প্রকৃতির বিস্ময়
১০ মে ২০১৩ফল-মূল কোথায় না পাওয়া যায়? হাজার-হাজার বছর ধরে তারা জলবায়ু ও চারিদিকের পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে৷ যেমন নাশপাতি৷ উত্তর আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপেও নাশপাতি ফলে৷ এত বড় এলাকায় টিকে থাকতে হলে যাই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা৷ তবে যেখানেই ফল ফলুক না কেন, তাদের তাপমাত্রার বিশাল ফারাকের সমস্যার মুখে পড়তে হয়৷
দীর্ঘ সময় ধরে উত্তাপ থাকলে ফলের মধ্যে আর্দ্রতা কমে যেতে পারে৷ বিশেষ করে আঙুরের ক্ষেত্রে স্পষ্ট দেখা যায়, কীভাবে ফল শুকিয়ে যায়৷ অন্যদিকে, বেশিদিন ধরে আর্দ্রতা থাকলে ফল পচে যেতে পারে৷ বেশি বৃষ্টি হলে ফলের মধ্যে পানি ঢুকে তা ফেটেও যেতে পারে৷
তাই প্রতিটি ফল বিশেষ এক স্তর দিয়ে ঢাকা থাকে৷ আঙুর, টমেটো বা আপেল – সব ফলের উপরেই মোমের মতো একটা আস্তরণ থাকে৷ খালি চোখে তা সবসময় দেখা যায় না৷
ফলের ভিতরের অংশের সুরক্ষার জন্য সবার আগে কোষের এক দেওয়াল থাকে, যা ফলকে শক্ত রাখে৷ সুরক্ষা আরও মজবুত করতে তার উপর থাকে অত্যন্ত সরু এক ত্বক, যার আবার অনেকগুলি স্তর রয়েছে৷ সবার উপরে থাকে মোমের মতো স্তরটি৷
ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপে নীচে খুঁটিয়ে দেখলে অনেক ফলের মধ্যে ক্রিস্ট্যাল বা স্ফটিকের মতো এক কাঠামো চোখে পড়বে, যা বেশ অবাক করার মতো৷ এই সব সুরক্ষার ফলেই আঙুর টেকসই হয় – আমরা তার স্বাদ পেতে পারি৷
ফলের উপর সাদা স্তর মানেই কীটনাশকের চিহ্ন বা বিষ নয়, যদিও অনেকে তা মনে করেন৷ তবে এটা ঠিক যে মোমের মতো স্তর পেলে কীটনাশক অনেকদিন টিকে থাকতে পারে৷ তাই আঙুর বা অন্যান্য ফল খাবার আগে ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হয়৷
আপেলও ভালো করে ধুতে হয়৷ তাই প্রাকৃতিক এই মোমের স্তর দেখে ভয় পাবার কিছু নেই৷ আপেলের খোসা কিন্তু খুবই পুষ্টিকর৷
খালি চোখে দেখা বা তা অনুভব করা না গেলেও সব ফলেরই সুরক্ষার এমন স্তর রয়েছে৷ চারিদিকের পরিবেশ বদলে যাওয়ার কারণেই ফলমূলের এমন এক বর্মের প্রয়োজন৷
এসবি/ডিজি