1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পাকিস্তানে আবারও বোমা হামলা, নিহত আট

৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০

বুধবার পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের লোয়ার দির জেলায় একটি স্কুলের কাছে বোমা হামলায় তিনজন মার্কিন সৈন্য সহ কমপক্ষে আট জন নিহত হয়েছে৷ নিহতদের মধ্যে এক পাকিস্তানি সৈন্য ও ১০ থেকে ১৫ বছরের তিন কিশোরও রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/LrSN

লোয়ার দির জেলার স্থানীয় পুলিশ প্রধান মুমতাজ জারিন জানিয়েছেন যে, ঐ বোমা হামলায় আহতদের মধ্যে চারজন বিদেশি ত্রাণকর্মীও ছিলেন৷ শুধু তাই নয়, তাঁরা আল-কায়েদা এবং তালেবান বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের আধা-সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণের কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং বিস্ফোরণের সময় মেয়েদের ঐ স্কুলটি উদ্বোধন করতে কয়েকজন পাকিস্তানি সাংবাদিকের সঙ্গে গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন৷

এছাড়া, এ ঘটনায় কমপক্ষে আরো ৭০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সে অঞ্চলের পুলিশ কর্মকর্তা নায়েকুল্লাহ খান৷ তাঁর কথায়, ‘বিস্ফোরণে স্কুলের ছাদ ধসে যায় এবং মানুষজন আটকা পড়ে৷' খান জানান, রিমোট কন্ট্রোলে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়৷ এর পেছনে তালেবান জঙ্গিদের হাত রয়েছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার জন্য তালেবান জঙ্গিরা প্রায়ই স্কুল, বাজার, সেনাবাহিনী ও পুলিশ স্থাপনার ওপর হামলা করে থাকে৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো : কেন সরকারি স্কুলগুলোই হয়ে উঠছে তালেবান জঙ্গিদের লক্ষ্যবস্তু ? এ বিষয়ে পেশোয়ারবাসী সাংবাদিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ রহিমুল্লাহ ইউসুফজাই বলেন, ‘‘আসলে তারা যে কোনো সরকারি ভবনকেই তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে প্রস্তুত৷ আর স্কুল তো সর্বত্রই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, বিশেষ করে সোয়াত এবং দির অঞ্চলে৷ তাই সেগুলিকে খুব সহজেই কাজে লাগাচ্ছে তারা৷ আর কারণ হিসেবে বলছে, যেহেতু পাকিস্তানী বাহিনী এবং সরকার তাদের মাদ্রাসা ধ্বংস করেছে - তারাও এ কাজ করতে পারে৷ স্বাভাবিকভাবেই তারা ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা আলাদা স্কুলের পক্ষপাতী৷ তারা মূলত চাইছে যে মেয়েরা পর্দা করুক৷''

এদিকে, বুধবারের বোমা হামলার তীব্র নিন্দা করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রজা গিলানি অবিলম্বে এ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ তাই লোয়ার দির জেলার মূল শহর তাইমারগারায় আরো সেনা মোতায়ন করেছে পাকিস্তান৷ আর আহতদের ইতিমধ্যেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দির হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন চিকিৎসক ওয়াকিল মোহাম্মদ৷

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মেয়েদের শিক্ষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব৷ কিন্তু, তালেবান জঙ্গিরা বরাবরই ছেলে-মেয়েদের একসঙ্গে পড়াশুনো করার জন্য তৈরি স্কুলগুলোতে হামলা চালিয়ে এসেছে৷ লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাকিস্তান বিশেষজ্ঞ মারকুস ড্যাখসেল জানান, ‘‘পাকিস্তান সরকারের পক্ষেই একমাত্র এ অবস্থার একটি সত্য-চিত্র তুলে ধরা সম্ভব৷ তারাই একমাত্র ঠিক করতে পারে যে, পাকিস্তানের অবস্থা কতটা কঠিন এবং তাদের পশ্চিমা শক্তির সাহায্যের আদৌ কোনো প্রয়োজন আছে কি না৷''

ইসলামাবাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস অবশ্য উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে এবং বুধবারের এ হামলা সম্পর্কে এখনও কোন মন্তব্য করেনি৷

প্রতিবেদক : দেবারতি গুহ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক