ফ্রি রানিং
৭ জুন ২০১৭টিমোর আর ফেলিক্সের জন্য অলঙ্ঘ্য বাধা বা বেড়া বলে কিছু নেই৷ কেননা এই দুই তরুণ হলেন ‘ফ্রি রানার'৷
ফ্রি রানিং-এর মূলমন্ত্র হলো মুভমেন্ট৷ ফ্রি রানাররা যাবতীয় প্রতিবন্ধক পার হয়ে যান ও তা করার সময় নানা ধরনের কেরামতি দেখান৷ ফেলিক্স কুইন্টন বললেন, ‘‘আমার কাছে ফ্রি রানিং-এর বুনিয়াদি ধারণা হল একটা স্বাধীনতার অনুভূতি ও সেই সঙ্গে একটি জীবনদর্শন৷ এই খেলায় মানুষদের সঙ্গে সম্পূর্ণ অন্যভাবে মোলাকাত হয়৷ আমার স্বভাবচরিত্রের ওপরও এই খেলার ছাপ পড়ে – ফুটবল বা হ্যান্ডবলে যেরকম হয় না৷''
ফ্রি রানিং-এর অর্থ এই নয় যে, না ভেবেচিন্তে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ঝাঁপ দেওয়া৷ সব কিছু নির্ভর করে সঠিক কৌশলের উপর৷ স্লো মোশানে দেখলে এর অ্যাথলেটিক দিকটা বোঝা যায়৷ দুর্লঙ্ঘ্য প্রতিবন্ধক আর মানুষের মধ্যে ইন্টারঅ্যাকশন৷
ফ্রি রানার টিমোর সঈদ বলে, ‘‘স্বভাবতই আমার ভয় করে, কিন্তু সেটা দ্বিধা না হয়ে সাবধানতার রূপ নেয়৷ আমি যখন ছাদের কোণায় দাঁড়াই অথবা একটা বিরাট লাফ দেবার আগে – তখন আমার ভয় থাকে এই মর্মে যে, আমি জানি, কিছু একটা ঘটতে পারে৷ তখন সেই ভয় কাটিয়ে উঠি এই বলে যে, আমি ট্রেনিং করেছি, প্র্যাকটিস করেছি৷ কাজেই আমি লাফ দেব – সেই অভিজ্ঞতার জন্যেই তো আমি বেঁচে আছি৷''
নতুন লোকেশান
ফেলিক্স একটি নতুন লোকেশানে যাচ্ছে৷ একটি পার্কিং ব্লকের বিভিন্ন তলা থাকে, তাই এখানে একটি দুঃসাহসি কেরামতি দেখানো যায়৷ ফেলিক্স দু'টি বাড়ির মধ্যে একটা বড় গলির ওপর দিয়ে লাফ দেবেন – এ যেন একসঙ্গে হাইজাম্প আর লংজাম্প করা! মনে মনে ভেবে নিলেন, ঠিক কীভাবে লাফ দেবেন, কেথায় গিয়ে পড়বেন ইত্যাদি – কেননা একবারের বেশি তো সুযোগ থাকবে না...!
টিমোর সঈদ বললেন, ‘‘কথায় বলে, দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ আওয়ার প্লেগ্রাউন্ড – দুনিয়াটা আমার খেলার জায়গা৷ আমরা সত্যিই সর্বত্র ট্রেনিং করতে পারি আর খেলতে পারি – সেটাই হলো আমাদের আসল স্বাধীনতা৷ আমরা যে শুধু যেখানে ইচ্ছে যেতে পারি, শুধু তাই নয়; বরং আমাদের শরীর ও তার মুভমেন্ট দিয়ে আমরা নিজেদের ব্যক্ত করতে পারি৷ সেটাই আমাদের স্বাধীনতা৷''
ফ্রি রানাররা সবসময়েই তাদের দৌড়ঝাঁপের পদ্ধতি ও পরিধি বাড়িয়ে চলেছেন – পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে৷
ফ্রি রানিং শুধু স্পোর্ট নয়, এটা একটা আর্ট৷ এর মাধ্যমে নিজের সীমানা জানা যায়, সেই সীমানা ছাড়িয়ে যাওয়া যায়৷