1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৭ জানুয়ারি ২০১৪

বাংলাদেশে সদ্য অবসরে যাওয়া এক বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন৷ এই বিচারক বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে এবং দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অর্থ পাচার মামলায় খালাস দেন৷

https://p.dw.com/p/1Axpf
Tarique Rahman BNP Bangladesh
ছবি: cc-by-Shamsul alam66

গত ১৭ই নভেম্বর বিশেষ জজ আদালত ৩-এর বিচারক মোতাহার হোসেন অর্থ পাচার মামলায় তারেক রহমানকে খালাস দেন৷ তবে তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার গিয়াসউদ্দিন আল-মামুনকে একই মামলায় সাত বছরেরর সশ্রম কারাদণ্ড দেন৷ এই রায় দেয়ার পর গত ডিসেম্বরে অবসরে যান বিচারক মোতাহার হোসেন৷

সদ্য অবসরে যাওয়া এই বিচারকের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত শুরু করে দু'সপ্তাহ আগে৷ এ মুহূর্তে তাঁর অবৈধ সম্পদের ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুদক কমিশনার মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন৷ তদন্তের দায়িত্ব পালন করছেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশীদ৷

তদন্তের প্রথম পর্যায়ে দু'দফায় মোট চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক৷ গত বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল ৪-এর স্টেনোগ্রাফার আবুল হাসান এবং বিশেষ জজ আদালত ৩-এর স্টেনোগ্রাফার মো. নুরুল ইসলামকে৷ এরপর সোমবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বিচারকের গাড়ি চালক সোহরাব হোসেন এবং দেহরক্ষী বাদল দেওয়ানকে৷

তদন্ত শুরুর পর ২২শে জানুয়ারি বিচারক মোতাহার হোসেনের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দুদক৷ তবে তারা পরে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে যে, বিচারক তার আগেই মালয়েশিয়া চলে গেছেন৷

দুদক এখন পর্যন্ত অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে মোতাহার হোসেন লন্ডনে বাড়ি কিনেছেন এবং ঢাকার ধানমন্ডিতেও তাঁর দু'টি ফ্ল্যাট আছে৷ এছাড়া গ্রামের বাড়ি নাটোরে তিনি নামে-বেনামে ৫০ বিঘা কৃষি ও অকৃষি জমি কিনেছেন৷ দুদক জানায়, তাঁর আয়ের সঙ্গে এসব সম্পদ ও সম্পত্তি সঙ্গতিপূর্ণ নয়৷

দুদক আরো জানায়, সদ্য অবসরে যাওয়া এই বিচারকের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ আছে৷ তাঁর ছেলে লন্ডনে থেকে পড়াশুনা করছেন৷ জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর কর্মচারীরা বিচারকের মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার কথা জানালেও, মালয়েশিয়ায় যোগাযোগের ঠিকানা বা ফোন নাম্বার জানাতে পারেননি৷ মোতাহার হোসেনকে কি প্রক্রিয়ায় দেশে ফেরত আনা যায়, তা নিয়ে ভাবছে দুদক৷

এ বিষয়ে টিআবি-র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, যে কোনো পদ বা মর্যাদার ব্যক্তিই হন না কেন তার যদি আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ থাকে, তবে সে ব্যাপারে তদন্ত করা দুদকের দায়িত্ব৷ এছাড়া, বিচারক মোতাহার হোসেনের ব্যাপারে অন্য কোনো উদ্দেশ্য না থাকলে তদন্ত শুরু করে দুদক ঠিক কাজই করেছে৷ তবে তিনি বলেন, এটা যেন কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না হয়৷ যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে তাঁরাই যেন তদন্তের আওতায় আসেন৷

ড. ইফতেখার বলেন, ২০১১ সালে প্রধান বিচারপতি অন্যান্য বিচারপতিদের সম্পদের হিসাব জমা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷ বিচারপতিরা প্রধান বিচারপতির কাছে হিসাব জমাও দিয়েছিলেন, যদিও তা প্রকাশ করা হয়নি৷ তাঁর কথায়, সব পর্যায়ের বিচারকদেরই সম্পদের হিসাব দেয়ার একটি ব্যবস্থা থাকা উচিত৷ এতে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে বলে মনে করেন তিনি৷ তাই বিচারক মোতাহার হোসেনের সম্পদের তদন্তের মধ্য দিয়ে যে একটি সুযোগ সৃষ্টি হলো, তা বলাই বাহুল্য৷

এদিকে অবৈধ অর্থপাচার মামলায় তারেক রহমানের খালাসের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছে দুদক৷ আদালত আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তারেক রহমানকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন৷ তারেক রহমান দেশের বাইরে আছেন৷ বিচারক মোতাহার হোসেন তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতেই গত নভেম্বরে তাঁকে খালাস দেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য