1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা দেখে যেতে চাই’

১১ মে ২০১১

মুক্তিযুদ্ধ যখন শুরু হয়, তখন অনিল চন্দ্র তংচংগা দশম শ্রেণির ছাত্র৷ চট্টগ্রামের চন্দ্রঘোনার এই তরুণ যুদ্ধের শুরুর দিকে ছিলেন গোয়েন্দা৷ এরপর ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ শেষে অংশ নেন সম্মুখ যুদ্ধে৷

https://p.dw.com/p/11DSo
ছবি: AP

একাত্তরে অনিল চন্দ্র তংচংগা'র বয়স ছিল ১৮ বছর৷ মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে খানিকটা গোয়েন্দার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তিনি৷ চট্টগ্রামের চন্দ্রঘোনায় অবস্থানরত পশ্চিম পাকিস্তানিদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতেন এই তরুণ৷ এরপর সেসব তথ্য পৌঁছে দিতেন মুক্তিকামী এক রাজনৈতিক নেতার কাছে৷

ভারতে প্রশিক্ষণ

অনিল ভারতের দেরাদুনে গেরিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন জুন মাসের দিকে৷ আগস্টে ফিরে আসেন দেশে৷ অবস্থান নেন রাঙ্গুনিয়া এলাকায়৷ একাধিক সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর৷ বিশেষ করে এক সহযোদ্ধাকে রানিরহাটের শত্রুঘাঁটি থেকে উদ্ধারের কথা এখনো মনে আছে তাঁর৷ পরিমল শীল নামে সেই যোদ্ধা আজও বেঁচে আছেন৷ অনিল জানান, আমরা তিনদিক দিয়ে হামলা করেছিলাম রানিরহাটে৷ সেটা ছিল সবার সামনে সম্মুখ যুদ্ধ৷ শত্রুসেনাদের ঘায়েল করে সেখানকার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পরিমলকে উদ্ধার করি৷ তাকে অত্যাচার করা হয়েছিল৷

Bangladesh Victory Day 2005
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা দেখে যেতে চান অনিলছবি: AP

পাঁচ সহযোদ্ধার মৃত্যু

এমন সফলতা সবসময় ধরা দেয়নি অনিলের ভাগ্যে৷ আরেকবার কাউখালি থেকে তাঁরই পাঁচ সহযোদ্ধাকে আটক করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী৷ তাদেরকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি৷ অনিল জানান, পাকিস্তানি হানাদাররা কাউখালি থেকে তাদেরকে আটক করে রাঙামাটি নিয়ে যায়৷ আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে উদ্ধারে৷ কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি৷ কেননা, তাদেরকে রাঙামাটি নিয়েই হত্যা করেছিল শত্রুরা৷

ইউনিয়ন চেয়ারম্যান

অনিল চন্দ্র তংচংগা বর্তমানে বাস করছেন চন্দ্রঘোনার ওয়াবদা ইউনিয়নে৷ স্বাধীনতার পর দেশগড়ায় মনযোগী হন এই বিজয়ী সেনা, যোগ দেন রাজনীতিতে৷ ১৯৯২ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন অনিল৷ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি সুযোগসুবিধাও পাচ্ছেন তিনি৷ অনিল মনে করেন, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর মৃত্যুর পর স্বাধীনতা বিরোধীরাই দেশের নেতৃত্বে চলে গিয়েছিল৷

অনিল অবশ্য স্বীকার করেন, বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে৷ শিক্ষা, চিকিৎসা খাতেও উন্নতি চোখে পড়ার মত৷

স্বপ্নের সেনার বাংলা

অনিল চান, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে, স্বাধীনতার চেতনায় দেশগড়ায় মনযোগ দিতে পারে৷ অন্তত মৃত্যুর আগে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা দেখে যেতে চান অনিল৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক