নারীদের জন্য ‘প্রিজন ভ্যান’
১১ মার্চ ২০১৪
বাংলাদেশে প্রিজন ভ্যানে পুরুষদের সঙ্গেই নারী বন্দিদের বহন করা হয়৷ আর তাতে বন্দি নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হন৷ এমনকি একই ভ্যানে নারীদের আলাদা কোনো বসার জায়গা নেই৷ এ খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর, নারী বন্দিদের পৃথক প্রিজন ভ্যানের জন্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল৷
সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা উল হক ও বিচারপতি এ বি এম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটের প্রাথমিক শুনানির পর নারী বন্দিদের জন্য আলাদা প্রিজন ভ্যানের নির্দেশ দেন৷ এ ব্যাপারে কেন স্থায়ী নির্দেশ দেয়া হবে না – তা জানতে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও কারা মহাপরিদর্শককে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়৷ রিটে বলা হয়, একই প্রিজন ভ্যানে আদালতে যাতায়াতের সময় পুরুষ বন্দিরা নারী বন্দিদের কটূক্তি করেন, অশোভন আগ্রহ প্রকাশ করেন৷ কখনো গায়ের ওপর হেলেও পড়েন৷ এক্ষেত্রে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হয় না৷ কারণ, পুলিশ সদস্যরা দেখেও যেন দেখেন না৷
মানবাধিকার নেত্রী এবং জেল ভিজিটর অ্যাডভোকেট এলিনা খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, তারা অনেকদিন ধরেই প্রিজন ভ্যানে নারী বন্দিদের যৌন হয়রানির বিষয়ে কাজ করছেন৷ এ সব যৌন হয়রানির সুনির্দিষ্ট ঘটনা উল্লেখ করে তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে অভিযোগও করেছেন৷ কিন্তু কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি৷ অথচ তারা দু'বছর আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে নারী বন্দিদের জন্য আলাদা প্রিজন ভ্যানের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন৷
এলিনা খান জানান, প্রিজন ভ্যানের পেছনের দিকে নারী বন্দিদের রাখা হয়, যে জায়গা আলাদা করা নেই৷ আবার সেখানেই পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নেন৷ অধিকাংশ সময়ই এক নারকীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়৷ এমনকি তাঁদের দাঁড়াবার মতোও জায়গা থাকে না৷ এর ফলে তাঁদের ওপর যৌন হয়রানি যেন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে৷ এলিনা খানের কথায়, এই প্রিজন ভ্যানের দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষের নয়, পুলিশের৷ নারী বন্দিদের জন্য আলাদা প্রিজন ভ্যানের ব্যবস্থা করা কঠিন কোনো কাজ নয় বলে তিনি জানান৷