1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তানে বিমান দুর্ঘটনায় আরোহীদের কেউ জীবিত নেই

২৮ জুলাই ২০১০

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের কাছে বুধবার সকালে যাত্রীবাহী একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে দেড় শতাধিক আরোহীর সবাই নিহত হয়েছে৷ বিমানটি করাচি থেকে ইসলামাবাদ যাচ্ছিলো৷ নামার কিছু সময় আগে একটি পাহাড়ি এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়৷

https://p.dw.com/p/OWj8
দুঃসংবাদে মুহ্যমান প্রিয়জনরাছবি: picture alliance / dpa

বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ দুর্ঘটনায় হতাহতের এই ঘটনায় একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান সরকার৷

‘এয়ার ব্লু' নামে বেসরকারি বিমান সংস্থার উড়োজাহাজটি বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে করাচি থেকে রওনা হয়৷ গন্তব্যস্থল ইসলামাবাদ দুই ঘণ্টার পথ৷ এটি করাচি এসেছিলো তুরস্ক থেকে৷ ইসলামাবাদ পৌঁছানোর কিছু সময় আগে পৌনে ১০টার দিকে কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়৷ কর্মকর্তারা বলছেন, তারপরই আসে বিধ্বস্ত হওয়ার খবর৷

Airblue Company
‘এয়ার ব্লু’ সংস্থার প্রধান শাহিদ খাকান আব্বাসি (ফাইল চিত্র)ছবি: picture alliance / dpa

ইসলামাবাদের বেনজির ভুট্টো বিমানবন্দর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তরে মারগালা পাহাড়ে এটি বিধ্বস্ত হয়৷ শাহবাজ আহমেদ নামে প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, ‘‘হঠাৎ দেখলাম, বিমানটি দ্রুত নিচে নেমে আসছে৷ এক পর্যায়ে এটি পাহাড়ি জঙ্গলে ঢুকে পড়লো৷ তারপরই বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দ শুনি৷'' বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই বিমানটিতে আগুন ধরে যায়৷ আর বৃষ্টি হচ্ছিলো, তাই উদ্ধার কার্যক্রম চালাতেও বেশ বেগ পেতে হয়৷

১০ বছর পুরনো ওই এয়ারবাসটিতে মোট আরোহী ছিলেন ১৫২ জন৷ এদের মধ্যে ১৪৬ জন যাত্রী৷ অন্যরা ক্রু৷ এটা বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের হিসাব৷ তবে পুলিশের দাবি, এই সংখ্যা ১৪৯৷ পাকিস্তানের বেসরকারী টেলিভিশন সংস্থা ‘জিও টিভি'র খবরে বলা হয়েছে, যাত্রীদের মধ্যে পাঁচটি শিশুও ছিলো৷ ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুজন নাগরিকও ছিলেন ওই বিমানে৷ দুর্ঘটনার পরপরই শুরু হয় উদ্ধার কার্যক্রম৷ প্রথমে কর্মকর্তারা কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধারের দাবি করলেও দুপুরে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক বলেন, ‘‘না, কেউ বেঁচে নেই৷ আরোহীদের সবাই মারা গেছেন৷'' ইসলামাবাদের উপপুলিশ প্রধান বনি আমিন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘সব মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ তবে ঠিক কতজনের লাশ পাওয়া গেছে, তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না৷ কারণ দেহগুলো ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে৷ অনেকের দেহ পুড়ে গেছে৷'' উপপুলিশপ্রধান জানান, বৃষ্টির কারণে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে বেশ বেগ পেতে হয়৷

Pakistan Flugzeug Absturz Air Blue
উদ্ধারকার্যে হাত লাগান সৈন্যরাওছবি: AP

দুর্ঘটনার কারণ কী – জানতে চাওয়া হলে আমিন বলেন, এই বিষয়টির দিকে আমরা আপাতত নজর দিচ্ছি না৷ মূল মনোযোগ এখন উদ্ধার তৎপরতার দিকে৷ তবে কর্মকর্তারা বলছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে৷ দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটির চালক পারভেজ ইকবাল চৌধুরী সুদক্ষ ছিলেন বলেই দাবি করেছেন তাঁর সহকর্মীরা৷ পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের পাইলট রাজা গারদেজি বলেন, ‘‘ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে অবতরণ এমনিতেই কঠিন৷ কারণ এর কাছেই পাহাড়৷ আর আবহাওয়া প্রতিকূল হলে তা আরো কঠিন হয়ে যায়৷'' এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি দুর্ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন গিলানি৷ বৈঠকে বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করা হয় এবং বুধবার শোক পালনের সিদ্ধান্ত হয়৷


প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন