বালোতেল্লি
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ইটালির জাতীয় দলের যে খেলোয়াড়টির নাম – এবং বিভিন্ন সাজ ও ভঙ্গিমা – বিশ্বের সব ফুটবলমোদী জানেন ও চেনেন, তিনি হলেন কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড় মারিও বালোতেল্লি৷ বাবা-মা এসেছিলেন ঘানা থেকে৷ পরে বালোতেল্লি পরিবার তাঁকে দত্তক নেন, এই সব কাহিনি প্রচলিত আছে৷
আসল কাহিনি হল: বালোতেল্লির জন্ম ১৯৯০ সালে, ইটালিতেই৷ তিন বছর বয়সে তাঁকে বালোতেল্লি পরিবারের হাতে দেওয়া হয়, মানুষ করার জন্য৷ বালোতেল্লি পরিবার কিন্তু কখনোই মারিও-কে দত্তক নেননি, কাজেই মারিও তাঁর ১৮ বছর বয়স অবধি ইটালীয় নাগরিকত্ব পাননি৷
খ্যাতির কারণ
যাই হোক, বালোতেল্লি আজ ইটালি তথা বিশ্বের সর্বত্র পরিচিত তিনটি কারণে: প্রথমত, ফরোয়ার্ড হিসেবে তাঁর আক্রমণাত্মক খেলা; দ্বিতীয়ত, গোল করার পর জার্সি খুলে ফেলে বীর মল্ল সুলভ কষ্টিপাথরে কাটা শরীরটি প্রদর্শন করার স্বভাব (যে জন্য রেফারি হলুদ কার্ড দেখাতে পারেন!); তৃতীয়ত, স্টেডিয়ামে জাতিবাদী মন্তব্যের লক্ষ্য হওয়া এবং সেই অনুপাতে বালোতেল্লি-সুলভ প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করা৷
ধীরে ধীরে আরো একটি বৈশিষ্ট্য তার সঙ্গে জুটছে: সেটি হল, রেফারিদের সঙ্গে বিরোধ৷ বিপক্ষ দলের প্লেয়াররা নাকি কারণে-অকারণে বালোতেল্লিকে ফাউল করে থাকে এবং রেফারিরা তা দেখেও দেখেন না – এই হল বালোতেল্লি-র উষ্মার কাল্পনিক কিংবা বাস্তব কারণ৷ রেফারিরা দেখেন না মানে বালোতেল্লি ফ্রি-কিকটা পান না৷
মাথা গরম
গত রবিবার নাপোলির বিরুদ্ধে খেলায় ঠিক সেই ধরনেরই একটা ঘটনা ঘটেছিল, তবে একটু অন্যভাবে৷ খেলায় মিলান হারে ২-১ গোলে; সেই সঙ্গে বালোতেল্লি একটি পেনাল্টি মিস করেন৷ চূড়ান্ত হুইসেলের পর রেফারির উপর হম্বিতম্বি করার জন্য বালোতেল্লিকে দ্বিতীয়বার হলুদ কার্ড দেখতে হয়৷
দু'বার হলুদ মানে একবার লাল৷ তাই বালোতেল্লি এমনিতেই পরের ম্যাচটার জন্য সাসপেন্ড হতেন৷ সোমবার আবার তাঁকে আরো দু'টি ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করা হয়৷ অর্থাৎ বালোতেল্লি বোলোনিয়া, সাম্পদোরিয়া এবং ইউভেন্তুসের বিরুদ্ধে খেলাগুলোতে মাঠে নামতে পারবেন না৷ এমনকি অক্টোবরে ইটালির পরের দু'টো বিশ্বকাপ থেকেও তাঁর বাদ পড়ার সম্ভাবনা আছে, কেননা ইটালির কোচ সোজারে প্রান্দেল্লি শৃঙ্খলা পছন্দ করেন৷
আদর্শ মারিও
ওদিকে মিলানের কোচ মাসমিলিয়ানো আলেগ্রি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘মারিও তো আর খোকা নয়, ওর ২৩ বছর বয়স এবং ওর নিজেকে বদলানো দরকার৷ ও একজন সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন কিন্তু ওর রেফারিদের প্রতি মনোভাব বদলানো প্রয়োজন৷ একজন চ্যাম্পিয়ন হবার জন্য সঠিক আচরণ করা দরকার কেননা তোমাকে যারা দেখছে, তাদের কাছে তুমি আদর্শ৷''
আলেগ্রি যোগ করেন যে, বালোতেল্লির ঐ মনোভাবের কারণেই রেফারিদের তাঁকে ফ্রি-কিক দিতে আপত্তি৷ ‘‘মারিও-র উচিত মারিও-কে বাঁচাতে রেফারিদের সাহায্য করা৷ রেফারিরা ওকে অরক্ষিত অবস্থায় রেখেছেন কেননা তারা ওর নেতিবাচক মনোভাবের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন৷''
এ সবই মিষ্টি করে বলা: রেফারিদের চটিও না, নয়তো ফাউল পাবে না৷ যে কথাটা মারিও বালোতেল্লির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য৷
এসি/এসবি (রয়টার্স, এপি)