1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নাশকতার পর পরই রাজনীতি

২৯ মে ২০১০

রাত পোহালেই পুরভোট৷ কিন্তু শনিবার দিনভর রাজ্য রাজনীতি সরগরম রইল জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতার দায় কার, সেই চাপান উতোরে৷

https://p.dw.com/p/NcpJ
ছবি: AP

নির্বাচনী বিধি মেনে পুরভোটের প্রচার শেষ হয়ে গেছে শুক্রবার দুপুরেই৷ কিন্তু শনিবার বিকেলে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে কার্যত বিরোধী দলের হয়ে নির্বাচনী প্রচার চালালেন তথাকথিত পরিবর্তনকামী বুদ্ধিজীবিরা৷ এবং তার জন্য তাঁরা বেছে নিলেন জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের ঘটনাকেই৷ শুক্রবার রাতভোরের ওই নাশকতায় নিহত রেলযাত্রীর সংখ্যা বেড়ে এদিন ১২১ হয়েছে৷ তৃণমূল-পন্থী বুদ্ধিজীবিরা সাংবাদিক সম্মেলনে প্রকারান্তরে দাবি করলেন, মাওবাদীরা নয়, রাজ্যে ক্ষমতাসীন বামফ্রন্টই চক্রান্ত করে ওই প্রাণহানি ঘটিয়েছে৷ এই নাশকতার সুফল পেতে পারে একমাত্র সিপিএম, দাবি করেন তাঁরা৷ সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে চেয়েছিলেন, কীসের ভিত্তিতে ওঁরা এই অভিযোগ আনছেন৷ কিন্তু সাংবাদিকদের প্রশ্ন করতে দেওয়া হয়নি৷ এবং প্রচারের সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর এ ধরণের ছদ্ম-প্রচার যেহেতু নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের সামিল, রাজ্য নির্বাচন কমিশন থেকে প্রেস ক্লাবে পুলিশ পাঠিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ এর পর কলকাতা পুলিশের কাছে ওই বুদ্ধিজীবিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও দায়ের করে নির্বাচন কমিশন৷

কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন বিকেলে নিজের কালীঘাটের বাড়িতে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের নাশকতা নিয়ে রেল মন্ত্রকের নিজস্ব তথ্য সাংবাদিকদের দেন৷ তিনি জানান, জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের চালকের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে শুক্রবারই রেল পুলিশের কাছে একটি এফ আই আর দায়ের করা হয়েছে৷ তাতে ট্রেন বেলাইন হওয়ার কারণ হিসেবে রেলপথে বিস্ফোরণের কথা বলেছেন ওই চালক৷

এদিকে রাজ্য পুলিশের সিআইডি তাদের প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছে, মাওবাদীরাই রেলপথে নাশকতা ঘটিয়েছিল৷ ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঠিক আগেই ওই জায়গায় একটি সাদা গাড়িকে ঘুরতে দেখা গেছে৷ আর রেল দপ্তরেরই দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রেল লাইন ভাঙার জন্য প্রায় ৪৫ মিনিট সময় পেয়েছিল দুষ্কৃতীরা৷ তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, পুরভোটের আগেই এই নাশকতা নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক চক্রান্ত৷ অপরাধীদের খুঁজে বার করতে রেল মন্ত্রক সিবিআই-কে তদন্তের অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছে, জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী৷

তবে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতার ঘটনা রাজ্যের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছে, যার প্রভাব রবিবারের পুরভোটে পড়তে বাধ্য৷ সেই কারণেই সম্ভবত ওই পরিবর্তনকামী বুদ্ধিজীবিরা তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক ডেকে রেলমন্ত্রীর হাত শক্ত করতে চাইলেন৷ কিন্তু সেটা করতে গিয়ে, এবং শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে গিয়ে তাঁরা যেভাবে প্রকারান্তরে মাওবাদীদের আড়াল করলেন, তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি৷ প্রেস ক্লাবে এক ক্ষুব্ধ সাংবাদিক এদিন ওই বুদ্ধিজীবিদের বলেন, এত বড় একটা নাশকতা এবং এত মানুষের প্রাণহানির পর এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে ওনারা এটা নিয়ে রাজনীতি করছেন৷

প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী