1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরোক্ষ ধূমপান শিশুদের জন্যও ক্ষতিকর

৩ মার্চ ২০১০

ধূমপান শুধু বয়স্ক মানুষেরই নয় শিশুদের জীবনকেও ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিতে পারে৷ যেসব শিশুর আশেপাশে ধূমপান করা হয় তাদের ধমনীর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলে গবেষণায় দেখেছেন ফিনিশ বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/MI9g
ছবি: AP

তাঁদের গবেষণায় দেখা গেছে, পরোক্ষভাবে তামাকের ধোঁয়া শিশু অবস্থা থেকেই সংক্রমণ করতে শুরু করে এবং টিন এজারদের ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতি হয়৷ গবেষণাটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন ফিনল্যান্ডের তুর্কু বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ক্যাটারিনা কালিও৷ কালিও এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘আগের গবেষণাগুলোতে দেখা গিয়েছিল যে, পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার পূর্ণাঙ্গ বয়স্ক মানুষদের রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ কিন্তু এই গবেষণার আগে আমরা জানতাম না যে, পাশে কেউ ধূমপান করলে তার কারণে শিশু এবং বয়ঃসন্ধিক্ষণে থাকা ছেলে-মেয়েদেরও ক্ষতি হয়৷''

কালিও'র গবেষক দলটি হৃদরোগের গবেষণার অন্তর্ভুক্ত ৮ থেকে ১৩ বছরের ৪৯৪ টি শিশুর উপর এই পরীক্ষা চালান৷ পাশে কেউ ধূমপান করলে নিকোটিন থেকে উপজাত হিসেবে যে কোটিনিন তৈরি হয়, এই শিশুদের দেহে তার পরিমাণ নির্ণয় করা হয়েছিল৷ এই শিশুদের রক্তে কোটিনিনের মাত্রার উপর ভিত্তি করে উচ্চ, মধ্যম এবং নিম্ন পর্যায়ের তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়৷ এসব শিশুর অ্যাওর্টা এবং ঘাড়ের ক্যারোটিড ধমনীর পুরুত্ব মাপতে অতিমাত্রার তরঙ্গ বিশিষ্ট শব্দ ব্যবহার করা হয়৷

Anti-Raucher-Kampagne
ধূমপান বিরোধী অভিযানছবি: AP

কোটিনিনের কারণে অ্যাথেরোস্লেরোসিস প্রক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে ধমনীর দেওয়াল আল্ট্রাসাউন্ডে বেশ পুরু হয়ে ধরা পড়ে৷ যেসব শিশুর রক্তে সবচেয়ে বেশি কোটিনিন ছিল তাদের ক্যারোটিড ধমনীর প্রাচীর স্বল্পতম কোটিনিনবাহী শিশুদের ধমনীপ্রাচীরের চেয়ে সাত শতাংশ বেশি পুরু বলে ধরা পড়েছে৷ তাদের অ্যারোটা ছিল আট শতাংশ বেশি পুরু৷ কালিও'র গবেষক দল তাঁদের গবেষণার এসব ফলাফল প্রকাশ করেছেন ‘সার্কুলেশনঃ কার্ডিওভাস্কুলার কোয়ালিটি অ্যান্ড আউটকামস' শীর্ষক জার্নালে৷

কালিও বলছেন, ‘‘এসব ফলাফল থেকে বোঝা যায় যে, শিশুদেরকে কখনই কোন ধরণের ধূমপানের কাছাকাছি যেতে দেওয়া উচিত নয়৷ এমনকি খুব সামান্য পরিমাণ তামাকের ধোঁয়াও রক্তনালীর জন্য ক্ষতিকর৷'' গত অক্টোবর মাসে মার্কিন প্রতিষ্ঠান ইন্সটিটিউট অব মেডিসিন-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘‘বাড়ির মধ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ করা হলে অধূমপায়ীদের উপর পরোক্ষ ধূমপানের মাত্রা হ্রাস পায়৷ ফলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে আসে৷''

অপর মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন' এবং ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন' এর তথ্য মতে, ‘‘ধূমপান না করেও ধূমপায়ীদের সংস্পর্শে থাকার কারণে প্রতি বছর ৪৬ হাজার মার্কিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারায়৷'' এছাড়া ‘ওয়ার্ল্ড লাঙ্গ ফাউন্ডেশন' এবং ‘আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি' আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, ‘‘আগামী বছর তামাকের কারণে ক্যান্সার, হৃদরোগ, এম্ফিজেমা এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ৬০ লাখ মানুষ মারা যাবে৷ এর ফলে চিকিৎসা খরচ বাবদ ব্যয় হবে বছরপ্রতি ৫০০ বিলিয়ন ডলার৷''

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়