পোর্তুগালে প্রবল বর্ষণে ভূমি ধসে ৪০ জন নিহত
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই দেশটির প্রধানমন্ত্রী খোসে সোক্রাতেস সেখানে সফরে গেছেন৷ ম্যাডেরা দ্বীপটি পোর্তুগালের মূল ভূখন্ড থেকে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এটি মূলত একটি পর্যটন কেন্দ্র৷
প্রবল বর্ষণে বন্যার সৃষ্টি হওয়ায় সেখানকার অনেক অঞ্চল তলিয়ে গেছে৷ এছাড়া ঝোড়ো হাওয়ার কারণে বহু জায়গায় গাছপালা উপড়ে গেছে৷ রাস্তাঘাট ও সেতুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷ অনেক জায়গায় গাছ উপড়ে আটকে গেছে সড়ক৷ কয়েক জায়গায় পানি, বিদ্যুৎ ও ফোনের লাইন কাটা পড়েছে৷
স্থানীয় কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে৷ তবে নিহতদের মধ্যে কোন বিদেশি নেই বলে তারা নিশ্চিত করেছেন৷ এ পর্যন্ত অন্তত ৭০ জনকে প্রাথমিক চিকিত্সা দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ৷
এদিকে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে যে, কয়েকজন ব্রিটিশ পর্যটককে প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে৷ কয়েকজন ব্রিটিশ নাগরিক বলছেন, পুরো অঞ্চলটি এখন একটি ভূতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে৷ তাঁরা বলছেন, অবস্থা যে এত করুন হতে পারে সে ব্যাপারে কোনো পূর্বাভাস ছিলনা৷
গাছ পড়ে সড়কগুলো আটকে যাওয়ায় উদ্ধার কাজে বেশ সমস্যা হচ্ছে৷ এছাড়া কয়েকটি সেতু ভেঙ্গে পড়ায়ও উদ্ধারকাজ ব্যহত হচ্ছে বলে জানা গেছে৷ তবে আশার কথা হলো ম্যাডেরার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি এবং সেখানে ইতিমধ্যে বিমান চলাচল শুরু হয়ে গেছে৷
পোর্তুগালের সেনাবাহিনী সেখানে বিশেষ উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৫৬ জন উদ্ধারকর্মী, ৩৬ জন অগ্নিনির্বাপক কর্মী এবং বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর৷ এছাড়া দেশটির নৌবাহিনীও ইতিমধ্যে হেলিকপ্টার, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ত্রাণসহ সেখানে পৌঁছেছে৷
দেশটির প্রধানমন্ত্রী খোসে সোক্রাতেস ঘটনার পরপরই অঞ্চলটিতে সফর গেছেন৷ সেখানে তিনি বলেছেন, তাঁর সরকার সাহায্যের জন্য যা যা করা দরকার সবই করবে৷ সোক্রাতেস বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকার স্থানীয় সরকারের সাথে মিলে এই দুর্যোগ মোকাবেলা করবে৷
এদিকে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রুই পেরেইরা-ও এখন সেখানে রয়েছেন৷ তিনি বলছেন, তাঁরা এখনো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন৷ প্রয়োজন হলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তা চাওয়া হবে বলে তিনি জানান৷ এছাড়া যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের ময়নাতদন্ত করে শীঘ্রই তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷
সেখানকার স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা নানস্ উপত্যাকার উদ্ধার কাজ নিয়ে উদ্বিগ্ন৷ কারণ পাহাড় ঘেরা ঐ উপত্যাকায় উদ্ধারকর্মীদের পৌঁছানোটাই অনেক দুরূহ হবে৷
প্রতিবেদনঃ জাহিদুল হক
সম্পাদনাঃ সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়