বাংলাদেশে পাম চাষ
১৬ আগস্ট ২০১৪জাতীয় ই-তথ্যকোষে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে প্রথম মালয়েশিয়া থেকে পাম বীজ আনা হয়েছিল৷ তবে জোরেশোরে পাম চাষ শুরু হয় গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকে৷ সেসময় সরকারি পর্যায় থেকে পাম চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়৷ কয়েকটি সংস্থাও এক্ষেত্রে প্রচারণা শুরু করেছিল৷
প্রচারণায় উৎসাহী হয়ে অনেকে ঋণ নিয়ে পাম চাষ শুরু করেন৷ তবে তিন-চার বছর পর গাছে ফল আসলে, তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তাঁরা৷ কেননা এই ফল থেকে কীভাবে তেল উৎপাদন করতে হবে সে বিষয়ে ততটা জানা ছিল না কৃষকদের৷
গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যেসব সংস্থার কথা শুনে কৃষকরা পাম চাষ করেছিলেন পরবর্তীতে সেসব সংস্থাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ অথচ ফল উৎপাদন থেকে শুরু করে তা থেকে তেল প্রস্তুত ও বাজারজাতকরণ – এই প্রতিটি পর্যায়ে কৃষকদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল সেই সংস্থাগুলো৷
আশার কথাও আছে৷ যেমন মেহেরপুরের কয়েকজন যুবক নিজেদের উদ্যোগে পাম ফল থেকে তেল উৎপাদনের জন্য একটি মেশিন তৈরি করেছেন বলে গত বছর একটি খবর প্রকাশিত হয়৷
তবে মেশিন না থাকলে পাম ফল থেকে কীভাবে তেল বের করা যায় তার একটা উপায় বলা আছে জাতীয় ই-তথ্যকোষে৷ সেটা এরকম: প্রথমে পরিপক্ক ফল গাছ থেকে কাঁদিসহ কেটে নামিয়ে পরিষ্কার করতে হবে৷ তারপর ফলগুলোকে পাত্রের মধ্যে পানিসহ ফুটাতে হবে, যেন ফলগুলো নরম হয়৷ তারপর নরম ফলগুলোকে হাতে চেপে রস বের করতে হবে৷ এরপর পানি মিশ্রিত এ রসকে একটি পাত্রে রেখে চুলায় কিছুক্ষণ তাপ দিলে রসে বিদ্যমান পানি বাষ্পাকারে বের হয়ে যাবে এবং পাত্রের মধ্যে পাম তেল জমা থাকবে৷ এভাবে প্রাপ্ত তেল ছেঁকে বোতলে সংগ্রহ করে রাখলে ছয় মাস পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে৷
জানা গেছে, বাংলাদেশে ভোজ্যতেল আমদানি খাতে প্রতি বছর ১২ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়৷ যে তেল আমদানি করা হয় তার মধ্যে ৬০ শতাংশই পাম তেল৷ তাই পাম চাষ বাড়ানো গেলে এই অর্থের একটা বড় অংশ সাশ্রয় করা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷ কারণ বাংলাদেশের জমি পাম চাষের জন্য বেশ উপযোগী৷