পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াজাতকরণ
গত কয়েক বছরে ঢাকায় প্লাস্টিক বোতলজাত পানীয় ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায়, তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ তবে বর্তমানে বেশ কিছু প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াজাতকরণ কারাখানা গড়ে ওঠায়, এ সমস্যা অনেকটাই দূর হওয়ার পথে৷
পরিবেশের হুমকি প্লাস্টিক বোতল
ঢাকার একটি দোকানে প্লাস্টিক বোতলগুলোয় বিভিন্ন রকম পানীয়৷ গত কয়েক বছরে প্লাস্টিক বোতলজাত পানীয় বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়ায়, তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ব্যবহৃত বোতল যেখানে সেখানে ফেলায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে৷ তবে এবার বেশ কয়েকটা প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াজাতকরণ কারাখানা গড়ে ওঠায় এ সমস্যা দূর হতে যাচ্ছে বলে আশা করছেন অনেকেই৷
কামরাঙ্গীর চরের কারখানা
ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহ করে এনে বিক্রির জন্য পরিমাপ করা হচ্ছে কামরাঙ্গীর চরের একটি কারখানায়৷ এখানে ধরণ অনুযায়ী প্রতি কেজি বোতলের জন্য দেয়া হয়ে থাকে ছয় টাকা থেকে পনেরো টাকা৷
শ্রমিকদের বেশিরভাগই নারী
পরিমাপের পর বাছাই করার জন্য বোতল নামাচ্ছেন এক মহিলা কর্মীরা৷ ঢাকার বিভিন্ন বোতল প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের অধিকাংশই নারী৷ কামরাঙ্গীরচরের এ সব কারখানায় মহিলা শ্রমিকেরা পুরুষের চেয়ে কম বেতন পান৷ এক সপ্তাহ কাজ করে একজন পুরুষ শ্রমিকের বেতন কমপক্ষে ২০০০ টাকা৷ অথচ সমান কিংবা তারও বেশি কাজ করে একজন নারী শ্রমিক পান মাত্র ১৪০০ টাকা৷
কারখানার জন্য স্বতন্ত্র জায়গা
বিভিন্ন রঙের বোতলগুলো বাছাই করে আলাদা করা হয়৷ এ সব প্লাস্টিকের বোতল থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশে আসে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা৷ রপ্তানিতে উৎসাহ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকও এ সব রপ্তানীকারকদের দশ ভাগ ‘ইনসেনটিভ’ দিয়ে থাকে৷ এছাড়া এ ধরণের কারখানার জন্য স্বতন্ত্র একটি জায়গার কথাও ভাবছে বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন এফবিসিসিআই৷
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ
প্লাস্টিক বোতল প্রক্রিয়াকরণ কারখানার শ্রমিকরা কাজ করেন মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে৷ ছবিটা দেখেই যেটা একেবারে স্পষ্ট হয়ে উঠছে আপনার কাছে – তাই না?
ধোয়া ও শুকানো
বোতলগুলো চূর্ণ করে ভাঙার পরে সেগুলো ফেলা হয় ছোট এই চৌবাচ্চায়৷ এরপর সেখান থেকে ধুয়ে সেগুলো শুকানোর জন্য দেয়া হয়৷
রপ্তানির জন্য প্রস্তুত
পানিতে ধোয়া প্লাস্টিকের টুকরা শুকানো হচ্ছে বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসে৷ বলা বাহুল্য, এগুলোকে সম্পূর্ণ পানিমুক্ত করে তবেই রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা হয়৷
চূড়ান্ত বাছাই
সবশেষে চূড়ান্ত বাছাই করা হয় টুকরাগুলো৷ এ সব প্লাস্টিকের টুকরাগুলো মূলত চীনে রপ্তানি করা হয়৷ তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশেও কয়েকটি কারখানা গড়ে উঠেছে, যেখানে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় এ সব বর্জ্য প্লাস্টিক৷ এই প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয় মূলত বিভিন্নরকম ফাইবার৷
ঝুঁকিপূর্ণ কাজ
বোতলগুলোকে এ পর্যায়ে মেশিনে দিয়ে ভাঙা হয়৷ এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি মহিলা ও পুরুষেরা সমানভাবেই করে থাকেন৷
বর্জ্য অপসারণের পাশাপাশি বর্জ্য তৈরি
এ সব কারখানা ঢাকা থেকে বর্জ্য অপসারণে ভূমিকা রাখলেও, নিজেরাই আবার ভূমিকা রাখে বর্জ্য তৈরিতে৷ প্লাস্টিক বোতলের যেসব অংশের বাণিজ্যিক মূল্য নেই, সেসব সরাসরি ফেলা হয় পাশের বুড়িগঙ্গার শাখা নদীতে৷ ফলে এ নদীটির জলপ্রবাহ প্রায় বন্ধের উপক্রম৷