বাণিজ্য বাড়াতে ভারতের প্রতি আহ্বান ক্যামেরনের
২৯ জুলাই ২০১০পাকিস্তান নিয়ে গতকাল যে মন্তব্য তিনি করেছিলেন, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ক্যামেরন৷
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এশিয়ার কোনো দেশে ডেভিড ক্যামেরনের এটাই প্রথম সফর৷ তাঁর সফরসঙ্গী ৯০ জনের একটি বিশাল দল৷ এত বড় প্রতিনিধি দল নিয়ে এর আগে কোনো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়েছিলেন কি না, তা মনে করতে পারছেন না কেউ৷ মন্দা কাটিয়ে অর্থনীতি গতিশীল করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন ক্যামেরন৷ তাই তাঁর ভারত সফরে মূল আলোচনা হচ্ছে বাণিজ্য নিয়েই৷
সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবারই ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল ও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন ক্যামেরন৷ এতে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়৷ এরপর ব্যবসায়ীদের দেওয়া একটি সংবর্ধনা সভায় অংশ নেন তিনি৷
মনমোহনের সঙ্গে বৈঠকে ক্যামেরন বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্প্রীতির বন্ধন বহুকালের৷ তবে আমার মনে হয়, তা আরো দৃঢ় ও গভীর করতে হবে৷'' এরপরই তিনি চলে যান বাণিজ্যের প্রসঙ্গে৷ বলেন, ‘‘বাণিজ্য ক্ষেত্রে দুদেশের সম্পর্ক আরো গাঢ় করার দিকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে৷ আর তা আমাদের সম্পর্কের ভিতকে আরো মজবুত করবে৷ উপকৃত হবে উভয় দেশের জনগণ৷'' এছাড়া নিরাপত্তা এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিনিময়ও স্থান পায় দুই নেতার আলোচনায়৷ দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের বিষয়ে দুই দেশের একটি চুক্তিও সই হয়৷ এর একদিন আগেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে একটি চুক্তির ঘোষণা আসে৷ তার আওতায় যুক্তরাজ্য প্রায় ৮০ কোটি ডলার দেবে ভারতকে৷ যে অর্থ ব্যয় হবে ৫৭টি প্রশিক্ষণ বিমান কেনায়৷ ক্যামেরন বলেন, তিনি এমন একটি যুক্তরাজ্য গড়তে চান, যাকে অংশীদার হিসেবে নিতে আগ্রহী হবে ভারত৷
বুধবার ভারতে পা রেখেই অবশ্য এমন একটি মন্তব্য ক্যামেরন করেছিলেন, যা ক্ষুব্ধ করে পাকিস্তানকে৷ তিনি বলেছিলেন, অন্য দেশে সন্ত্রাস পাচার পাকিস্তানকে বন্ধ করতে হবে৷ এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যে পাকিস্তানের হাইকমিশনার ওয়াজিদ শামসুল আলম বলেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘আঞ্চলিক শান্তির সম্ভাবনা'কে ক্ষতিগ্রস্ত করছে৷' প্রতিক্রিয়া আসার পর অবশ্য সুর কিছুটা নরম করেছেন ক্যামেরন৷ তিনি বৃহস্পতিবার বলেছেন, তাঁর ওই বক্তব্যের অর্থ হলো, সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের পদক্ষেপ আরো জোরদার করতে হবে৷ ক্যামেরন বলেন, ‘‘পাকিস্তান সরকার সন্ত্রাস দমনে আন্তরিকভাবেই কাজ করে যাচ্ছে বলে আমি বিশ্বাস করি৷ পাকিস্তানে সন্ত্রাসের বিস্তার যেমন তাদের দেশের জন্য হুমকি, তেমনি অন্য দেশের জন্যও৷ তাই আমি বলতে চেয়েছি, সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তান সরকারের তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে৷ আর এটা পাকিস্তানের জনগণেরও প্রত্যাশা৷''
প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন