নবী নেওয়াজ আরো লিখেছেন, ‘‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে বর্তমান রাজনীতির অঙ্গনে তৃতীয় বৃহৎ শক্তি, উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল তাই বলে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের ফলাফলও তাই বলে৷ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনীতির অঙ্গনে জামায়াতের সমর্থক ও তার প্রভাব অনস্বীকার্য্য! ...''
- বন্ধু, এ বিষয়ে ডিডাব্লিউ-র সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনের কিছু অংশ তুলে দিলাম:
সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘‘ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই৷ তবে যুদ্ধাপরাধের দায়ে চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে৷'' অন্যদিকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির জানান, ‘‘যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নিষিদ্ধ হবে কিনা, তা মন্ত্রী বলতে পারেন না৷
-
প্রতিহিংসা আর ধ্বংসের নির্মম রাজনীতি আর কতকাল
হামলার শিকার সাংবাদিক
বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতন এবং হত্যার ঘটনা আগেও ঘটেছে৷ এখনো সাগর-রুনি হত্যার বিচার হয়নি৷ তবে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে সাংবাদিকের আহত হওয়ার ঘটনা চলমান আন্দোলনেই প্রথম ঘটছে৷ এ বছর হেফাজত-এ-ইসলামের সমাবেশে প্রহৃত হন সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন৷ গত দুই সপ্তাহে হরতাল এবং অবরোধের সময় ককটেল হামলায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক৷ ছবিতে নাদিয়া শারমিনের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতেচ্ছেন নারী সংগঠন কর্মীরা৷
-
প্রতিহিংসা আর ধ্বংসের নির্মম রাজনীতি আর কতকাল
যানবাহনে আগুন, রেললাইন উপড়ানো
হরতাল-অবরোধ মানেই রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ৷ কর্মসূচির এ লক্ষ্য পূরণের পথে বাধা হলে গাড়ি ভাঙচুর এবং আগুন লাগানো বাংলাদেশে অনেক দিন ধরেই স্বাভাবিক ঘটনা৷ তবে গত এক বছরে জ্বালাও-পোড়াওয়ের এই ধ্বংসলীলা অন্য মাত্রা পেয়েছে৷ হরতালের আগের রাতেই শুরু হয়ে যায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ৷ তাই বিরোধী দল ঘোষণা অনুযায়ী কর্মসূচি পালন শুরুর আগেই জনমনে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক৷ ছবিতে মোটর সাইকেলে পেট্রোল ঢালছেন জামায়াত কর্মীরা৷
-
প্রতিহিংসা আর ধ্বংসের নির্মম রাজনীতি আর কতকাল
শিশুরাও অসহায়, নিরাপত্তাহীন
যানবাহনে ঘুমন্ত চালক, হেল্পার বা চালকের সন্তানের আগুনে ঝলসে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে৷ ঢাকা শহর দেখতে এসে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে কাভার্ডভ্যান চালকের সন্তান মুনির৷ এমন হতভাগ্যদের তালিকায় আরো নাম যোগ হয়েছে৷ স্কুলে, রাস্তায়, এমনকি বাড়িতেও শিশুদের জীবন সংকটাপন্ন দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ৷ছবিতে সর্বশেষ অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে স্লোগানরত জামায়াত কর্মীরা৷
-
প্রতিহিংসা আর ধ্বংসের নির্মম রাজনীতি আর কতকাল
নিরাপত্তা কর্মীদেরও নিরাপত্তার অভাব
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের কারণে রায় ঘোষণার পর নেতাদের শাস্তির আদেশ প্রত্যাহার এবং মুক্তির দাবিতে জামায়াত-ই-ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবির পুলিশের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে৷ হামলায় নিহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মী৷ রাজশাহীতে দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যের মাথা ইটের আঘাতে থেতলে দেয়া হয়৷ বিরোধী দলের সর্বশেষ অবরোধ কর্মসূচিতেও কর্মরত পুলিশ ও বিজিবি সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন দায়িত্বরত অবস্থায়৷
-
প্রতিহিংসা আর ধ্বংসের নির্মম রাজনীতি আর কতকাল
সংখ্যালঘুদের বাড়ি-মন্দিরে আগুন
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে অনেক সময়৷ তবে শীর্ষ নেতাদের শাস্তি ঘোষণার পর জামায়াত ও শিবিরের কর্মীরা সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর-মন্দির-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক হামলা চালায়৷ ছবিতে নিজের শিশুসন্তান কোলে সাতক্ষিরার অমিয় দাশ৷ ঘরবাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের সময় শিশুটিকে আগুনে ছুড়ে মারতে চেয়েছিল শিবির কর্মীরা৷
-
প্রতিহিংসা আর ধ্বংসের নির্মম রাজনীতি আর কতকাল
কবে হবে অবসান!
প্রধান বিরোধীদল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিকে অগ্রাহ্য করে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের শরিক কয়েকটি দল নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করেছে৷ ফলে রাজনীতির মাঠে উত্তেজনা বেড়েছে৷ ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে তফশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন৷ তারপর থেকে বিরোধী দলের হরতাল, অবরোধ চলছে প্রায় বিরামহীনভাবে৷
লেখক: আশীষ চক্রবর্ত্তী
এটা মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিষয়৷ তাদের রায়ের ওপরই আসলে নির্ভর করছে জামায়াত যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিষিদ্ধ হবে কিনা – সেই প্রশ্ন৷''
পরের ই-মেলটি লিখেছেন দেওয়ান কামরুল হাসান রথি৷ লিখেছেন, ‘‘প্রিয় অ্যাডমিন, ধর্ষণ সম্পর্কে লেখাটি খুব ভালো লাগলো৷ তারপরও একটা জিনিস ভীতির উদ্রেক করে৷ দিল্লির বিচারে আসামীদের ফাঁসির সাজা হওয়ার পরও কিন্তু ইন্ডিয়ার অনেক জায়গাতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং এখনো অহরহ ঘটে চলছে৷ এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? ভারতের সরকার কি এ সব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে? আর কত মেয়ে এভাবে ধর্ষণের স্বীকার হবে? কিছুদিন আগে একটা রিপোর্টে পড়লাম, বিদেশিরাও নাকি এখন ধর্ষণের স্বীকার হন? ভারতের রাজস্ব আয়ের অনেকটাই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল৷ এভাবে চলতে থাকলে ভারতে আর পর্যটকরা আসবে না৷''
সবশেষে তিনি নিজের লেখা একটা কবিতা দিয়ে শেষ করছেন৷ কবিতাটা এরকম:
ধর্ষণকারী ও ধর্ষিতা
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
নেই নিরাপত্তাকর্মীর সাড়া
যশোরের অভয়নগরের চাপাতলী গ্রামের প্রবেশপথে পুলিশের সতর্ক অবস্থান৷ গত ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের দিন এই গ্রামের নিম্নবর্ণের হিন্দু অধ্যুষিত মালোপাড়ায় বসবাসরতদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে৷ আক্রান্তরা জানান, ঘটনাস্থলের মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে থানার অবস্থান হলেও অনেক ফোন করেও সে সময়ে পুলিশ কিংবা কোনো নিরাপত্তাকর্মীর সাড়া মেলেনি৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
‘নদী ঠাকুর’
দুর্বৃত্তদের হামালায় লণ্ডভণ্ড মায়া রানি বিশ্বাসের একমাত্র মাথা গোঁজার ছোট্ট নিবাস৷ সেদিন হামলা শুরু হলে পাশের বুড়ি ভৈরব নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ওপারে উঠে প্রাণে বেঁচে যান বিধবা এই নারী৷ তাঁর ভাষায় ‘নদী ঠাকুর’ সেদিন না থাকলে জানটা হয়ত থাকতো না৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
প্রাণ বাঁচাতে নদীতে
নিজের ঘরের ভাঙা আসবাব, টেলিভিশনের পাশে মালোপাড়ার গৃহবধু উজ্জ্বলা বিশ্বাস৷ হামলাকারীদের ভয়াবহ রূপ সামান্য দেখেছিলেন তিনি৷ প্রাণ বাঁচাতে তিনিও ঝাঁপ দেন বুড়ি ভৈরবে৷ হামলার সময়ে তাঁর মনে হয়েছিল যে ভগবান সেদিন পাশে ছিলেন না৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
বই-পত্র পুড়িয়ে দিয়েছে
কলেজ পড়ুয়া মঙ্গলা বিশ্বাসের বই-পত্র, এমনকি সার্টিফিকেটও পুড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
সুন্দর স্বপ্নে চির
হামলাকারীদের ভেঙে দেয়া আয়নায় কলেজ পড়ুয়া মঙ্গলা বিশ্বাসের প্রতিবিম্ব৷ বাড়ির দেয়ালে টাঙানো এই ভাঙা আয়নার মতোই মঙ্গলার সুন্দর স্বপ্নেও চির ধরিয়েছে হামলাকারীরা৷ মঙ্গলার আক্ষেপ, তাঁর বই-পত্র আর সার্টিফিকেট কী দোষ করলো?
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয়
হামলার ছয় দিন পরে এঁরা ফিরছেন বাড়িতে৷ হামলার সময় পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী
৮৬ বছর বয়সি মৃত্যুঞ্জয় সরকার সেদিনের হামলার প্রত্যক্ষদর্শী৷ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও দেশ ছাড়েননি তিনি৷ কিন্তু হামলার পর তাঁর মনে হচ্ছিল যে, সে সময়ে ছেড়ে যাওয়াটাই উচিত ছিল তাঁর৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
গাছও রেহাই পায়নি
বাড়ি-ঘরের পাশাপাশি মালোপাড়ার গাছও জ্বালিয়ে দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
পলাতক জামায়াত নেতা
মালোপাড়ায় হামলার পরে চাপাতলী গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রাম বালিয়াডাঙ্গায় স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর থানা আমীর মাওলানা আব্দুল আজিজের বাড়ি ভাঙচুর করে যৌথবাহিনী৷ ঘটনার আগে থেকেই পলাতক রয়েছেন এ জামায়াত নেতা৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
আক্রান্তদের অভিযোগ
জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আব্দুল ওহাব৷ মালোপাড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলার জন্য জামায়াত শিবির ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলকেও দায়ী করেছেন অনেকে৷ সাবেক এই সাংসদ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়েছেন৷ সেখানে নতুন প্রার্থী হিসেবে রণজিৎ রায় মনোনয়ন পাওয়ায় এই দুই জনের সমর্থকদের মাঝে বেশ উত্তেজনা ছিল পুরো নির্বাচনের সময়টায়৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
গণধর্ষণ
যশোরের আরেক ভয়াল জনপদ মনিরামপুর উপজেলার হাজরাইল গ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দা অনারতী দাস৷ ৭ জানুয়ারি রাতে তাঁর সামনেই অস্ত্রের মুখে একদল দুবৃত্ত গণধর্ষণ করে পুত্রবধু মনিমালা দাস আর ভাতিজি রূপালী দাসকে৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
ভয়াবহ দৃশ্যের প্রত্যক্ষদর্শী
কার্তিক দাসকেও সেদিন রাতে সেই ভয়াবহ দৃশ্যের প্রত্যক্ষদর্শী হতে হয়েছিল৷ দাসপাড়ায় গণধর্ষণের শিকার নিম্নবর্ণের হিন্দু মনিমালা দাসের শ্বশুর ও রূপালী দাসের চাচা তিনি৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
বাড়িঘর ছেড়েছেন
দাসপাড়ায় গণধর্ষণের শিকার হওয়া পরিবার দুটি আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়েছেন৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
শুধুই আতঙ্ক
দাসপাড়ার এক নারী৷ দাসপাড়ার নারীদের এখন নির্ঘুম রাত কাটে আতঙ্কে৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
একজন ধর্ষণকারী
চরম উত্তেজিত
ক্লান্ত
অবশেষে
খুব আনন্দিত ৷
আর ধর্ষিতা
নগ্ন
শরীরে পশুর আঁচর
ঠোঁট রক্তাত্ত
বাকরুদ্ধ
শব্দহীন
বোবা কান্না
শুকনো চোখের জল
লজ্জিত
শঙ্কিত
গ্লানি
বিচারহীন৷
- কবিতাটি সুন্দর হয়েছে৷ লেখার জন্য ধন্যবাদ৷ অন্য বন্ধুরাও লিখবেন, কেমন? সবার জন্য রইলো অনেক অনেক শুভেচ্ছা৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ