প্রতীক বরাদ্দ
১৭ এপ্রিল ২০১৫সামহয়্যারইন ব্লগে রাজু নূরুল লিখেছেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ প্রসঙ্গে৷
লিখেছেন, ‘‘আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্যের উদাহরণ স্থাপন করা হয়েছে৷ এই বরাদ্দের বিষয়টিতে উঠে এসেছে যে, বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র গঠনগত দিকে থেকেই পুরুষবান্ধব নয়; বরং দৃষ্টিভঙ্গিগত দিক থেকেও পুরুষতান্ত্রিক৷ আসন্ন নির্বাচনে নারীদেরকে এমন প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যার সবই গৃহস্থালি অথবা রান্নার সাথে সম্পর্কিত৷'' অপরদিকে পুরুষ প্রার্থীরা বরাদ্দ পাওয়া সব প্রতীকই বাহ্যিক জগত এবং আপাত শৌর্যের প্রতীক৷ এই নিয়ে নারী প্রার্থীরা তাদের তীব্র ক্ষোভ এবং অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন, কেউ বরাদ্দকৃত প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন৷''
এভাবে নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের কেটলি, গ্লাস, পানপাতা, বৈয়াম, মোড়া, টিস্যু বক্স, মূলা, শিল পাটা, ঝুনঝুনি, দোলনা, প্রেসার কুকার, ভ্যানিটি ব্যাগ, বাঁশি, ফ্রাই প্যান ইত্যাদি প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেয়ার বিষয়টি তুলে ধরে শেষে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রধান দুটি দলের প্রতীকের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে রাজু লিখেছেন, ‘‘নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ইতিহাস উজ্জ্বল৷ আমরা প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতীক দেখলেই বুঝবো সেখানে কীভাবে আমাদের জাতীয় চেতনার, ঐতিহ্যের, আমাদের শ্বাসমূলের স্পর্শ রয়েছে৷ নৌকা, ধানের শীষ অথবা লাঙ্গল, কাস্তে - এর সবই আমাদের জীবনের অঙ্গ, জাতীয় প্রতীক৷ মনে আছে আমাদের এলাকায় একটা সংস্কৃতিই চালু হয়ে গিয়েছিল যে, চেয়ার মার্কার প্রার্থীই চেয়ারম্যান হবেন৷ আমাদের নির্বাচন কমিশন ওখান থেকে যদি কিছু শেখেন! ''
হরতাল-অবরোধের দীর্ঘ সময়টাতে দেড় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন পেট্রোলবোমায়৷ আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন অনেকে৷ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে সেই আন্দোলন স্থগিত রেখেছে বিএনপি ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট৷ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এই নির্বাচনে ভোটারদের প্রতি ‘নীরব বিপ্লব'- করে দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷ ব্লগার সাইদ হাসান খান এমন আহ্বান জানানোর নৈতিক অবস্থান খালেদা জিয়ার আছে কিনা সে বিষয়েই সন্দিহান৷ আমার ব্লগে খালেদা জিয়াকে ‘মাননীয় জামাত-বিএনপি জোট নেত্রী' সম্বোধন করে তাই তিনি লিখেছেন,
‘‘রাতের অন্ধকারে ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে, আদালতের জামিন এবং বাড়ি ফেরা৷ অতঃপর নববর্ষে এসেছেন জনগণের কাছে ভোট চাইতে (তাও আবার নীরব বিপ্লবের মাধ্যমে ?)৷ আপনার বা আপনাদের বিবেক বা লজ্জা বলে কি কিছু আছে? গত তিন মাস পেট্রোল বোমায় প্রায় ১৮০ জন মানুষ হত্যা করেছেন আপনারা৷ আপনাদের তথাকথিত আন্দোলনে কতো সংসার ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে তার খবর কি আপনি রাখার চেষ্টা করেছেন? আপনার হাত মানুষ হত্যার রক্তে রঞ্জিত৷ আপনাদের পেট্রোল বোমায় আহত অনেক মানুষ এখনো যন্ত্রণায় ছটফট করছে৷ আর আপনি বা আপনারা লজ্জার মাথা খেয়ে আমাদের কাছে ভোট চাইছেন? আপনাদের কি জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার কোনো অধিকার আছে? গণতন্ত্রের অধিকার বা ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার দোহাই দিয়ে (আপনাদের ভাষায়) পেট্রোল বোমায় অসহায় জনগণকে পুড়িয়ে, ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে সরকারের অধীনেই আবার সিটি নির্বাচনে অংশ গ্রহণের করছেন৷ এবং অবশ্যই জামাত/রাজাকারদের সাথে নিয়ে৷ আপনার এই মানুষ হত্যার রাজনীতিকে আমরা ঘৃণা করি৷ আপনার উচিত জনগণের কাছে, জাতীর কাছে ক্ষমা চাওয়া৷ নাকে খত দিয়ে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া......''
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন