পাকিস্তানে সরকার বাঁচানোর প্রচেষ্টা গিলানির
৩ জানুয়ারি ২০১১সহজ কথা হচ্ছে, গিলানি সরকার তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে৷ এবং তত্ত্বগতভাবে বিরোধীরা এখন একটি অনাস্থা প্রস্তাব এনে সেই সরকারের পতন ঘটাতে পারে৷ কিন্তু সেই উদ্যোগ নিতে হবে সংসদে বৃহত্তম বিরোধীদল পিএমএল-এন, অর্থাৎ পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ'কে৷ গিলানি আজ সোমবারেই পিএমএল-এন'এর প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শেরিফের সঙ্গে দেখা করেছেন৷ তবে শাহবাজ একদিকে যেমন গিলানি'কে কোনো আশ্বাস দেননি, অন্যদিকে বিশেষ কোনোরকম ভয়ও দেখাননি৷ গিলানি সংসদের অপর মুখ্য বিরোধীদল পিএমএল-কিউ, অর্থাৎ পিএমএল'এর অপর অংশ, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়দি আজম'এর নেতা চৌধরি শুজাত হুসেনের সঙ্গেও কথা বলেছেন৷
লাভালাভ
তাহলে প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে: এ'সব আলাপ-আলোচনায় গিলানি'র কি লাভ হচ্ছে? ঐ যেমন হুসেন নাকি গিলানির সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বদলের কথা উল্লেখ করেননি৷ হুসেন এ'ও বলেননি যে, তাঁর দল সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রচেষ্টা করবে৷ বরং বলেছেন যে, তাঁর দল সরকারকে ‘ব্ল্যাকমেল' করার, অর্থাৎ সুযোগসুবিধা আদায় করার চেষ্টা করবে না৷ - আসল পটভূমি সম্ভবত এই: গিলানির পাকিস্তানি রাজনীতিতে বিশেষ শত্রু নেই৷ এবং সামরিক মহলের সঙ্গেও তাঁর ভালো সম্পর্ক আছে৷ কাজেই ওয়াকিবহালরা যেমন বলছেন, প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জরদারি স্বয়ং গিলানিকে বিদায় করার চেষ্টা করছেন - সে প্রচেষ্টা আপাতত সফল হবে না বলেই মনে হচ্ছে৷
এমকিউএম
আর যাদের থেকে এই গোটা সঙ্কটের শুরু, সেই এমকিউএম, তারা কোনদিকে যাবে, সেটাও আপাতত স্পষ্ট নয়৷ সিন্ধ প্রদেশে তারা তো জোটেই থাকছে৷ ওদিকে করাচি থেকেই তাদের এক নেতা, ফয়জাল সবজাওয়ারি, রয়টার্স'কে বলেছেন যে, তাঁর দল সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি৷ অবশ্য এই সবজাওয়ারি'ই গত সপ্তাহে ডয়চে ভেলে'র একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, এমকিউএম সরকার ত্যাগ করলেও, বিরোধীদের আসনে যোগ দেবে না৷
নওয়াজের মনমেজাজ
তৃতীয় প্রশ্ন: পিএমএল-এন নেতা নওয়াজ শরিফ তো জারদারি-গিলানির পরম বৈরী৷ তিনি এই সুবর্ণ সুযোগটা নিচ্ছেন না কেন? নওয়াজ শরিফ নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক, কিন্তু তাঁর অন্যান্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নেই৷ কাজেই ভবিষ্যতে পিএমএল-এন'এর নেতৃত্বে একটি নতুন জোট সরকার গড়ে ওঠার সম্ভাবনা কম৷ ওদিকে পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের পতন ঘটিয়ে আরো বেশি অরাজকতার দায় নিজের ঘাড়ে নিতে চান'না শরিফ - অথবা অন্য কেউ৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ