প্রতিযোগিতা আয়ু কমায় পুরুষদের
১২ আগস্ট ২০১০সাত সমুদ্দুর তের নদী পেরিয়ে প্রেয়সীকে জয় করার গল্প তো সবাই জানে৷ অবশ্য তা বইয়ের পাতায়৷ অনেককে হারিয়ে ইথাকার রাজা ইউলিসিস নিজের করে নিয়েছিলেন পেনেলোপিকে, তেমনি অর্জুন জয় করছিলেন দ্রোপদীকে৷ এই সব কল্পকথার মতো হুবহু না হলেও সে ধরনের ঘটনার হদিস মেলে বাস্তবেও৷ অনেকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সঙ্গীকে জয়৷ বিজয়ের আনন্দ আছে, আছে অনেককে হারানোর গর্বটুকুও৷ তবে এই তার জন্য যে একটু ত্যাগ স্বীকার করতে হচ্ছে, তা জানা ছিল না এতদিন৷ এখন জানা গেল, জীবনসঙ্গী খুঁজতে গিয়ে জীবনীশক্তি হারানোর কথা৷
এই গবেষণাকর্মটি যাঁরা চালালেন, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন ও চীনের ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের৷ সঙ্গে ছিলেন হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক নিকোলাস ক্রিস্টাকিস৷ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে ডেমগ্রাফি সাময়িকীতে৷ নিকোলাস বলেন, ‘‘এটা স্পষ্ট যে সঙ্গী খুঁজতে যদি কষ্ট করতে হয়, তবে তার প্রভাব পড়ে পুরুষদের ওপর৷ অন্তত গবেষণা তাই বলে৷'' এটা শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই নয়, ঘটে অন্য সব প্রাণীর বেলায়ও, বলছেন গবেষকরা৷
এই প্রতিযোগিতা আয়ু যে খুব বেশি কমায়, তা নয়৷ তবে তাও হেলাফেলার নয়- এই যুক্তি তুলে ধরে নিকোলাস বললেন, ‘‘৬৫ বছরের একজন লোক তো চাইবেনই আরো কিছু বছর পৃথিবীর রূপ-রস-গন্ধ নিতে৷ এখন তাঁর সময় যদি তিন মাস কমিয়ে দেওয়া হয়, সেটা কী তিনি মেনে নেবেন ? সুতরাং সময় কম হলেও তার একটা গুরুত্ব তো আছেই৷''
গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন কীভাবে, তা খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল, তাঁরা উইসকনসিন রাজ্যের বেশ কিছু মানুষের কলেজ জীবনের তথ্য সংগ্রহ করেছেন৷ যা কিনা সঙ্গী বেছে নেওয়ার উপযুক্ত সময়৷ তাঁরা পুঙ্খনাপুঙ্খ বিশ্লেষন করে দেখেছেন, যে সব কলেজে ছেলে ও মেয়ের অনুপাত কম ছিল, সে সব কলেজের ছাত্ররা পরে দীর্ঘ আয়ু পেয়েছে৷ অন্য দিকে যেখানে মেয়েদের সংখ্যা ছিল কম, সেই সব কলেজের ছাত্ররা আয়ু পেয়েছে কম৷ মানে হল, মেয়েদের পেছনেই তারা আয়ুর খানিকটা খুইয়ে ফেলেছিল৷
কেন এমনটা হয়েছে, তার কোনো সদুত্তর গবেষকদের কাছে এখনো মেলেনি৷ তবে হচ্ছে তো, সেটাই আসল৷ তাই সাবধান৷ যারা বেশিদিন বাঁচতে চান - এই বাণী তাদের জন্য৷
প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ