প্রথম শহর গড়ে উঠেছিল যেখানে
বর্তমানে যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাসীর কাছে ইরাক আর সিরিয়া পরিচিত হলেও এই দুটি দেশের অতীত ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ৷ এদেরই কিছু অংশে গড়ে উঠেছিল মেসোপটেমিয়া সভ্যতা৷
নদীর তীরে সভ্যতা
আজ থেকে প্রায় ছয় হাজার বছর আগে ইউফ্রেটিস আর টাইগ্রিস নদীর তীরে কয়েকটি শহর গড়ে তুলেছিলেন মেসোপটেমিয়া সভ্যতার অধিবাসীরা৷ সেই সময় নিনেভে শহরটি কেমন ছিল, শিল্পীর তুলিতে আঁকা উপরের ছবিতে তা-ই দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে৷
ইরাক ও সিরিয়া
মানচিত্রটি খেয়াল করে দেখুন, ইরাকের মসুল শহরের কাছে তৎকালীন নিনেভে শহরটি অবস্থিত ছিল৷ আর গোল চিহ্নিত অংশটি ছিল মেসোপটেমিয়া৷ বর্তমান ইরাক ও সিরিয়ার কিছু অংশ ছিল সেই সভ্যতার অংশ৷
আদি অক্ষর
দেখে কী মনে হচ্ছে? কয়েকটা সরল রেখা আর তারার মতো কিছু চিহ্ন? আসলে এটি মেসোপটেমিয়ার মানুষদের লেখার কৌশল, যা ‘কিউনিফর্ম’ নামে পরিচিত৷ এই অক্ষরকে অবলম্বন করেই পরবর্তীতে কয়েকটি ভাষার অক্ষর তৈরি করা হয়েছে৷
বিধাতার কাছ থেকে শক্তি!
মেসোপটেমিয়ার রাজারা বিধাতার কাছ থেকে ক্ষমতা পেতেন বলে মনে করা হয়৷ বিনিময়ে শহর গড়ে তোলা আর মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হতো তাঁদের৷ ছবির শিল্পকর্মটিতে রাজা প্রথম টুকুলটি-নিনুরটাকে দেখতে পাচ্ছেন৷
শিকারি থেকে পশুপালক
মেসোপটেমিয়ার অধিবাসীরা আগে ছিলেন শিকারি৷ পরে তাঁরাই হয়ে ওঠেন পশুপালক৷ শুধু তাই নয়, কৃষিকাজও প্রথমে তাঁরাই শুরু করেছিলেন৷ মেসোপটেমিয়ার দক্ষিণাঞ্চল রুক্ষ থাকায় সেখানে সেচ ব্যবস্থাও চালু করেছিলেন তাঁরা৷ একই সময়ে দুধ দিয়ে দই, পনির ইত্যাদি তৈরিও শুরু হয়৷
প্রথম চাকা
ছবিতে একজন কাঠমিস্ত্রিকে অক্ষদণ্ড খোদাই করতে দেখা যাচ্ছে৷ অক্ষদণ্ড হচ্ছে এমন একটি দণ্ড, যাকে কেন্দ্র করে চাকা ঘোরে৷ এছাড়া মেসোপটেমিয়ার অধিবাসীরা কাপড় বোনা, সিরামিক, ধাতু, কাঁচ, আগুন ইত্যাদির নানা ধরনের ব্যবহার শিখেছিলেন৷
সভ্যতার সমাপ্তি
খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩১ সালে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের হাতে মেসোপটেমিয়া সভ্যতার সমাপ্তি ঘটে৷ এরপর সেই অঞ্চলে গ্রিক সংস্কৃতির প্রসার ঘটতে শুরু করে৷ হারিয়ে যেতে থাকে মেসোপটেমিয়ার ঐতিহ্য ও জীবনধারা৷ কয়েক হাজার বছর পর আবার সেগুলো খুঁজে পাওয়া যায়৷
প্রতিবেদন: লেয়া আলব্রেশট/জেডএইচ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী