1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির ভুয়ো বন্দি

১৩ এপ্রিল ২০১৪

১৯৬৩ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত পশ্চিম জার্মানি পূর্ব জার্মানির কাছ থেকে প্রায় ৩০০ কোটি ডয়েচমার্ক মূল্যে ৩৩ হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ‘কিনেছিল’৷ কিন্তু সেই বন্দিদের নাকি অনেকেই ছিল ভুয়ো৷

https://p.dw.com/p/1Bgqw
একটি বন্দিখানাছবি: AP

‘‘মানুষ পাচার, নাকি মানবিক পদক্ষেপ? পূর্ব জার্মানি থেকে রাজনৈতিক বন্দিদের পণে মুক্তি, ১৯৬২-৬৩ থেকে ১৯৮৯'' বইটির লেখক হলেন ফিলিপ ভোয়েলব্যার্ন৷ ডিডিআর বা জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, অর্থাৎ পূর্ব জার্মানি তখন নগদের বদলে পণ্যে মুক্তিপণ পেলেও খুশি: যেমন খাদ্য কিংবা খনিজ তেল৷

ভোয়েলব্যার্নের বক্তব্য হলো, মুক্তিপণ দেওয়ার একটা মানবিক প্রভাব পড়বে বলে পশ্চিমের যে প্রত্যাশা ছিল, সে প্রত্যাশা পূর্ণ হয়নি৷ বরং ঐ মুক্তিপণের লোভে ‘স্টাজি' নামধারী পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা পুলিশ আরো বেশি নাগরিককে জেলে পোরার প্রেরণা পেয়েছে৷ ওদিকে পশ্চিম জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে পূবের রাজনৈতিক বন্দিদের নামের তালিকা ছিল বটে, কিন্তু তাঁদের কারাবাসের আর কোনো খুঁটিনাটি ছিল না৷ কাজেই পশ্চিম জার্মান সরকার মাঝেমধ্যে এমন সব বন্দিদের মুক্তির জন্য মুক্তিপণ দিয়েছেন, যাঁরা তার অনেক আগেই বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন!

বস্তুত পশ্চিম জার্মানির তৎকালীন সামাজিক গণতন্ত্রী চ্যান্সেলর ভিলি ব্রান্ডের নতুন ‘অস্ট-পলিটিক'-এর টানেই নাকি ৭০-এর দশকে জার্মান সরকার হাতে কোনো বিশদ তথ্য না থাকা সত্ত্বেও নির্দ্বিধায় মুক্তিপণ দিয়েছেন৷ অন্যদিকে সাবেক পূর্ব জার্মানির মুক্তিপ্রাপ্ত রাজনৈতিক বন্দিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভোয়েলব্যার্ন জেনেছেন যে, তাঁদের অনেকেই আজও জানেন না কেন এবং কোন শর্তে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়৷ যে কারণে তাঁরা পূর্ব জার্মানি ছেড়ে পশ্চিমে যাওয়ার সুযোগটারও সদ্ব্যবহার করতে পারেননি৷ এভাবে ৬০-এর দশক থেকে ১৯৭২ সাল অবধি পূর্ব জার্মানির যে সব বন্দি পশ্চিম জার্মানি মুক্তিপণ দেওয়ার ফলে মুক্তি পেয়েছেন, তাঁদের ৪০ শতাংশ পূর্ব জার্মানিতেই থেকে গেছেন৷

শেষ যুক্তি: মুক্তিপণের অর্থ অন্তত পূর্ব জার্মানির মানুষদের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়েছে...৷ কিন্তু সে ধারণাটাও ভুল৷ পশ্চিম জার্মানি যে মুক্তিপণ দিয়েছে, তার ৭৭ শতাংশ বিদেশি মুদ্রায় পরিণত করে বিভিন্ন পশ্চিম জার্মান ব্যাংকের কাছে ডিডিআর-এর ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে৷

তবে ভাগ্যের – অথবা রাজনীতি-কূটনীতির – রসিকতা এখানেই শেষ নয়: পূর্ব জার্মানির বাসিন্দারা পশ্চিমে যাবার জন্য সরকারি অনুমতির আবেদন করতে পারতেন৷ কিন্তু সে আবেদন শুধু নাকচ হওয়া নয়, আবেদন করার অপরাধে জেলেও যেতে হতে পারত৷ ৭০-এর দশকের শেষ থেকে এই ধরনের ধরপাকড় শুরু হয়৷ ১৯৮৪ সালে তা দেড় হাজারে গিয়ে পৌঁছায়৷ একমাত্র তখনই পশ্চিম জার্মানির সরকারের মনে সন্দেহ জাগে, পূর্ব জার্মানি হয়ত শুধু টাকাটা হাত করার ফন্দিতে এই ‘বন্দিদের' অবতারণা করেছে৷

ঠান্ডা লড়াইয়ের দিনের সেই ‘স্পাই ভার্সেস স্পাই' কমিকগুলোর কথা মনে পড়ে যায় কি?

এসি/ডিজি (রয়টার্স, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য