পাকিস্তানে ত্রাণ পাচ্ছে না বন্যাদুর্গতরা
২১ আগস্ট ২০১০পাকিস্তানে টানা তিন সপ্তাহ ধরে চলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কমপক্ষে ২ কোটি মানুষ৷ এদের মধ্যে ৮০ লাখ মানুষ এই মুহূর্তে খাদ্য ও পানীয় জলের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন৷ গৃহহীন প্রায় ৪৬ লাখ মানুষ৷ দুর্গতদের পর্যাপ্ত সহায়তা দেয়া এখনো সম্ভব হয়নি৷ বরং কোন কোন এলাকার পরিস্থিতি খুবই সঙ্কটজনক৷
দুর্গতদের আকুতি
বন্যা কবলিত গুলশান-ই-মেমার এলাকার বাসিন্দা বাচেল জালিম এর কথায়, বন্যায় আমার সন্তান মারা গেছে৷ পরিবারের আরো চার সদস্য খুবই অসুস্থ৷ তারা ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত এবং বমি করছে৷ আমি সব হারিয়েছি৷ অথচ সরকার আমাদের জন্য কিছুই করছে না৷ স্বাস্থ্যকর্মীরা সাময়িক ত্রাণ সরবরাহ করলেও ঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা দেয় না৷
অপর এক বন্যা দুর্গত মহিলার কথায়, সবকিছু চলে গেছে৷ আমাদের কিছুই নেই৷ এমনকি পরার জন্য এক টুকরা কাপড়ও নেই৷ খাদ্য নেই, কিছুই নেই৷
৭০ শতাংশ অর্থ সহায়তা
শনিবার সকাল পর্যন্ত যে খবর, তাতে জাতিসংঘের বেঁধে দেয়া ৪৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সত্তর শতাংশ ইতিমধ্যেই পাওয়া গেছে৷ বাকি টাকাও পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ তবে এই বন্যায় ঠিক কতজন মারা গেছে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ৷ আনুষ্ঠানিক হিসেবে মৃতের সংখ্যা দেড় হাজার বলা হলেও সংস্থাটির দাবি, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা এখনো অজ্ঞাত৷ জাতিসংঘের ইসলামাবাদের দূত আব্দুল্লাহ হোসেইন হারুন জানিয়েছেন, আমরা এখনো জানিনা কত লোক মারা গেছে৷ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও জানা যাচ্ছেনা৷ কেননা এখনো অনেক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানো সম্ভব হয়নি৷
ত্রাণ সরবরাহে ন্যাটো
এদিকে, ন্যাটো বন্যা কবলিতদের জন্য ত্রাণ সরবরাহে পরিবহণ সেবা দেবার ঘোষণা দিয়েছে৷ রবিবার একটি ত্রাণবাহী ন্যাটো বিমান জার্মানি থেকে পাকিস্তানে যাবার কথা রয়েছে৷
পাকিস্তান সরকার বন্যাদুর্গতদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক বিশ্বের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তার জন্য সেনা নিয়োগও করা হয়েছে৷ অবশ্য তারপরও বন্যা কবলিতরা সরকারের সেবায় মোটেই সন্তুষ্ট নয়৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়