1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুনে তদন্তে জোর দিচ্ছে পুলিশ, ভারত-পাকিস্তান আলোচনা চলবে

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০

পুনের জার্মান বেকারিতে ভয়াবহ বোমা হামলার তদন্তে জোর দিচ্ছে ভারতীয় পুলিশ৷ এদিকে, এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে পুনরায় শান্তি আলোচনা শুরুর পরিকল্পনা বাতিল করতে বিজেপির দাবি নাকচ করে দিয়েছে কংগ্রেস৷

https://p.dw.com/p/M1um
বোমা বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত জার্মান বেকারিছবি: AP

শনিবার রাতে জার্মান বেকারি রেস্তোরাঁ যখন খদ্দেরদের ভিড়ে ঠাসাঠাসি, তখন এক ওয়েটার টেবিলের তলায় পড়ে থাকা একটি ব্যগ খুলে দেখতে গেলে ওই বিস্ফোরণ ঘটে৷ এই হামলায় দুই বিদেশি নাগরিকসহ মোট ৯জন নিহত এবং ৬০ জন আহত হয়৷ এই হামলা নিজেদের শহরের নিরাপত্তার বিষয়ে পুনের বাসিন্দাদের বিশ্বাসের ভিত নড়িয়ে দিয়েছে৷

নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে পুনের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ডোন্না ডি' সুজা বলছিলেন, ‘‘আমরা সবসময়ই ভেবেছি এটা একটা শান্তিপূর্ণ কসমোপলিটান নগরী, যা এখানে আগত সব মানুষদেরই গ্রহণ করে নেয়৷ ওশো কমিউনের উদাহরণ দিয়েই বলা যায়, সেখানে সবসময়ই নানা দেশের কত রকমের মানুষ ভিড় করছে৷ কিন্তু কখনোই এ ধরণের কিছু ঘটেনি৷ এটা সত্যিই মারাত্মক বেদনাদায়ক৷ আর আমরাও প্রায়ই সেখানে যেতাম, তারমানে আমাদের যে কেউই সেখানে থাকতে পারতো৷''

স্থানীয় ব্যবসায়ী ধনেশ্বর খারোসি ১৯৮৮ সালে তাঁর জার্মান সহযোগী উডি-কে নিয়ে এই জার্মান বেকারি চালু করেছিলেন৷ ওশো আশ্রমের টানেই পুনেতে এসেছিলেন উডি৷ ধনেশ্বর খারোসির মেয়ে স্নেহাল বলছিলেন, আন্তর্জাতিক খদ্দেরদের আকৃষ্ট করে এমন একটা বেকারি চালু করার কথা উডির মাথাতেই প্রথম এসেছিল৷

স্নেহাল খারোসি বলেন, ‘‘বিদেশিরা পুনেতে বিশেষত নিজেদের ধরণের খাবার দাবার নিয়ে সমস্যায় পড়তেন৷ ওশো আশ্রমটি আমাদের খুব কাছে থাকার কারণেই তাদের মাথায় জার্মান বেকারি শুরু করার চিন্তা আসে৷ প্রধানত বিদেশিদের জন্যই ওই নামেই তাঁরা এটা শুরু করেন৷ পরে এমনকী ভারতীয়রাও এখানকার পেস্ট্রি, কেক এবং জুসের ভক্ত হয়ে পড়ে৷''

Explosion in Pune, Indien
কসমোপলিটান শহর পুনের দেশি-বিদেশি খদ্দেরদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয় ছিল জার্মান বেকারিছবি: AP

১৯৯৯ সালে ধনেশ্বরের মৃত্যৃর পর থেকে মেয়ে স্নেহালকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর স্ত্রী স্মিতা এ ব্যবসা সামলাচ্ছিলেন৷ এই বোমা হামলায় পারিবারের আয়ের একমাত্র উৎসটি হারানোর ধকল কাটিয়ে উঠতে পারবেন কি না জানেন না স্মিতা৷

জার্মান বেকারির এই ধ্বংসযজ্ঞে ভীষণ মর্মাহত এখানে বসবাসরত বিদেশিরা৷ তাঁদেরই একজন পুনের ভারতীয়-ফরাসী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক লুক দিদো৷ দিদো বলছিলেন, ‘‘এটা সবসময়ই ভিন্ন জাতিসত্ত্বার মানুষে ভরপুর থাকতো এবং এটা ছিল বৈচিত্র্যের প্রতীক৷ ভাষা, সংস্কৃতি, চিন্তা এবং বিশ্বাসের বৈচিত্র৷ এতে শুধু প্রাণহানি হয়েছে তা নয় বরং বন্ধুত্বের প্রতীককেও এটা ধ্বংস করেছে৷''

মুম্বাই হামলার পর এটাই ভারতে এ ধরণের সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা৷ মু্ম্বাইয়ের মতো এখানেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বিদেশিদের৷ গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা স্বীকার না করলেও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরাম স্বীকার করেছেন, পার্শ্ববর্তী ইহুদি কেন্দ্র এবং ওশো আশ্রমের মতো অতো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি জার্মান বেকারির নিরাপত্তা নিয়ে৷

ভারত এ ঘটনায় পাকিস্তানি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি একেবারে নাকচ করে দেয়নি৷ তবে, ক্ষমতাসীন কংগ্রেস দল এ ঘটনায় পাকিস্তানের সঙ্গে পরিকল্পিত শান্তি আলোচনা পণ্ড করে দিতে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি'র দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে৷

প্রতিবেদক :পিয়া চন্দভারকর/ভাষান্তর : মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক