নিরানন্দ যখন হয়ে ওঠে বিষণ্ণতা
কারো সাথে দেখা হলে প্রথমেই জানতে চাওয়া হয়, কেমন আছেন? অর্থাৎ শরীর কেমন৷ মনের অবস্থার কথা কিন্তু জানতে চাওয়া হয় না৷ চলুন, জার্মানদের মনের বিষণ্ণতা নিয়ে আমাদের এই ছবিঘরটি ঘুরে দেখা যাক৷
মনের অসুখ
শরীরের অসুখ-বিসুখ নিয়ে নানা গবেষণা, আলোচনা হলেও বিষণ্ণতা নিয়ে সেভাবে এত ঘটা করে আলোচনা করা হয় না৷ জার্মানিতে বিষণ্ণতায় ভোগেন, এমন রোগীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়৷ বিষণ্ণতায় যাঁরা ভোগেন তাঁদের মানসিক রোগী হিসেবে ধরা হয়ে থাকে৷ রোগীর সংখ্যা জার্মানিতে ৪ থেকে ৫ মিলিয়ন৷
বিষণ্ণতা ৪ নম্বরে
জার্মানিতে বড় অসুখগুলোর মধ্যে বিষণ্ণতার স্থান রয়েছে চার নম্বরে৷ তবে যে হারে এই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, এতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, আগামী ২০২০ সালে ৪ থেকে বেড়ে ২ নম্বরে উঠবে৷ তবে যাঁরা বিষণ্ণতায় ভোগেন এমন রোগীদের মনের অবস্থা পরিবার বা কাছের মানুষদের পক্ষে প্রথম দিকে বোঝা খুবই কঠিন, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ আর সেজন্যই হয়ত বিষণ্ণতাকে গুরুত্বও দেওয়া হয়না বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়না৷
বিষণ্ণতার কারণ
বিষণ্ণতায় ভোগার কারণের মধ্যে রয়েছে পেশাগত, পারিবারিক, সামাজিক, শারীরিক সমস্যা ছাড়াও রয়েছে অন্যান্য কারণ৷ জার্মানিতে আবহাওয়া পরিবর্তনও একটি বড় কারণ হিসেবে ধরা হয়৷ বিশেষকরে শীতকালে বিষণ্ণতায় যারা ভোগেন তাদের অবস্থা হয় আরো বেশি খারাপ৷
আরো কারণ
বেকারত্বও বিষণ্ণতার বড় কারণগুলোর মধ্যে একটি৷ শুধু তাই নয়, জার্মানিতে দেখা যাচ্ছে কেউ চাকরি না পেয়ে আবার কেউ বা চাকরি হারিয়ে, আবার কেউবা চাকরি থাকা সত্ত্বেও চাকরির জায়গায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে৷ যার ফলে পরিবারের ভেতরেও দেখা দিচ্ছে নানা সমস্যা, হয়ে যাচ্ছে ছাড়াছাড়ি৷ বৃদ্ধ বয়সের নিঃসঙ্গতাও অনেকের বিষণ্ণতার আরো একটি কারণ৷
বিষণ্ণতার প্রাথমিক লক্ষ্যণ
ঘুমের ব্যাঘাত, অনুভূতি প্রকাশ না করা, যে কোনো কাজে অনীহা, সিদ্ধান্ত নিতে না পারা, হতাশা, নিজেকে দোষী ভাবা, সবকিছুই অর্থহীন মনে হওয়া, ভয়, অল্পতে রেগে যাওয়া, সবকিছু থেকে নিজেকে দূরে রাখা, ভালো মন্দ কোনো কিছুতেই আগ্রহ না দেখানো, পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ না রাখা ইত্যাদি৷
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত
কেউ বিষণ্ণতার রোগী কিনা তা কেবল ডাক্তাররাই সিদ্ধান্ত দিতে পারেন এবং সে অনুযায়ী চকিৎসা রতে পারেন৷ বিষণ্ণতার রোগীদের চিকিৎসার জন্য কয়েকজন ডাক্তার একসাথে বসে আলাপ আলোচনার মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া যুক্তিসংগত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন৷ এসব ক্ষেত্রে গ্রুপ থেরাপি বেশ সহায়ক৷
পরিবারের সহযোগিতা
বিষণ্ণতায় যাঁরা ভোগেন তাঁরা জানেন যে, সে রকম রোগীদের চাই অবশ্যই পরিবারের সাহায্য ও সহোযোগিতা৷ এ ধরনের চিকিৎসা হয় সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী৷