শিল্প ও সৃজনশীলতা
৩০ আগস্ট ২০১৩৩৩ বছর বয়সি নিক জেন্ট্রি ফ্লপি ডিস্কের সঙ্গেই বেড়ে উঠেছেন৷ একসময় এগুলোতে কম্পিউটার গেমস জমা রাখতেন তিনি এবং বন্ধুদের সঙ্গে অদলবদল করতেন৷ বর্তমানে তিনি সাড়ে তিন ইঞ্চি আকারের এসব প্লাস্টিক ডিস্ক ক্যানভাস হিসেবে ব্যবহার করেন৷ নিক জেন্ট্রি এই বিষয়ে বলেন, ‘‘কেউ শুধু সমতল সাদা ক্যানভাস কেন ব্যবহার করবে? ভাবলাম, শুধু বিষয়বস্তু বদলানো নয়, বিষয়টিকেই যদি কাজের মধ্যে বসিয়ে দিতে পারি, সরাসরি ক্যানভাসের মধ্যে, তাহলে ক্ষতি কী!''
ব্রাশ আর রং হাতে নেওয়ার আগে নিক জেন্ট্রি ফ্লপি ডিস্ক দিয়ে ছবি আঁকেন৷ বিভিন্ন রংয়ের ফ্লপি ডিস্ক প্রয়োজনমত সাজিয়ে তিনি প্রতিকৃতির রূপরেখা তৈরি করেন৷ সবকিছু ঠিক করার পর তিনি আঠা দিয়ে সেগুলো আটকে দেন৷ একটি ছবি তৈরি করতে তাঁর একশোর মতো ফ্লপি ডিস্ক দরকার হয়৷
জেন্ট্রি তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রযুক্তির বিকাশের প্রতি নজর আকর্ষণ করতে চান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রযুক্তির বড় ভক্ত৷ তাই মনে হয় এ সব আমার চারিপাশ ঘিরে রয়েছে৷ আমি হয়তো অভিনব এক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি, যেখানে আজকের প্রযুক্তির পাশাপাশি অতীতের প্রযুক্তি সম্পর্কেও আমার একটা বোধ রয়েছে৷ আমার চেয়ে কমবয়সিদের কিন্তু অতীতের সঙ্গে যোগাযোগ কম৷ ''
জেন্ট্রি ফ্লপি ডিস্ক ব্যবহার করে বছরে ত্রিশ থেকে চল্লিশটি চিত্রকর্ম তৈরি করেন৷ এগুলো ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রদর্শন করা হয়েছে এবং এক একটির মূল্য গড়ে আঠারো থেকে চল্লিশ হাজার ইউরোর মতো৷ ব্যক্তিগত সংগ্রহকারীরা ছাড়াও সান ফ্রান্সিসকোর মডার্ন আর্ট জাদুঘরে তাঁর চিত্রকর্ম রয়েছে৷
বর্তমান সময়ের প্রযুক্তি এবং সামাজিক নেটওয়ার্কের সহায়তা ছাড়া নিক জেন্ট্রির ফ্লপি ডিস্ক চিত্রকর্ম তৈরি হতো না৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ মানুষ তাঁকে ফ্লপি ডিস্ক পাঠান৷ জেন্ট্রির শিল্পর্কমের জন্য এই সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ তিনি বলেন, ‘‘শিল্পী এবং দর্শকের মধ্যকার দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করছি আমি৷ যখন কেউ একটি গ্যালারিতে যায় তখন এই দূরত্বটা অনুভব করে৷ আমি এই দূরত্ব ঘোচাতে চাচ্ছি৷''
জেন্ট্রিকে অনেকে ডিস্কের সঙ্গে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান এবং সেগুলোর মধ্যে কী আছে, সে সম্পর্কে জানান৷ তবে জেন্ট্রি কখনো ফ্লপি ডিস্কের মধ্যে থাকা তথ্য দেখেননা৷ তিনি এ সব তথ্য গোপন অবস্থাতেই তাঁর চিত্রকর্মের মধ্যে জমা রাখতে পছন্দ করেন৷ আঁকার সময় তিনি মুখে শেষ আঁচড় দেন৷ জেনেশুনেই প্রতিকৃতির কোনো পরিচয় রাখেন না৷ প্রযুক্তির বিবর্তন ও মানুষের উপর তার প্রভাব, এটাই তিনি দেখাতে চান৷ এটাই তাঁর শিল্পের ভিত্তি৷