বাংলাদেশের জ্বালানি সংকট লাঘবে সহায়তা দিচ্ছে জার্মানি
৫ নভেম্বর ২০১০মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলা৷ এই উপজেলা সদরের একটি বাজারের দোকানে চা বানাচ্ছিলেন রছুল মিয়া৷ কথা বলছিলাম তাঁর সঙ্গে৷ জানালেন, এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা জ্বালানি৷ মূলত গাছের লাকড়ি কিংবা পাটখড়িই হচ্ছে জ্বালানির প্রধান উৎস৷ কিন্তু এগুলোরও অনেক দাম৷ তাছাড়া বাড়িতে রান্নার কাজেও তো কম খরচ নয়? মাঝে মাঝে রসুল মিয়ার চিন্তা হয়, কী করে চলবে এই জীবন?
আর সমস্যা থেকে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের প্রত্যেক ঘরে জ্বালানি সাশ্রয়ী চুলা পৌঁছে দেবার উদ্যোগ৷ জার্মান কারিগরি সহায়তা সংস্থা জিটিজেড'এর এই উদ্যোগ সফল করতে চলেছে সর্বাত্মক চেষ্টা৷
প্রশ্ন উঠতে পারে কেন এই চুলা? উত্তর হচ্ছে, সনাতনি চুলা ব্যবহারে কেবল ধোঁয়াজনিত রোগ থেকে ফি বছর ৪৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়৷ এই প্রাণহানি রোধ করা যাবে৷ পাশাপাশি বছরে সাড়ে তিন কোটি টন জ্বালানি কাঠ সাশ্রয় করাও সম্ভব হবে৷
জিটিজেড'এর সাসটেইনেবল এনার্জি ফর ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পটি মূলত এই কাজ করছে৷ টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং জ্বালানি সাশ্রয়ের কাজে বেশ কয়েক বছর যাবত এই প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা মাঠে কাজ করছেন৷ সরকার ও সাধারণ মানুষকে দিচ্ছে সহায়তা৷
বাংলাদেশের জ্বালানি বিষয়ক সংবাদ ম্যাগাজিন এনার্জি এন্ড পাওয়ার'এর সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা প্রসঙ্গে জানা গেলো, ১৫০টি অংশীদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সায়েন্স ল্যাবরেটরির উদ্ভাবিত করা এই জ্বালানি সাশ্রয়ী চুলার ব্যবহার বাড়াতে কাজ করছে জিটিজেড৷ আগামী ১০ বছরের মধ্যে সব পরিবারের কাছে এই চুলা পৌঁছে দিতে চান তারা৷
মোল্লাহ আমজাদ হোসেন জানালেন, সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্পে জার্মানির সহায়তা উল্লেখ করবার মতো৷ এখন পর্যন্ত দেশে যে কয়েক লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে তার অধিকাংশই হয়েছে জিটিজেড ও কেএফডব্লিউ-এর সহায়তায়৷ জার্মান সরকারের এ দুটি সংস্থা রাইস মিলে ধান সিদ্ধ করার জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়েও কাজ করছে৷
এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ব্যাপকভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে৷ ২০২০ সালের মধ্যে বিদ্যুতের অন্তত ১০ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক