঠিক একটা টেবিলের মত আকারের ম্যাঙ্গালোরের বাজপে বিমানবন্দরে বিমান নিয়ে ওঠানামা করাটা খুব সোজা না হলেও, সাম্প্রতিক অতীতে তার রানওয়ের পরিসর বাড়িয়ে করা হয়েছে ৮৪০০ ফুট৷ চারদিকে তার ঘন জঙ্গল, উপত্যকা৷ সুতরাং দুর্ঘটনা হলে নিস্তার পাওয়া কঠিন৷ কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের এই বিমানবন্দরে নামার সময় শনিবার ভোরে অভিশপ্ত বিমানটির ক্যাপ্টেন নির্দ্ধারিত টাচ ডাউন পয়েন্টের দুই হাজার ফুট আগে বিমানের চাকা মাটিতে ছোঁয়ান প্রথমবার৷ তারপরে ফের উড়তে চেষ্টা করেন৷ সেটা সম্ভব না হওয়ায় জোরে ব্রেক চাপেন তিনি৷ কিন্তু ততক্ষণে বিমানের চাকা ফেটে যায়৷ এরপর অতিকায় বিমানটিকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় নি৷ রানওয়ের সীমানা ভেঙে সে সোজা জঙ্গলে গিয়ে পড়ে৷ ধোঁয়া আর আগুন, দুটি টুকরো হয়ে যাওয়া বিমানের যাত্রীরা জীবন্ত পুড়ে যান৷

No Flash Flugzeugabsturz in Indien
বিদ্ধংসী আগুনে ঝলসে গেছে জঙ্গলছবি: AP
দোষী কি তাহলে বাতাস

পাইলট ছিলেন অভিজ্ঞ, আবহাওয়া মোটের ওপর ঠিক ছিল, বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না, তারপরেও এই দুর্ঘটনার একটি কারণ শোনা যাচ্ছে জঙ্গল পাহাড়ে ঘেরা বাজপে বিমানবন্দরের অতিরিক্ত উল্টোপাল্টা হাওয়া৷ বলা হচ্ছে, হাওয়ার বিরুদ্ধে নামলে দ্রুত গতি কমানোর সুবিধা পেতে সবসময়েই পাইলটরা যে বিশেষ একটি কোণ বেছে নেন, এক্ষেত্রেও তেমনই হিসেব কষে নামছিলেন হয়তো ক্যাপ্টেন গ্লুসিকা৷ কিন্তু ঠিক নামার মুহূর্তে সেই দমকা হাওয়া আচমকা দিক বদলে ফেলে বিমানটিকে টাচ ডাউন পয়েন্ট ছুঁতে দেয়নি৷ যার ফলেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা৷ এমন একটা ব্যাখ্যা করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ৷

নিহতদের পরিবারপিছু ১,৬০,০০০ ডলার দেওয়া হবে আন্তর্জাতিক নিয়ম মোতাবেক৷ ভারত সরকার আরও দুই লক্ষ রুপি দেওয়ার ঘোষণা করেছে৷ আহতরা পাবেন ৫০ হাজার রুপি করে৷ শেষবার ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর ভারতের হরিয়ানার চরখি দাদরি গ্রামের আকাশে দুটি বিমানের ধাক্বা লেগেছিল৷ মারা যান দুই বিমানের ৩৪৯ জন আরোহী৷ তারপর আবার ম্যাঙ্গালোরের এই ধোঁয়াশায় মোড়া এতবড় দুর্ঘটনাটা বহুদিন আতঙ্কে রাখবে বিমানযাত্রীদের৷ পাইলটদেরকেও হয়তো বা৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই