বসনিয়ার যুদ্ধকালীন সার্ব সেনাপ্রধান ম্লাদিচ গ্রেফতার
২৬ মে ২০১১সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বরিস টাদিচ বেলগ্রেডে তড়িঘড়ি এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে ম্লাদিচকে আজ ভোরের দিকে গ্রেফতার করার কথা ঘোষণা করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আজ আমরা আমাদের ইতিহাসের একটি অধ্যায় বন্ধ করে দিলাম৷ এর মধ্য দিয়ে আমরা এই অঞ্চলে পুনরায় পূর্ণ সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার এক ধাপ কাছে চলে এলাম৷''
সার্বিয়ার সবচেয়ে বড় দৈনিক পত্রিকা ‘ব্লিচ' খবর দিয়েছে, দেশের উত্তরাঞ্চলের এক গ্রামে জনৈক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ম্লাদিচকে গ্রেফতার করা হয় স্থানীয় সময় সকাল ন'টায়৷ পুলিশ আর গোয়েন্দা দল অবশ্য ভোর ছ'টার দিকেই অপারেশন শুরু করে দিয়েছিল৷ নাম ভাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি৷
১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বসনিয়ার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সময় স্রেবরেনিৎসা হত্যাকাণ্ড এবং ৪৪ মাস ধরে সারায়েভো অবরোধের ঘটনায় তার ভূমিকার জন্য গণহত্যা চালানো, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আছে ম্লাদিচের বিরুদ্ধে৷ স্রেবরেনিৎসায় ছেলে বয়স্ক পুরুষ মিলিয়ে ৮০০০ মুসলমানকে হত্যা করা হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাকেই ইউরোপের ভয়াবহতম হত্যাকাণ্ড বলে দেখা হয়ে থাকে৷ সাবেক ইউগোস্লাভিয়ার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত দ্য হেগ'এর আন্তর্জাতিক ফৌজদারি ট্রাইবুনাল বহুদিন ধরেই তার খোঁজ করছিল বিচারের জন্য৷
ইউরোপের নানা দেশ এই খবরে সন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ সত্যি বলতে ম্লাদিচকে ধরার জন্য সার্বিয়ার উপর বড় রকমের চাপ ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের দিক থেকে৷ ইউনিয়ন সাফসাফ জানিয়ে দিয়েছিল যে, সার্বিয়া তাকে ধরতে ব্যর্থ হলে ইইউ'তে বেলগ্রেডের ঢোকার পথে তা বড় বাধা হয়ে থাকবে৷ ইইউ'র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশটন, ইইউ কমিশনের সভাপতি জোসে মানুয়েল বারোসো, সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল বিল্ড এরা সকলেই গ্রেফতারের এই ঘটনাকে অকুন্ঠ সাধুবাদ জানিয়েছেন৷ ফ্রান্সের দোভিল'এ জি-এইট নেতাদের শীর্ষবৈঠকে ম্লাদিচ গ্রেফতার হবার খবর অভিনন্দিত হয়েছে৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন সার্বিয়া সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ার জন্য এটা এক ঐতিহাসিক দিন৷ আর স্রেবরেনিৎসার সেই ১৯৯৫ সালের গণহত্যার হাত থেকে বেঁচে যান যাঁরা, তাঁরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ