ফরাসি আঞ্চলিক নির্বাচনে ধরাশায়ী সার্কোজির দল
১৫ মার্চ ২০১০ফলাফল এখন কোথায় দাঁড়িয়ে
প্রায় ৯৬ শতাংশ ভোটগণনার কাজ শেষ হয়েছে এ পর্যন্ত৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজির মধ্য দক্ষিণপন্থী রক্ষণশীল ইউএমপি পার্টি প্রায় ধরাশায়ী৷ মাত্র ৩৯.৮ শতাংশ ভোট তাদের সংগ্রহে৷ আর বিরোধী সমাজবাদী এবং বামপন্থী প্রার্থীরা সব মিলিয়ে পেয়েছেন ৫৩.৬ শতাংশ৷ ম্যানডেট খুবই স্পষ্ট৷ ক্ষমতাসীন রক্ষণশীলদের বিরুদ্ধেই গিয়েছে জনমত৷
কেন এমন ধাক্বা খেলেন সার্কোজি
একদিকে ফ্রান্সের অর্থনৈতিক অবনমন, যার কিছুটা কারণ বিশ্বজোড়া মন্দা৷ এবং যার প্রভাবে বেকারীর হার বৃদ্ধি পাওয়া, আর অন্যদিকে ফ্রান্সের উদার অভিবাসী নীতির প্রতি সাধারণ ফরাসিদের অসমর্থন৷এই দুটি কারণকেই প্রধান বলে ব্যখ্যা করছে ফরাসি মিডিয়া৷ দু'একটি টেলিভিশন চ্যানেল আবার অন্য ব্যাখ্যাও দিচ্ছে৷ ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, এতদিন রাজনৈতিক সমর্থন সেভাবে না পাওয়া চরম দক্ষিণপন্থী এবং জাতীয়তাবাদী ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্টি এই স্থানীয় নির্বাচনে ১২ শতাংশ ভোট পেয়েছে৷ ব্যাপারটা বেশ বিস্ময়কর৷ এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের অভ্যন্তরে অভিবাসী ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যাবৃদ্ধি মেনে নিতে পারছে না অনেক ফরাসি৷ সে কারণেই জঁ মারি ল পেন-এর নেতৃত্বে উগ্র জাতীয়তাবাদী দলটি জনসমর্থন লাভ করেছে খানিকটা৷ তবে, আর্থিক মন্দার মোকাবিলায় সার্কোজির রক্ষণশীল সরকারের ব্যর্থতার ফলেই বামপন্থী এবং সমাজবাদীদের লাভ হয়েছে আঞ্চলিক নির্বাচনে৷
এই ফলাফলের প্রভাব কী সার্কোজি সরকারের ওপরে পড়বে
এক্ষুনি না হলেও ভবিষ্যতে প্রভাব পড়তেই পারে৷ তার কারণ আগামী রবিবার ফ্রান্সের বকেয়া দুটি প্রদেশ, কর্সিকা আর আলসাসেতে ভোটগ্রহণ৷ যদি সেখানেও উল্টে যায় সার্কোজির ইউএমপি দল এবং তাদের ক্ষমতাসীন জোটের প্রাদেশিক সরকার, সেক্ষেত্রে ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিকোলা সার্কোজির জন্য দুঃসংবাদ অপেক্ষা করে থাকারই সম্ভাবনা৷ নির্বাচনের আগেই সমীক্ষা থেকে শোনা যাচ্ছিল, সার্কোজি সরকারের আর্থিক সংস্কার নীতিতে আদৌ সন্তুষ্ট নয় সাধারণ মানুষ৷ দেখা গেল সমীক্ষা খুব একটা ভুল বলে নি৷
কিন্তু ভোট পড়েছে খুবই কম
সবমিলে টেনেটুনে মাত্র ৪৬.৫ শতাংশ৷ ফ্রান্সে সবচেয়ে কম ভোট পড়ার রেকর্ড এটা৷ ২০০৪ সালে শেষবারের আঞ্চলিক নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬০ শতাংশ৷ প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া ফিলোঁ বলছেন, এত কম ভোট পড়ার ফলে ভোটারদের জাতীয় মানসিকতার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না৷ তবে, ইউরোপ জুড়েই ভোটারদের মধ্যে এই ভোটদানে অনীহা সাম্প্রতিক অতীতে একটা বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে৷ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই অনীহা সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে ইউরোপে৷ ফ্রান্স যে কোন ব্যতিক্রম নয়, সেটাই প্রমাণ হল রবিবার৷
প্রতিবেদন- সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা- আরাফাতুল ইসলাম