পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসা ব্যবস্থা
ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী জনতাকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ভার কেন্দ্রের নয়, রাজ্য সরকারের৷ পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চিকিৎসার সমান্তরালে বিকল্প ব্যয়বহুল পরিষেবা থাকলেও, সিংহভাগ মানুষ সরকারি পরিষেবার ওপরই নির্ভরশীল৷
মাত্র দু’টাকায় চিকিৎসা
দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষরা চিকিৎসার জন্য মূলত সরকারি হাসপাতালের ওপরই নির্ভরশীল৷ হাসপাতালের বহির্বিভাগে মাত্র দু’টাকার বিনিময়ে চিকিৎসার পাশাপাশি কম খরচে পেসমেকার স্থাপন, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, আল্ট্রাসাউন্ড বা ইসিজির মতো পরিষেবাও পাওয়া যায়৷
চেতনা বাড়াতে টিভি
প্রসূতির দেখাশোনা বা নবজাতকের প্রতিপালনের নিয়ম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হাসপাতালের সরকারি হাসপাতালের ন্যাটাল ওয়ার্ডে এখন হাজির টিভি৷ তাতে মেগা সিরিয়ালের বদলে সচেতনামূলক অনুষ্ঠান দেখানো হয়!
সর্বক্ষণের চিকিৎসক
রাতবিরেতে অসুখ-বিসুখে সরকারি হাসপাতালই ভরসা৷ এখানে আপৎকালীন পরিষেবা ছাড়াও ২৪x৭ চিকিৎসক পাওয়া যায়৷ সারা পশ্চিমবঙ্গেই বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় এই ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতাল অনেকটা এগিয়ে৷
উন্নতমানের পরিষেবা
সম্প্রতি সরকারি হাসপাতালে সংকটাপন্ন রোগী ও শিশুদের বিশেষ পরিচর্যার জন্য এসএনসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ চালু করা হয়েছে, যা এতদিন ছিল কেবল বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমেই৷ উপকৃত হয়েছে দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার৷
ন্যায্য মূল্যে ওষুধ
ব্র্যান্ডের থাবা থেকে ওষুধ মুক্তি পেতেই মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে৷ চিকিৎসক জেনেরিক নামে ওষুধ লেখার ফলে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে মানুষের যাতায়াত বেড়েছে৷ এ সব দোকানে ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় মেলে৷
নাগালে আধুনিক পরিষেবা
সরকারি হাসপাতালে ডিজিটাল এক্স-রে, ইউএসজি, সিটি স্ক্যানের মতো আধুনিক পরিষেবা পাওয়া যায়৷ তবে রোগীর চাপে অনেক সময়েই এসব যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন বিকল হয়ে পড়ে থাকে৷
নানারকম প্রকল্প
পশ্চিমবঙ্গে সরকারি স্তরে স্বাস্থ্য পরিষেবায় নানা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে৷ জননী শিশু সুরক্ষার মতো প্রকল্প এখন বেশ জনপ্রিয়৷ এর সাহায্যে মায়ের প্রসবকালীন মৃত্যুর হারও কমিয়ে ফেলা গেছে৷
সরকারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণ
বেশিরভাগ সময়েই তিল ধারণের জায়গা থাকে না৷ তবুও পরিষেবার খোঁজে দৈনিক কত না মানুষের জমায়েত হয় সরকারি হাসপাতালে! তৃতীয় বিশ্বের জনবহুল দেশে এটাই দস্তুর৷
অতিথি দেবঃ ভব
সরকারি হাসপাতাল আগের থেকে পরিচ্ছন্ন হয়েছে, সুলভে মিলছে পরিষেবা: কিন্তু কিছু ছবি এখনও বদলায়নি: যেমন বিভিন্ন ওয়ার্ডে চারপেয়েদের অবাধ বিচরণ৷
স্বাস্থ্য যখন পণ্য
যাঁদের হাতে টাকা রয়েছে, তাঁরা সরকারি হাসপাতালে ভিড় এড়াতে বেসরকারি পরিষেবার সুযোগ নেন৷ যদিও কলকাতার এমন বেসরকারি ক্লিনিকেও এখন ভালো ভিড় নজরে পড়ে৷
যেখানে বিশ্বাস
অ্যালোপ্যাথির পাশাপাশি এ রাজ্যে হৈ হৈ করে হোমিওপ্যাথি বা আয়ুর্বেদ চিকিৎসাও চলছে৷ এর খরচ কম, তাছাড়া ব্যয়সাপেক্ষ পরীক্ষার ঝামেলা থাকে না বলে অনেকেই এ সবের উপর আস্থা রাখেন৷
নার্সিংহোম দিকে দিকে
এখন পশ্চিমবঙ্গে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু হয়েছে৷ তবুও নার্সিংহোমের রমরমা কিন্তু কমেনি৷ সার্জারি, ডায়ালিসিস ইত্যাদির জন্য মানুষ এখনও এদের ওপর নির্ভরশীল৷
বহুরূপে সম্মুখে
কলকাতা সহ সর্বত্রই রক্তসহ নানা পরীক্ষাগার বা প্যাথোলজি ল্যাব গজিয়ে উঠেছে৷ গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও দিব্যি তারা লাভজনক ব্যবসা করছে৷ উল্টোদিকে গ্রামীণ এলাকায় অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনো ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান নেই৷