পর্যটকদের জন্যে আবারও খুলে দেয়া হয়েছে পেরুর মাচু পিচু
২ এপ্রিল ২০১০জানুয়ারির শেষের দিকে প্রবল বৃষ্টি এবং ভূমিধস ল্যাটিন অ্যামেরিকার সর্বাধিক পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত মাচু পিচুর রেল যোগাযোগ ধ্বংস করে দেয়৷ মাচু পিচু পঞ্চদশ শতাব্দীর ইনকা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ধ্বংসাবশেষ৷
দক্ষিণ অ্যামেরিকার আদিবাসী মানুষদের ভাষা কেচুয়ায় মাচু পিচুর অর্থ হল প্রাচীন পর্বতচূড়া৷ ইনকাদের প্রবল প্রতাপশালী রাজা ইউপানকি ২৩৬০ মিটার উচ্চতায় মাচু পিচুর ওপর তৈরি করান এক পূর্ণাঙ্গ শহর৷ তারই ধ্বংসাবশেষ দেখতে ছুটে যান সেখানে দূর দূরান্তের মানুষ৷ প্রতিদিন সারা দুনিয়ার দুই হাজারেরও বেশি পর্যটক মাচু পিচু দেখতে যান৷ প্রায় তিন হাজার সিঁড়ি ভেঙে তাঁরা ওপরে ওঠেন৷ আঞ্চলিক রাজধানী শহর কুসকো থেকে মনোরম পাহাড়ি এলাকার মাঝ দিয়ে চলে গেছে রেল লাইন মাচু পিচু পর্যন্ত৷
সারা বিশ্বের পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় এই মাচু পিচু দু' মাস বন্ধ থাকায় পেরুর প্রতিদিন ১ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে৷ পেরুর অন্যান্য স্থানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী ক্ষতিগ্রস্থ ঐ রেল লাইনটি এতোই দ্রুত মেরামত করা হয়েছে, যে এই রকম ঘটনা আগে কখনো দেখা যায়নি৷ পর্যটনের দিক থেকে পেরুর সব আকর্ষণের মধ্যমণি মাচু পিচু৷ ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় বহু বিদেশি ট্যুরিস্ট অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন৷ মাচু পিচু'তে ওঠার প্রবেশপথে রয়েছে ছোট্ট গ্রাম আগুয়াস কালিয়েন্টেস৷ সেখানে আটকে পড়া হাজার হাজার পর্যটককে সরিয়ে নেয়া হয় নিরাপদ জায়গায়৷
ল্যাটিন অ্যামেরিকার ভ্রমণ সংস্থার পরিচালক বার্নার্ড শ্লেইন বলেছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ রেল লাইন আমাদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে৷ আর তা বোঝা যায় আমাদের টিকিট বিক্রির হার শতকরা ৫০ ভাগ হ্রাস পাওয়া দেখেই৷
পেরুর পর্যটন রাজস্বের শতকরা ৯০ ভাগ আসে কুসকো অঞ্চল থেকে৷ মাচু পিচু দু' মাস বন্ধ থাকায় পেরু প্রায় ৬০ হাজার পর্যটক হারিয়েছে৷ কুসকো অঞ্চলের প্রায় ১৭৫,০০০ মানুষ জীবন ধারণের জন্য পরোক্ষ এখানকার পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল৷ মাচু পিচু ট্যুরিস্টদের জন্য আবার খুলে দেয়ার ব্যাপারটি তাই শুধু পেরুর অর্থনীতির জন্যে নয়, বহির্বিশ্বে পেরুর ভাবমূর্তি রক্ষার জন্যেও জরুরি৷
প্রতিবেদক : ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারুক