ফ্লেন্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়
২৩ ডিসেম্বর ২০১০ইউনিভার্সটি অফ ফ্লেন্সবুর্গ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৪ সালে৷ অত্যন্ত নতুন এবং আধুনিক এই বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যেই সুনাম কুড়িয়েছে৷ ফ্লেন্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে প্রায় সাড়ে চার হাজার ছাত্র-ছাত্রী৷
সব মিলে পাঁচটি অনুষদ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ এই অনুষদগুলোর অধীনে ২৪টি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ দিচ্ছে ফ্লেন্সবুর্গ ইউনিভার্সিটি৷ আন্তর্জাতিক মান ধরে রাখতে এবং বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের আকৃষ্ট করতে বিশ্ববিদ্যালয়টি বেশ কিছু বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ দিচ্ছে ইংরেজিতে৷
তবে যে বিষয়ের জন্য ফ্লেন্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় সুনাম কুড়িয়েছে তা হল জ্বালানি এবং পরিবেশ ব্যবস্থাপনা৷ এ বিষয়টি পড়াতেই অনেক বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী ভীড় জমায় ফ্লেন্সবুর্গে৷
ভার্তির আগের প্রস্তুতি
ব্যাচেলর, মাস্টার্স এবং পিএইচ ডি করার সুযোগ দিচ্ছে ইউনিভার্সিটি অফ ফ্লেন্সবুর্গ৷ বাংলাদেশের ছাত্র আলম হোসেন মন্ডল৷ তিনি ফ্লেন্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছেন৷ ২০০৩ সালে তিনি তাঁর মাস্টার্স শুরু করেন৷ বিষয় ছিল সাসটেনেবল এনার্জি সিস্টেম এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট৷ ২০০৫ সালের মার্চ মাসে তিনি তাঁর মাস্টার্স শেষ করেন৷ কীভাবে নিজেকে তৈরি করেছিলেন মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য? আলম হোসেন জানান, ‘‘আমি মূলত নির্ভর করতাম ইন্টানেটের ওপর৷ সেখান থেকেই তথ্য সংগ্রহ করতাম৷ সেখানে অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের খোঁজ-খবর পাই একই সঙ্গে ডিএএডি-র বৃত্তির খবর পাই, যে ডিএএডি থেকে বৃত্তি পাওয়া সম্ভব এবং সেই খরচে এখানে পড়াশোনা করা সম্ভব৷ আর এইসব বৃত্তি পাওয়া তৃতীয় বিশ্বের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খুবই সহজ৷''
সাহায্য করতে পারে জার্মান দূতাবাস
আলম হোসেন মন্ডল আরো জানান, ‘‘আমার একজন সহকর্মী আমাকে প্রাথমিক তথ্য দিয়েছিলেন এরপর ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ করি এছাড়া ঢাকাস্থ জার্মান দূতাবাসে যাই এবং সেখান থেকে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত একটি বুকলেট আমি সংগ্রহ করি৷ সেই বুকলেটে উল্লেখ ছিল কোন্ বিশ্ববিদ্যালয়, কোন্ কোন্ বিষয় আমাদের দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য৷ এসব তথ্য সংগ্রহ করেই আমি মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য আমি আবেদন করি৷ বৃত্তির জন্যও আবেদন করি৷ আমার আবেদন পত্র গ্রহণ করা হয়৷ এরপর আমি জার্মানিতে আসি মাস্টার্স করার জন্য৷''
জার্মান ভাষার প্রয়োজনীয়তা
জার্মানিতে মাস্টার্স করার জন্য জার্মান ভাষার জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ই বিশেষ একটি পরীক্ষার ওপর জোর দেয়৷ আলম হোসেন মন্ডল জানালেন,‘‘আমার কোর্সে জার্মান ভাষার প্রয়োজন ছিল না৷ আমাকে আগেই বলা হয়েছিল এটা ইন্টারন্যশনাল প্রোগ্রাম, এখানে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হবে৷ সেজন্য আমাকে জার্মান ভাষাটি শিখতে হয়নি৷ তবে সেই প্রোগ্রামে দুই মাসের একটি কোর্সের ব্যবস্থা ছিল৷ তখন সেটা বাধ্যতামূলক ছিল না এখন এই কোর্সে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক৷ এর মূল কারণ হল এখানে চলাফেরার সুবিধার জন্য জার্মান ভাষা জানা জরুরি৷ তবে কোর্সের জন্য জার্মান ভাষার প্রয়োজন নেই৷''
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার অভাবনীয় সুযোগ রয়েছে জার্মানিতে এবং তা বৃত্তি সহ৷ তবে একটু কষ্ট করতে হবে, খোঁজ খবর নিতে হবে৷ বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রী যারা বিদেশে বিশেষ করে জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য আসতে চান তাদের উদ্দেশ্যে আলম হোসেন মন্ডলের পরামর্শ,‘‘আমার পরামর্শ হবে অত্যন্ত সুক্ষ্মভাবে দেখতে হবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ডিএএডি-র বৃত্তির কী কী সুযোগ সুবিধা রয়েছে৷ আমি বৃত্তি নিয়েই এখানে পড়াশোনার জন্য আসতে বলব৷ বৃত্তি পাওয়া খুব জটিল ব্যাপার নয়৷ শুধু বিষয় বাছাইয়ের সময় নজর রাখতে হবে৷ কারণ, সব বিষয়ে বৃত্তির সুবিধা থাকে না৷ এছাড়া জার্মান দূতাবাসে গেলেই বিনামূল্যে বুকলেটটি পাওয়া যাবে৷ সেই বুকলেট দেখে আপনি আপনার বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে পারেন৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ভর্তির ফর্মও ডাউনলোড করা সম্ভব৷ তা যদি না পারেন তাহলে জার্মান দূতাবাস ফর্ম ডাউনলোড করতে সাহায্য করবে৷ এরপর সেই ফর্ম পূরণ করে, পড়ার বিষয় নিয়ে সামারি লিখলে – আমি দেখেছি বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে৷''
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক