বন্যা পরিস্থিতি সঙ্গীন হয়ে উঠছে অস্ট্রেলিয়ায়
১২ জানুয়ারি ২০১১গত ১২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা আঘাত হেনেছে অস্ট্রেলিয়ায়৷ সোমবার রাতের ভারি বর্ষণ দক্ষিণ-পূর্ব কুইন্সল্যান্ডের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটিয়েছে৷ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে পশ্চিম ব্রিসবনের টোওম্বা শহরের রাস্তা-ঘাট ও যানবাহন৷ পুলিশ জানিয়েছে, ৪০ জনেরও বেশি মানুষকে বাড়ির ছাদ থেকে হেলিকপ্টারে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু ৭৮ জন মানুষ মঙ্গলবার পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন৷ গত দু'সপ্তাহে এহেন বন্যার কারণে কুইন্সল্যান্ডে মারা গেছেন ১৩ জন৷ কিন্তু পুলিশ বলছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে৷ সেন্ট্রাল ব্রিসবনের কিছু লোকজন খাদ্যদ্রব্য মজুদ করে রাখছে৷ এই শহর এবং আশপাশের শহরের বেশিরভাগ লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে৷ ভিড় বাড়ছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে৷
ব্রিসবনের মেয়র ক্যাম্বেল নিউম্যান বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সাড়ে ছয় হাজার বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং জমি পানিতে তলিয়ে যেতে পারে৷ বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামীকাল পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে৷ এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হয়ে উঠতে যাচ্ছে৷ এর প্রভাব পড়তে যাচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যেও৷''
এরইমধ্যে বিশাল এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে৷ ফ্রান্স ও জার্মানি মিলে যতো আয়তন, অস্ট্রেলিয়ায় তার চেয়েও বেশি জায়গা এখন পানির নীচে৷ বন্যার কারণে ইতোমধ্যে ক্ষতি হয়েছে ছয় বিলিয়ন ডলার৷ ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পর্যটন শিল্প এবং কৃষি৷ কুইন্সল্যান্ডের কয়লা খনিগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে৷ স্বাভাবিকভাবেই, এ বছর অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এই বন্যা৷ এছাড়া, খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির ফলে মুদ্রাস্ফীতিরও আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসে সুদের হার বাড়ানোর যে পরিকল্পনা করছিল, সেটা সম্ভবত আরো বিলম্বিত হবে এই বন্যার কারণে৷ প্রসঙ্গত, গত তিন সপ্তাহের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ডলারের মান মঙ্গলবার সবচেয়ে নীচে নেমে গেছে৷
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ