1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফলাফল আসবে না জেনেও কানকুনে চলছে জলবায়ু সম্মেলন

৩ ডিসেম্বর ২০১০

গত বছরের ডিসেম্বরে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল জলবায়ু সম্মেলন৷ কিন্তু উষ্ণায়ন রোধে চুক্তি সম্পাদন তীব্র মতবিরোধের কারণে ভেস্তে যায়৷ কিন্তু এবার কানকুনে কি হচ্ছে?

https://p.dw.com/p/QOiR
মেক্সিকোর কানকুনে চলছে জলবায়ু সম্মেলনছবি: AP Photo/Israel Leal

১২ দিন ব্যাপী কানকুন সম্মেলনের ফলাফল আসবে, এ নিয়ে তেমন আশাবাদী নন অনেকেই৷ তারা মনে করছেন, এই সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে বড় ধরণের কোনো সাফল্য আসবে না৷ তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তায় ‘সবুজ তহবিল' গঠনের ক্ষেত্রে এ সম্মেলনে সাফল্য আসতে পারে বলেই মত তাদের৷ আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে ১৬ তম এই সম্মেলন৷

গত শতাব্দীর শেষ দিকে বিজ্ঞানীরা দেখলেন যে পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমেই বাড়ছে৷ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা গত একশ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে শূন্য দশমিক সাত চার ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এই উষ্ণতা বৃদ্ধি বিভিন্নভাবে পৃথিবীর আবহাওয়া ও জীববৈচিত্র্যের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে৷

জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ দূষণের ফলে জলবায়ু পরিবর্তন হবার কারণে পৃথিবীর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ গাছপালা ও প্রাণী রয়েছে সর্বোচ্চ হুমকির মুখে৷ বলা হচ্ছে, বিশ্বের তাপমাত্রা যদি ১ দশমিক ৫ হতে ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পায়, তাহলে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ গাছপালা ও পশু-পাখির জীবনের উপর ভয়াবহ ঝুঁকির সম্ভাবনা বিদ্যমান৷ অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবীতে গ্রিন হাউস গ্যাসের প্রভাবে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, ঝড়ঝঞ্ঝা, খরা, বন্যা, বরফ গলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি ও পানি সংকট দেখা দিতে পারে৷

তথ্যানুযায়ী যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কারণ, তাহলো ২০৮০ সালের মধ্যে ১১০ থেকে ৩০০ কোটি মানুষ ভয়াবহ পানি সংকটে পড়বে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে৷

আগেই বলেছি, এই সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয় জলবায়ু তহবিলের বণ্টন৷ তাপমাত্রা না বাড়াতে কোন দেশ কী অঙ্গীকার করবে, তা নিয়েও এখানে কথা হচ্ছে৷ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমানো ও বনায়নের মাধ্যমে কার্বন ধরে রাখার মাধ্যমে বিশ্বে কার্বন নিঃসরণে ভারসাম্য নিয়ে আসার বিষয়ও আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে৷ সেখানে উপস্থিত আছেন বাংলাদেশের অক্সফামের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং জলবায়ু বিশেষষজ্ঞ জিয়াউল হক মুক্তা৷ তিনি জানালেন, এই সম্মেলনে বড় ধরণের ফলাফল না আসলেও অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রগতি হবে বলে তারা মনে করছেন৷

গত বছর ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যোগ দিয়েছিলেন৷ কানকুনে তেমনটি হচ্ছে না৷ মেক্সিকো জানিয়েছে, সবাইকে আমন্ত্রণও জানানো হয়নি৷ জানা গেছে, গত মঙ্গলবার হঠাৎ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ইউরোপের কয়েকটি দেশ ও লাতিন আমেরিকার কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে৷ তবে এই নেতারা ঐ সম্মেলনে যোগ দেবেন কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়৷

১৯৯৫ সালে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন৷ এবার আশা করা হচ্ছে, আগামী বছর ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে বিশ্ববাসী এ নিয়ে নতুন এক চুক্তি দেখতে পাবেন৷ যে চুক্তির আলোকে বাঁচানো যাবে এই সুন্দর পৃথিবীকে৷

প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক