1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফসলের পোকা তাড়াতে নতুন উদ্যোগ

ইউলিয়া হেনরিশমান/এসবি৩০ ডিসেম্বর ২০১৪

পোকামাকড়, ছত্রাক থেকে শুরু করে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা – ফসল নষ্ট হওয়ার পেছনে থাকে অনেক কারণ৷ সহজে শস্য সুরক্ষার জন্য নানা প্রণালী তৈরি হচ্ছে জার্মানিতে৷ আফ্রিকায় সেগুলি কাজে লাগিয়ে লোকসান এড়ানোর আশা করা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/1EC0V
Simbabwe Kleinbauer Gilbert Chakasikwa
ছবি: DW/C. Mavhunga

পোকামাকড়, ছত্রাক থেকে শুরু করে তাপমাত্রা, আর্দ্রতা – ফসল নষ্ট হওয়ার পেছনে এমন অনেক কারণ কাজ করে৷ সহজ উপায়ে শস্যের সুরক্ষার জন্য নানা প্রণালী তৈরি করা হচ্ছে জার্মানিতে৷ আফ্রিকায় সেগুলি কাজে লাগিয়ে লোকসান এড়ানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

শস্যের মধ্যে লোভী পোকার দল৷ তারা গোটা ফসল নষ্ট করে দিতে পারে৷ জার্মানির বিজ্ঞানী উভে রিশটার এই ক্ষতিকারক পোকাদের প্রকাশ্যে আনতে চান৷ কারণ উন্নয়নশীল দেশগুলিতে প্রতি বছর ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ ফসল নষ্ট হয়ে যায়৷ মিনি সেন্সর-এর সাহায্যে তিনি পোকাদের চিহ্নিত করে তাদের সংখ্যা ও অবস্থান নির্ণয় করতে চান৷

কৃষিবিজ্ঞানী উভে রিশটার বলেন, ‘‘পরিমাণটাই আসল কথা৷ ক্ষতিকারক পোকার সংখ্যা কম হলে সমস্যা নেই, তারা আংশিক ক্ষতি করে৷ কিন্তু তাদের দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটে৷ তাদের চিহ্নিত করে পদক্ষেপ নিতে হলে আগে জানতে হবে কোনো প্যালেটের মধ্যে তাদের অস্তিত্ব আছে কিনা৷ থাকলে সেগুলি গুদামে বাকি প্যালেটগুলির সঙ্গে রাখা উচিত নয়৷''

Junge Farmer in Kenia
কেনিয়ার তরুণ চাষিরাছবি: J. van Loon

হাই-টেক সেন্সরের দৃষ্টি এড়িয়ে গুদামে কিছুই ঘটতে পারে না৷ ইউরোপের তুলনায় আফ্রিকায় ক্ষতিকারক পোকা অনেক বড় সমস্যা৷ উভে রিশটার বলেন, ‘‘ছোট ছোট চাষীরাই ফসল উৎপাদন করেন৷ ফলে গুদামের ব্যবস্থা ভালো নয়৷ তাই ফসল বার বার সরাতে হয়৷ জার্মানির তুলনায় প্রক্রিয়া অনেক জটিল৷ জার্মানিতে সাধারণত একজন বড় চাষী শস্য সংরক্ষণ করেন৷ শস্য সেখানেই থাকে, তারপর বিক্রি হয়৷ কিন্তু কেনিয়ায় দালাল সহ অনেক হাত-বদলের পর অবশেষে তা বিশ্বের বাজারে পৌঁছায়৷''

জার্মান গবেষকরা ইথিওপিয়াও গিয়েছিলেন৷ তাঁরা সেখানে কৃষিজাত পণ্যের হাটে গিয়ে সেখানকার অবস্থা পরীক্ষা করেছিলেন৷ ভবিষ্যতে এমন নাটকীয় লোকসান এড়ানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ কাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিস্টিয়ান ডেডে বলেন, ‘‘যতদিন ফসলের এই লোকসান চলতে থাকবে, ততদিন উৎপাদন বাড়িয়ে সঙ্গে লোকসানেরও মাত্রা বাড়ানোর কোনো অর্থ হয় না৷ আমাদের আইডিয়া হলো, উৎপাদন না বাড়িয়ে লোকসানের মাত্রা কমানো উচিত৷ এর মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ করে আরও টেকসই উপায়ে খাদ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে নেওয়া যাবে৷''

যেমন ভুট্টা উৎপাদনের ক্ষেত্রে কেনিয়ায় ফসলের বিশাল লোকসান দেখা গেছে৷ ইসায়া মুচিলওয়া জার্মানির কাসেল শহরে শুকানোর প্রক্রিয়ার বিষয়ে গবেষণা করছেন৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নিয়মিত ফসল ফলছে না৷ আগের মতো আবহাওয়ার পূর্বাভাষও করা যাচ্ছে না৷ কেনিয়ার গবেষক ইসায়া মুচিলওয়া বলেন, ‘‘ডাঁটে থাকতে ভুট্টার দানা শুকাতে কত সময় লাগে, তার পূর্বাভাষ দিতে আমি এক প্রণালী তৈরি করছি৷ এটা জানা আমাদের জন্য জরুরি, কারণ পোকা লাগা বা খারাপ আবহাওয়ার কারণে ছাতা ধরার আগেই আমরা ফসল তুলতে পারি৷''

শুধু পোকা বা ছত্রাকই নয়, শাক-সবজি পচে যাওয়ার সমস্যাও রয়েছে৷ ঘানার গবেষক জোসেফ করেসে কাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাঙা আলুর এক পরীক্ষামূলক গুদাম তৈরি করছেন৷ আফ্রিকায় রাঙা আলু পুষ্টির গুরুত্বপূর্ণ উৎস৷ ঘানার গবেষক জোসেফ করেসে বলেন, ‘‘আমরা আফ্রিকার মাটির বাড়ি নতুন করে আবিষ্কার করার চেষ্টা করছি৷ আফ্রিকার মাটি দিয়ে তৈরি এই বাড়ি কোল্ড স্টোরেজ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে৷ এটা সম্ভব৷ শুধু বাড়ির সঙ্গে এক সৌর প্রণালী যুক্ত করতে হবে, যাতে এক ভেন্টিলেশন প্লান্ট চালানো যায়৷ এর মাধ্যমে তাপমাত্রা কমিয়ে গুদামের আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব৷''

এমন গুদামঘর তৈরি করা বেশ সহজ৷ জ্বালানির কোনো খরচ নেই৷ লোকসান এড়াতে গুদামঘরের তাপমাত্রা ঠিক কত ডিগ্রি হওয়া উচিত, জোসেফ করেসে তাঁর রাঙা আলুর সম্ভার দিয়ে তা দেখতে চান৷ ক্রিস্টিয়ান ডেডে বলেন, ‘‘এক্ষেত্রে প্রসেসিং-এর ব্যাপার নেই বললেই চলে৷ অনেক পণ্য আসলে অত্যন্ত স্পর্শকাতর৷ খামারের কাছাকাছি প্রক্রিয়াজাতকরণের উপায় খুঁজছি আমরা৷ শুকিয়ে, ফুটিয়ে অথবা টেকসই শস্যের উৎপাদন করে এই চেষ্টা করছি৷ কিন্তু মূল সমস্যা হলো প্রসেসিং, পরিবহণ ও গুদামজাতকরণ৷''

তাই জার্মানিতে তৈরি অনেক প্রক্রিয়া ফসল বাঁচাতে দ্রুত আফ্রিকায় প্রয়োগ করার চেষ্টা চলছে৷ জোসেফ করেসে-র রাঙা আলুর গুদামও তার মধ্যে অন্যতম৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য