জার্মানিতে ফিরলো নেপালি তনয়া
২৬ জুলাই ২০১৭মে মাসের শেষের ঘটনা৷ অভিবাসন কর্মকর্তারা বিভসি রানাকে যখন ক্লাসরুম থেকে টেনে বার করে তার ও তার বাবা-মায়ের বহিষ্কারের আয়োজন করেন, তখন প্রধানত বিভসি-র ক্লাসের সহপাঠী ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে৷ তারা মিছিল বার করে, ধর্না ও ধর্মঘটের আয়োজন করে৷ বিভসি-র সহপাঠী ও তাদের অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাড়া শিল্পনগরী ডুইসবুর্গের বহু নাগরিকও শহরের মেয়র ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিভসি-র মামলায় কিছু একটা করার আবেদন জানান৷
পথপ্রতিবাদ থেকে শুরু করে প্রশাসনিক সব বাধা দূর হতে দু'মাস সময় লেগেছে, কিন্তু অবশেষে বিভসি রানা-কে একটি ‘এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট ভিসা' দেওয়া হয়েছে, যার কল্যাণে তার বাবা-মাও জার্মানিতে ফিরতে পারবেন৷ এছাড়া বিভসি পরে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য উত্তরোত্তর ভিসার আবেদন করতে পারবে৷
‘‘এটি একটি একক ঘটনা, এ থেকে কোনো সাধারণ সিদ্ধান্ত করা উচিত নয়'', বলেছেন নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যে বিদেশি-বহিরাগতদের জার্মান সমাজে অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত ‘ইনটেগ্রেশান' মন্ত্রী ইওয়াখিম স্টাম্প৷ ‘‘এই সিদ্ধান্তের পুরোভাগে ছিল শিশুটির অধিকার৷ বিভসি-র জন্ম জার্মানিতে এবং সে এখানে বড় হয়েছে – বস্তুত সে একটি জার্মান শিশু'', বলে স্টাম্প মন্তব্য করেন৷
বৈধ কিন্তু অন্যায়
বিভসির বাবা-মা জার্মানিতে আসেন ১৯৯৮ সালে৷ বারংবার আপিল করা সত্ত্বেও তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন অগ্রাহ্য হয়৷ কাজেই রানা পরিবারের বহিষ্কার পুরোপুরি বৈধ ছিল৷
বহিষ্কারের বৈধতা সত্ত্বেও বিভসির স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও স্কুল কর্তৃপক্ষ, ডুইসবুর্গের মেয়র স্যোরেন লিঙ্ক, নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের সামাজিক অন্তর্ভুক্তি মন্ত্রী ইওয়াখিম স্টাম্প ও রাজ্যের পিটিশন কমিটি, সকলেই জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এই অন্যায়ের প্রতিকার করার আবেদন জানান৷
ডুইসবুর্গের মেয়র লিঙ্ক বলেছেন যে, বিভসির স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের আয়োজন করেছে ও তাদের সহপাঠীর প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্দোলন চালিয়েছে, তাতে তিনি বিশেষভাবে মুগ্ধ হয়েছেন৷ তাঁর মতে ফেডারাল সরকারকে এমন আইন প্রণয়ন করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে স্থানীয় প্রশাসন রানাদের মতো পরিবারদের বহিষ্কার করতে বাধ্য না হয়৷
রাজ্যের নতুন সিডিইউ-এফডিপি সরকারের মুক্ত গণতন্ত্রী ‘ইনটেগ্রেশান' মন্ত্রী স্টাম্প বলেছেন যে, এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়: যারা জার্মান সমাজের সঙ্গে ভালোভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছে, তাদের গ্রহণ করা প্রয়োজন৷
স্টাম্প বলেন, ‘‘যারা ভালোভাবে সমাজের সঙ্গে মিশে গেছে, তাদের এখানে থাকার একটা নির্ভরযোগ্য সম্ভাবনা দেওয়াটা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত৷ কাজেই যুগপৎ যারা জার্মান সমাজে অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকার করছে বা অপরাধীদের নিয়মিতভাবে বহিষ্কার করা উচিত৷''
এসি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ, ইপিডি, কেআএনএন)