1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিকল্প জ্বালানি

২১ জুন ২০১৩

নিজস্ব চাহিদা মেটাতে সৌরশক্তি উৎপাদন নতুন বিষয় নয়৷ কিন্তু সেই বিদ্যুৎ গ্রিডে পাঠালো আরও সুবিধা পাওয়া যেতে পারে৷ ‘নেট মনিটরিং' এরকমই এমন পদ্ধতি৷

https://p.dw.com/p/18uFD
ছবি: Franz Metelec / Fotolia

আয়াদ মনজারের কারখানায় তৈরি প্লাস্টিক ব্যাগগুলো শুধু লেবাননেই নয়, মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে সরবরাহ করা হয়৷ ৫০ জন মানুষ এখানে কাজ করেন, মেশিন চলে দিনরাত৷ কিন্তু বিদ্যুৎ থাকে দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা৷ নয়তো কারখানার নিজস্ব জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে হয়৷ বেকা উপত্যকার কারখানা মালিক আয়াদ বললেন, ‘‘আমাদের প্রচুর ডিজেল দরকার৷ বড় জেনারেটরটা দেয় ৬৪০ কিলোওয়াট, কিন্তু তেল খায় ঘণ্টায় ৮০ লিটার, অর্থাৎ দিনে প্রায় পনেরো'শ লিটার ডিজেল, যার দাম বারো'শ-তেরো'শ ডলার৷''

দিনে পনেরো'শ লিটার ডিজেল ব্যবহারের অর্থ প্রতি লিটারে পরিবেশ দূষণের পরিমাণ প্রায় তিন কিলোগ্রাম কার্বন ডাইঅক্সাইড৷ সেই সঙ্গে কার্বন কণিকা আর বিকট শব্দ৷ যে কারণে কারখানার মালিক জেনারেটরটিকে আর দিনে ২৪ ঘণ্টা চালিয়ে রাখতে রাজি নন৷ তিনি চান ‘‘পরিচ্ছন্ন'' বিদ্যুৎ৷ আয়াদ বললেন, ‘‘আমরা বিকল্প জ্বালানির খোঁজ করছি৷ একটা বায়ুশক্তি প্রণালী পেলে দারুণ হতো, কেননা এখন জেনারেটরের খরচ বড় বেশি৷''

সমস্যার সমাধান করতে আয়াদ বৈরুত থেকে এক বিশেষজ্ঞকে আনিয়েছিলেন, যিনি বায়ু ও সৌরশক্তি ইউনিটগুলির জন্য ব্যাংক গ্যারান্টির ব্যবস্থা করেন৷ কেননা সে বিনিয়োগের খরচ উঠতে বহু বছর সময় লেগে যাবে৷ নতুন একটি প্রকল্পের নাম হল ‘‘নেট মিটারিং,'' যা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ লাভজনক করে তোলে৷ পরিকল্পনাটি হল, সৌর বা বায়ুশক্তিকে সাপ্লাই গ্রিডে শামিল করা৷ পরে ঠিক সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ গ্রিড থেকে নেওয়া যাবে, নিখর্চায়৷ শিল্পসংস্থাগুলির পক্ষে যা বিশেষ করে সুবিধাজনক৷

ক্রমেই আরো বেশি শিল্পসংস্থা ও সাধারণ মানুষ ‘‘পরিচ্ছন্ন'' বিদ্যুৎ উৎপাদনে আগ্রহী৷ বৈরুতের জ্বালানি প্রযুক্তিবিদ জেসিকা ওবাইদ বললেন, ‘‘এটা একটা ভালো সমাধান৷ একদিকে বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে৷ অন্যদিকে কার্বন নির্গমন কমছে, জলবায়ুর সুরক্ষা হচ্ছে৷ কয়েক বছরের মধ্যে উৎপাদনের খরচ বা দামের দিক থেকেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রচলিত বিদ্যুতের মতোই সস্তা হয়ে পড়বে৷''

এরকম আরেকটি প্রকল্প রয়েছে বৈরুত থেকে গাড়িতে কয়েক ঘণ্টা দূরে একটি স্কুলে৷ কারেন্ট চলে গেলেও সেখানে ঠিকই আলো জ্বলে৷ সেড্রো'র ইঞ্জিনিয়াররা স্কুলের ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়েছেন৷ ফলে বিদ্যুতের খরচ কমছে৷ এমন বৃষ্টিবাদলার দিনেও এই সোলার প্যানেল কাজ করে৷ অবশ্য এই মেঘলায় খুব কম বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে৷ তবুও স্কুলে আলো জ্বলছে বিনা খরচায়৷

লেবাননের কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার বার্লিনে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন৷ বায়ুশক্তি-সৌরশক্তিকে কীভাবে সরকারি গ্রিডে দিতে হয়, সে বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেছেন৷ নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিদ্যুৎ সরবরাহকে কীভাবে স্থিতিশীল করে; সর্বাধুনিক প্রযুক্তি কী বলে; সমস্যাগুলো কোথায় – এ সব নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেখানে৷ লেবাননের জ্বালানি উপদেষ্টা রাল্ফ স্টেফান বলেন, ‘‘আমরা দেখছি কী কী জিনিস করা সম্ভব৷ আমরা শিখছি, বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য অর্জনের পথটা কী হতে পারে৷ জার্মানরাই বা ব্যাপারটা কীভাবে করেছে৷''

‘‘নেট মিটারিং''-এর মিটারে দেখা যায়, ছাদের ওপর কী পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে, অন্যদিকে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে৷ সারাদিন সূর্য থাকলে বিদ্যুতের বিল কমে৷ এখানে আর ডিজেল জেনারেটরের প্রয়োজন নেই বললেই চলে৷

এসি / এসবি