নানা রকমের কার্নেভাল, নানা রকমের উৎসব
সোমবার ছিল ‘রোজেনমোনটাগ’৷ কার্নেভালের এই বিশেষ দিনে জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্য বা পশ্চিম রাইনল্যান্ডের মানুষ আনন্দ করেছে প্রাণ খুলে৷ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে হয় এমন আনন্দোৎসব৷ চলুন দেখি তারই কিছু নমুনা৷
ক্যোল আলাফ!
সেজেগুজে রাস্তায় নামার সুযোগ এলে জার্মানরা সে সুযোগ ছাড়ে না৷ রাইনল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলের সব মানুষ তাই অপেক্ষায় থাকে কার্নেভালের জন্য৷ জার্মানিতে চারটি ঋতু, কিন্তু কার্নেভাল আনন্দ নিয়ে আসে বলে একে সবাই ‘পঞ্চম ঋতুর’ মর্যাদা দেয় ভালোবেসে৷ কার্নেভালের দিনে সবাই সবাইকে সম্ভাষণ জানায় ‘আলাফ’ কিংবা ‘হেলাউ’ বলে৷ কার্নেভালে সবচেয়ে আনন্দের দিন ‘রোজেনমোনটাগ’৷
ব্রাজিলের সাম্বা পার্টি
ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় উৎসবও কার্নেভাল৷ রিও ডি জানেরোর প্রায় ২০০টি সাম্বা নাচের স্কুলের শিক্ষার্থীরা রং-বেরংয়ের পোশাক পরে নেমে আসে রাস্তায়৷ শনি থেকে মঙ্গল বার – এই চারদিন ধরে চলে উৎসব৷ উদ্দাম সাম্বা নাচের এই উৎসব দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ব্রাজিলে প্রতি বছর পাড়ি জমায় কয়েক লক্ষ পর্যটক৷
ভেনিসের কার্নেভাল
ইটালির ভেনিস নগরিও কার্নেভালের জন্য বিখ্যাত৷ ভেনিসের কার্নেভালের নাম, ‘কার্নেভালে ডি ভেনেসিয়া’৷ বিশ্বের অন্যান্য কার্নেভালের তুলনায় অন্য ধরনের মুখোশ আর পোশাক দেখা যায় এই কার্নেভালে৷ দ্বাদশ শতক থেকে চলছে এই কার্নেভাল৷
‘মোটা মঙ্গলবার’
পাশ্চাত্যের অনেক দেশের খ্রিষ্টানরা ইস্টারের সাত সপ্তাহ আগের বুধবারটিকে বলে ‘অ্যাশ ওয়েডনেসডে’৷ সেদিন ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টানরা উপোস করেন৷ অ্যাশ ওয়েডনেসডে-র পরের দিনটাই হলো ‘ফ্যাট টিউসডে’৷ যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিন্সে সেদিন কার্নেভাল৷ শহর জুড়ে নেচে বেড়ায় জনসমুদ্র৷ অসংখ্য মানুষের বহুবর্নীল পোশাকে নিউ অর্লিন্সও যেন নতুন রূপ পায়৷
শহরে ডাইনি আর ভূত!
কার্নেভালে যুক্তরাষ্ট্রের আর কোনো শহরের মানুষ পোশাকে খুব একটা বৈচিত্র্য খোঁজে না৷ তবে হ্যালোইন হলে অন্য কথা৷ তখন ডাইনি, ভূত-পেন্তি সেজে রাস্তায় নামে বড়রা৷ ছোটরা ঘরে ঘরে গিয়ে চকলেট, টফি চায়৷ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় এবং জমজমাট হ্যালোইন প্যারেডটি হয় নিউ ইয়র্ক সিটিতে৷
মৃতদের স্মরণে...
মেক্সিকোয় ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত চলে অদ্ভুত এক উৎসব৷ উৎসবের নাম ‘দিয়াস দে লোস মুয়েরতোস’ বা ‘মৃতদের দিন’৷ এই দিনে মেক্সিকোর মানুষ তাঁদের প্রয়াত প্রিয়জনদের স্মরণ করে৷ কবরস্থানগুলো সাজিয়ে-গুছিয়ে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়৷ মেয়েরা ‘কঙ্কাল নারী’ কাতরিনা সাজে৷ অন্যরা দৈত্য-দানব কিংবা কঙ্কাল সেজে ঘুরে বেড়ায়৷
চীনে নববর্ষ
চীনে চান্দ্রমাসের হিসেবে বর্ষবরণের উৎসব পালন করা হয়৷ চীনা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরের শেষ মাসের শেষ দিন থেকে পরের বছরের প্রথম মাসের ১৫তম দিন পর্যন্ত পালন করা হয় এই উৎসব৷ এ সময়টায় বসন্ত উৎসবও পালন করে চীনারা৷ অনেকে দূরদূরান্তের আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যায়৷ আতশবাজি জ্বালানো হয়৷ গ্রামে-গঞ্জে, মন্দিরে মন্দিরে ড্রাগন নৃত্যে মেতে ওঠে সর্ব স্তরের মানুষ৷