পশ্চিমবঙ্গে সমাদৃত নজরুল
কবি নজরুল ভারতের আত্মা৷ এ দেশে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের যে গৌরবোজ্জ্বল সহাবস্থানের ঐতিহ্য, তার প্রেরণা বিদ্রোহী কবির জীবন ও সৃষ্টি৷ জন্মবার্ষিকীতে কবিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছে পশ্চিমবঙ্গ৷
‘বর্তমানের কবি আমি ভাই’
কবি, গীতিকার এবং সাহিত্যিকরূপে চুরুলিয়ার দুখুমিঞা, ওরফে কাজী নজরুল ইসলাম বন্দিত৷ বাংলাদেশের জাতীয় কবি হলেও তাঁর জন্ম ও কর্ম এপার বাংলায়৷
আসরের মধ্যমণি
কখনও লেটোর দলে গান গেয়ে, কখনওবা মুখে মুখে কবিতা লিখে তাক লাগিয়ে দিতেন তিনি৷ ১৩-১৪ বছর বয়সে উর্দু গজল গেয়ে কবিগানের আসর মাত করেছিলেন৷
গানে গানে
কাজী নজরুল রচিত গানের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি৷ প্রতিরোধ, সাম্যবাদ থেকে প্রেম — সব রকম গানেই সাবলীল তাঁর নিজস্ব সংগীত রীতি৷ জন্মদিনে কবিকে তাঁর সুরের অর্ঘ্যেই সার্থক প্রণতি৷
একই বৃন্তে দুটি কুসুম
হিন্দু ও মুসলিম মৌলবাদের বিরুদ্ধে আজও বাঙালির সেরা হাতিয়ার তিনি৷ তাই স্কুল-কলেজের পাশাপাশি নজরুলকে গানে-কবিতায় শ্রদ্ধা জানাতে বিপুল আয়োজন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে৷
চলার পথে নজরুল
রবীন্দ্রনাথের পাশে তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি৷ তাই কবিগুরুর সঙ্গে বিদ্রোহী কবির সমাদর এপার বাংলায়৷ ভারতের প্রাচীন মেট্রো রেল স্টেশনের নামকরণে সেই দুখুমিঞা৷
পথের সাথি কবি
কলকাতা কবি নজরুলের শ্রেষ্ঠ কীর্তির সাক্ষী৷ শহরের নানা প্রান্তে তাঁর স্মরণচিহ্ন৷ কলকাতা বিমানবন্দরগামী গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কবির নামে৷
নজরুল মেলা
বর্ধমানের চুরুলিয়ায় কবির জন্মভিটায় প্রতি বছর এ সময় বসে নজরুল মেলা৷ তারই অনুকরণে নজরুল জয়ন্তীতে কলকাতা শহরেও বসেছে মেলা৷
জনগণের কবি
কবিতা বা গানের পাশাপাশি নিজের উদার জীবনচর্চায় বাঙালি জীবনের উজ্জ্বল আইকন তিনি৷ আজও জনপ্রিয় তাঁর গান৷ রবীন্দ্রসদন মুক্তমঞ্চে মগ্ন শ্রোতারা৷
ছোটদের নজরুল
ছেলেবেলায় বাবুদের তালপুকুর বা কাঠবেড়ালির পেয়ারা খাওয়ার ‘কিসসা’ কে না পড়েছে! তাঁর জীবন ছবির মাধ্যমে তুলে ধরেছে পশ্চিমবঙ্গ শিশু কিশোর আকাদেমি৷ মেলায় বিকোচ্ছে সেই বই৷
কবি প্রণাম
স্বনামধন্য নজরুলগীতি শিল্পী প্রয়াত মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় অগ্রণী সুরসাধক৷ গায়ক-তনয়া মানসী মুখোপাধ্যায়ও দুই বাংলায় অনেকের প্রিয় শিল্পী৷ কবির জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপনে রবীন্দ্র সদনে মানসী৷
গানে গানে মম প্রণতি
স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হিসেবেই পরিচিত৷ দেবব্রত বিশ্বাসের মতো তিনিও গীতিকবির সুর গলায় নিয়েছেন৷ রবীন্দ্রসদনে নজরুলে মুখরিত সন্ধ্যায় স্বাগতালক্ষ্মীও উপস্থিত৷
কবির সেলফি
পাঠ্যপুস্তকে ‘ছাত্রদলের গান’ বা ‘কান্ডারী হুঁশিয়ার’ দিয়ে পরিচয় শুরু৷ যুবা বয়স ভরে ওঠে তাঁর প্রেমের গানে৷ একান্ত মুহূর্তে নজরুল ধরা পড়েন যুগলের নিজস্বীতে৷
প্রথম পূর্ণাবয়ব
রাজ্যজুড়ে কবির আবক্ষ মূর্তি রয়েছে অনেক৷ কিন্তু, পূর্ণাবয়ব মূর্তি ছিল না৷ দমদম রোডে, হনুমান মন্দিরের কাছে ১১ জ্যৈষ্ঠ বসেছে এই মূর্তিটি৷
ফুলের জলসায় নীরব
তিনি বলেছেন, ‘‘দুঃখ সয়েছি, আঘাতকে হাসিমুখে বরণ করেছি, কিন্তু আত্মার অবমাননা করিনি৷ নিজের স্বাধীনতাকে কখনো বিসর্জন দিইনি৷’’ তাঁর এই মন্ত্রবলে বাঙালি জেগে, নতুন যুগের ভোরে৷