নেপালের নির্বাচন
১৯ নভেম্বর ২০১৩নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বটে, কিন্তু সব দলের সম্মতি ছাড়াই৷ অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের আওতায় নয়, সর্বদলীয় এক তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে পরে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে বিরোধী ৩৩টি দলের জোট৷ প্রতিবাদ হিসেবে তারা সারা দেশে পরিবহন বন্ধের যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তাকে কেন্দ্র করে ঘটে চলেছে একের পর এক হিংসাত্মক ঘটনা৷ হরতালে জর্জরিত গোটা দেশ৷
দুই দশক আগে রাজা বীরেন্দ্র বীর বিক্রম শাহর নেতৃত্বে রাজতন্ত্রের শাসনের অবসানের পর নেপালে শান্তি আসেনি৷ মাওবাদী বিদ্রোহীদের সংগ্রামে দেশের বিস্তীর্ণ অংশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে৷ ২০০৬ সালে সরকার ও মাওবাদীদের মধ্যে বোঝাপড়া হয়৷ সব দলের অংশগ্রহণে নতুন প্রতিনিধিসভার সদস্যদের নির্বাচন করে নতুন সংবিধান রচনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়৷ ২০০৮ সালে সেই প্রতিনিধিসভা গঠিত হলেও ঐকমত্যের অভাবের কারণে চার বছর পর তা ভেঙে দেয়া হয়৷ রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে ২০১৩ সালের শুরুতে দেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এক তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যার কাজ ছিল ১৯শে নভেম্বরের নির্বাচনের আয়োজন করা৷
নেপালের প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ মঙ্গলবার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সংসদে ৬০১টি আসনে সদস্যদের স্থির করার সুযোগ পাচ্ছেন৷ নতুন এই সংসদেরও কাজ হবে সংবিধান রচনা করা৷ ১০০টিরও বেশি দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, যাদের মধ্যে দেশের তিনটি প্রধান দলও রয়েছে৷ এরা হলো সংযুক্ত মার্ক্সবাদী ও লেনিনবাদী দল, নেপালি কংগ্রেস এবং মাওবাদীরা৷ কিন্তু অতীতেও বেশ কিছু মৌলিক প্রশ্নকে কেন্দ্র করে এই তিন দলের মতপার্থক্য কাটবে কি না, তা বলা কঠিন৷ বিশেষ করে প্রস্তাবিত ফেডারেল কাঠামো, নতুন রাজ্য গঠন, কেন্দ্র-রাজ্যের ক্ষমতার বণ্টন নিয়ে ঐকমত্যের অভাব রয়েছে৷ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট ও মাওবাদীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রেসিডেন্ট-কেন্দ্রিক ব্যবস্থা চাইছে৷ মার্ক্সবাদী ও লেনিনবাদীরা চাইছে ফ্রান্সের মতো প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী-কেন্দ্রিক কাঠামো৷ আঞ্চলিক দলগুলি শক্তিশালী রাজ্য সরকার দেখতে চায়৷ এই অবস্থায় কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল মাওয়িস্ট-এর নেতৃত্বে বেশ কিছু দল নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে৷